ভাবসম্প্রসারণ: এ জগতে হায়, সে বেশি চায় আছে যার ভূরি ভুরি / রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি A Jogote Hai Se Beshi Chai Ase Jar Vuri Vuri Rajar Hosto Kore Somosto Kangaler Dhon Churi

ভাবসম্প্রসারণ: এ জগতে হায়, সে বেশি চায় আছে যার ভূরি ভুরি/রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি

আজকে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে যে ভাব সম্প্রসারণ কী নিয়ে আলোচনা করব সেটি অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণির উপযোগী ভাব-সমপ্রসারণ । ভাব সম্প্রসারণ: এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি।

মূলভাব: পৃথিবীতে সম্পদশালীর সম্পদের প্রতি তৃষ্ণা দুর্নিবার ও অসীম। মানুষের চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই। পৃথিবীতে তাই মানুষের চাহিদা অপরিসীম। যে যত পায় সে ততই চায়। এই চাওয়া বেশি দেখা যায় সম্পদশালীদের মধ্যে। সম্পদের প্রতি এদের তৃষ্ণা দুর্নিবার ও অসীম। তাদের নির্বিচারে সম্পদ সংগ্রহের ফলে গরীবের সম্পদে হাত দেয়, গরিবেরা হয় তখন শোষিত।

সম্প্রসারিত ভাব: আমাদের এই পৃথিবীতে বিচিত্র শ্রেণীর মানুষের বাস। কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র, কেউ রাজা আবার কেউবা কাঙ্গাল। সকলের অবস্থা ঠিক সমান নয়। এই অসমান অবস্থার জন্য কারো ঘরে ঐশ্বর্যের প্রাচুর্য, আতশবাজি খেলা আবার কারো ঘরে অন্ধকারেও দীপ জলে না। এ অবস্থার পরিবর্তন কখনো হবে কিনা তা আমরা জানিনা। কিন্তু এই বৈষম্য একটি নিষ্ঠুর জাগতিক সত্য। তবে আমরা আশা করে থাকি, যারা ধনী, তাদের প্রচুর আছে, তারা দরিদ্রদের জন্য কিছু ত্যাগ করবেন গরিব লোকেরা ধনীদের করুণা পাবে কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় তা একেবারে বিপরীত।

পৃথিবীতে যারা প্রচুর সম্পদের মালিক যাদের প্রচুর আছে তাদের সম্পদ তৃষ্ণা কোনদিন পরিতৃপ্ত হয় না। তারা যত পায়, তার চাইতে আরো বেশি চাই। মানুষের চাওয়া পাওয়ার কোন শেষ নেই। কিভাবে তারা নিজেদের আরো বেশি সম্পদশালী করে তোলে। কোটিপতি একজন ব্যক্তি চাই সে আরো কিভাবে বেশি উপার্জন করতে পারে। তাদের নির্বিচারে সম্পদ সংগ্রহের ফলে গরিবের সম্পদ দিয়ে হাত পড়ে।

পৃথিবীর দুঃখী মানুষেরা তাদের সামান্য পুঁজি নিয়ে জীবন যাপন করে। ধনিকের ঐশ্বর্যের প্রতি একদিন গরিবের কুটিরকে স্পর্শ করে। নানা ছলে নানা কৌশলে কিংবা বলপ্রয়োগ করে দরিদ্রের সর্ব শেষ সম্বলটুকু ছিনিয়ে এনে ধনীরা নিজেদের সম্পদশালী করে গড়ে তোলে। এভাবে পৃথিবীর দরিদ্ররা তাদের সবকিছু হারিয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে সাজে পথের ভিক্ষুক, অন্নের কাঙ্গাল। কেউ তাদের হিসাব রাখে না কেউ তাদের খবর রাখেনা।

দরিদ্র,কাঙ্গালেরা এক-দুই বেলা ভাত খেয়ে কোনমতে বেঁচে থাকার আশা পোষণ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের সামান্য লবন ভাতও অনেক সময় জোটেনা। ঠিক অপর দিকে রাজা-বাদশা ও ধনীদের ঘরে সম্পদের পাহাড়। কিন্তু যার অনেক আছে তার তো কোন অভাব থাকতে পারে না অথচ পৃথিবীর এ নিয়ম হলো যার ধন সম্পদের আর প্রয়োজন নেই, তার জীবনেই অভাববোধ বেশি। রাজা সব সময় প্রজার ধন সম্পদের অধিকারী হয়। ধনী দরিদ্রকে শোষণ করে বড় হতে থাকে।

কিন্তু এই বৈষম্য একটি নিষ্ঠুর জাগতিক সত্য। লুব্ধ মানুষের বড় হবার নীতিই হলো দরিদ্রের সব কিছু জোর করে কেড়ে নিয়ে তাকে সর্ব কিছু হতে বঞ্চিত করা। কেই তাদের হিসেব রাখে না, কেই তাদের খবর রাখে না। তারা অপরের ধন চুরি করে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার সমৃদ্ধি চায় না। কিন্তু ধনী মানুষেরা গরীবের রক্ত শোষণ করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। গরীবেরা চিরদিন শোষিত, লাঞ্চিত। অনাহার, নিরন্ন মানুষের ন্যূনতম সম্পদটুকুর প্রতিও ভয়াল থাবা প্রসারিত করতে কুণ্ঠিত হয় না।

মন্তব্য: উপরের বিস্তারিত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, বিত্তবানদের এ অতৃপ্ত সর্বগ্রাসী প্রক্রিয়া সমাজের সর্বস্ব নিঃস্ব লোকের বেঁচে থাকার স্পৃহাকে শেষ করে দিচ্ছে। সম্পদ ধনী-গরীব উভয় শ্রেণীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ আহরণের জন্য কারো লোভ করা উচিত নয়। যার যতটুকু সম্পদ প্রযোজন ঠিক তাকে ততটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা বাঞ্ছনীয়।

যারা নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইট পেইজ ভিজিট করে থাকছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা এই ওয়েবসাইটে চেষ্টা করেছি শিক্ষার ওপর তথ্যমূলক বিষয়গুলো উপস্থাপনা করার। শুধুমাত্র শিক্ষা বিষয়ক নয়, বর্তমানে এখানে শিক্ষার পাশাপাশি অনেক শিক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর তথ্য প্রচার করা হয়ে থাকে। তাই আপনারা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*