ভাবসম্প্রসারণ: বিদ্যার সাথে সম্পর্কহীন জীবন অন্ধ এবং জীবনের সাথে সম্পর্কহীন বিদ্যা পঙ্গু Biddar Sathe Somporkoheen Jibon Ondho Ebong Jiboner Sathe Somporkoheen Bidda Pongu

ভাবসম্প্রসারণ: বিদ্যার সাথে সম্পর্কহীন জীবন অন্ধ এবং জীবনের সাথে সম্পর্কহীন বিদ্যা পঙ্গু

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আমাদের এই ওয়েবসাইটে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। বরাবরের মতো আমরা বাংলা দ্বিতীয় পত্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করে আসছি। আমরা চেষ্টা করেছি এই ওয়েবসাইটে প্রায় সব ধরনের ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করার। আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ কে নিয়ে আলোচনা করব বিশেষ করে নবম, দশম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের ভাব সম্প্রসারণ এর বিষয়বস্তুটি।

মূলভাব: মানুষের জীবন ও বিদ্যার সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। মানুষের জীবনে বিদ্যা বা জ্ঞানের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ জন্য বিদ্যার সঙ্গে জীবনের এবং জীবনের সঙ্গে বিদ্যার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। এই বিদ্যার সাহায্যে মানব জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করে গড়ে তোলা যায়।

সম্প্রসারিত ভাব: বিদ্যা এমন এক ধরনের অদৃশ্য আলো যার ছোঁয়ায় মানুষের মনের অন্ধকার দূর হয়ে যায়। তাই বিদ্যাহীন ব্যক্তি অন্ধের মতোই। অন্ধ মানুষ যেমন দৃষ্টি শক্তির অভাবে কিছুই দেখতে পারে না, অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীতে তাকে হাতড়িয়ে চলতে হয়; বিদ্যাহীন মানুষও তেমনি চোখ থেকেও জীবনের স্বরূপ উদ্ঘাটনে ব্যর্থ। বিদ্যা মানুষকে অজ্ঞানতা, কুসংস্কার ও সঙ্কীর্ণতা দূর করতে মনের দৃষ্টিকে প্রসারিত করে। যার বিদ্যা নেই সেই দৃষ্টি শক্তি থেকে বঞ্চিত। তাই চোখ থেকেও সে অন্ধেরই শামিল।

আবার বিদ্যাকে যদি জীবনের প্রয়োজনে কাজে লাগানো না যায় বা গৃহীত বিদ্যা যদি জীবনবোধকে জাগ্রত না করে তাহলে তার কোন মূল্য নেই। বিদ্বানের কলমের কালি শহীদের রক্ত রসের চেয়েও পবিত্র। রিপোর্টার নয় এবং মোহের বসে যে বিদ্যা নামক পরম ধনের অনুশীলন করা থেকে বিরত থাকে তার মত অভাগা এ জগতে আর একটিও নেই। তাই মানব জীবনকে সুন্দর, সতেজ ও সাবলীল করে গড়ে তুলতে হলে বিদ্যাকে অবশ্যই জীবনধর্মী হতে হবে।

জীবনকে গতিময় বাস্তব ও কর্মমুখী করতে হলে যেমন বিদ্যা অর্জন অত্যাবশ্যক তেমনি অর্জিত বিদ্যাও হতে হবে জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেকোনো বিদায় হোক না কেন তাও যদি সুখ – শান্তি সমৃদ্ধি ও চিত্র বিকাশে সহায়ক না হয় তবে সে বিদ্যার্জন অনর্থক।

মানবজীবনের সার্থকতার জন্য বিদ্যা বা জ্ঞানের আবশ্যকতা যে কতখানি তা বলে শেষ করা যায় না। বিদ্যা হলো আলো, যার সংস্পর্শে জীবন আলোকিত হয়। এই আলোর অভাবে জীবন ব্যর্থতার অন্ধকারে তার মূল্য হারায়। কিন্তু এত যে মূল্যবান বিদ্যা তা-ও মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে, যদি জীবনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক না থাকে। মানুষ বিদ্যা লাভ করে কেবল ডিগ্রি বা পাণ্ডিত্য অর্জনের জন্য নয়, জীবনকে ফুলে ফুলে বিকশিত করে তোলার জন্য।

মনুষ্যত্ব লাভ জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই সম্ভব। কিন্তু অর্জিত বিদ্যা যদি জীবনের কাজে না লাগে, জীবনকে তা যদি কিছু দিতে না পারে তাহলে তার মূল্য কোথায়? জীবনে তেমন বিদ্যার প্রয়োজন নেই। তাই বিদ্যার্জনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত জীবনকে অমানবিকতার অন্ধকার থেকে মুক্ত করে মানবিকতার আলোয় আলোকময় করা। তাহলেই বিদ্যা জীবনের সার্থকতা ফুলে ও ফসলে পূর্ণ করে তুলতে সক্ষম।

মন্তব্য: বিদ্যাহীন জীবন ও বাস্তব শিক্ষা দুটিই মানব সভ্যতার উন্নয়নের অন্তরায়। শিক্ষা বিস্তারের এই গোড়ায় গলদ যদি উপশম করা না যায়, তবে মানুষকে যথার্থ শিক্ষিত করা এবং সমাজের উন্নয়ন ঘটানো কোনোটিই ফলপ্রসূ হবে না।

আপনারা যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভাব-সম্প্রসারণ খুঁজতেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। এখানে আপনাদের প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি ভাব-সম্প্রসারণ সুন্দর, সহজ এবং সাবলীল ভাষায় উপস্থাপিত করা হয়েছে।

আপনারা আমাদের এই ওয়েবসাইটে আপনার প্রয়োজনে ভাব-সম্প্রসারণ লিখে সার্চ দিবেন আশা করি তাৎক্ষণিকভাবে সেটি পেয়ে যাবেন। প্রয়োজনে আপনারা প্রতিটা ভাব-সম্প্রসারণ আপনাদের নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তক এর পাশাপাশি আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে অনেকটাই সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। আজ এ পর্যন্তই আগামীতে অন্য কোন বিষয় নিয়ে আমরা হাজির হবো।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*