সামাজিক জীব হিসেবে সমাজবদ্ধভাবে বাস করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় মানুষ বিভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আর যেকোন সম্পর্ক তৈরির এবং টিকিয়ে রাখার জন্য প্রথমেই যেটা প্রয়োজন তা হলো বিশ্বাস। বিশ্বাস ছাড়া কোনভাবেই কোন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না আবার নিজেকেও প্রতিষ্ঠিত করতে হরেও প্রথমে নিজের উপর বিশ্বাস তৈরি করা দরকার।
এজন্য অনেক সময় দেখা যায় যে মানুষ বিশ্বাস নিয়ে বিভিন্ন রকম কথা খুঁজে থাকেন। কিন্তু অনেক সময় বিশ্বাস সম্পর্কে তাদের পছন্দমতো বিভিন্ন কথা তারা খুঁজে পায় না। আপনি যদি বিশ্বাস নিয়ে এ ধরণের কথা খুঁজে থাকেন, তাহলে আজকের পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে আশা করছি। কেননা আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে বিশ্বাস নিয়ে বাস্তবধর্মী কিছু কথার মাধ্যমে।
মূলত এই পৃথিবীতে মানব সভ্যতা টিকেই আছে বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে। যদি মানুষ হিসেবে একে অটরের প্রতি বিশ্বাসই না থাকতো তাহলে মানব সভ্যতা টিকে থাকতো না। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে বিভবন্ন সভ্যতার বিলিন হয়েছে মূলত অবিশ্বাস আর বিশ্বাসঘাতকতার কারণে।যেসব ক্ষেত্রে একবার অবিশ্বাস শুরু হয়েছে সেক্ষেত্রে টিকে থাকা মুশকিল। আর এজন্য অতীতকারে খনেক সভ্যতাকে বিলীন হতে দেখা গিয়েছে। তাই বিশ্বাসটা আসরে দরকার, খুব করে দরকার।
আবার যদি একটি পরিবারের কথা ধরি, তাহলে দেখা যায় পারিবারিক সম্পর্কগুলো মূলত টিকে থাকে পারস্পরিক বিশ্বাস, ভালোবাসা আর সম্মানের মাধ্যমে। কোন কারণে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একবার অবিশ্বাস শুরু হয় তাহলে সেই পরিবারটি আবার স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। এমনি অনেক পরিবারে ফাটল ধরার এবং পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হলো পিছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করে বিশ্বাসের অভাব। অবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কোন পরিবার টিকে থাকতে পারে না৷
আবার সব ভালো কাজের মূল ভিত্তি হলো বিশ্বাস। প্রথমে দরকার নিজের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা৷ নিজেকে চিনতে পারলে, নিজের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারলেই সফলতার পথ সুগম হয়।তাই সবার প্রথমে জরুরি নিজের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা৷
নিজের উপর বা অন্যের প্রতি আস্বা এবং বিশ্বাস স্থাপন করা একজন ভালো মানুষের অন্যতম গুণ। তবে ঢালাওভাবে সবাইকে বিশ্বাস করা যেমন বোকামি তেমনি ঢালাওভাবে সবাইকে অবিশ্বাস করাটাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বুদ্ধিমানেরা যাচাই-বাছাই করে বিশ্বাস করে৷ সফল ব্যক্তিরা যত কিছুই হোক না কেন নিজের লক্ষ্যের প্রতি, নিজের আস্থার প্রতি সব-সময় বিশ্বাস রাখে। কেননা নিজের প্রতিই যদি বিশ্বাস রাখা না যাই তাহলে কখনো সফল হওয়া যাই না।
আর যে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারে না, সে কখনো অন্যকেও বিশ্বাস করতে পারে না। তাই সবার কাছে নিজের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাটা জরুরি। বিশ্বাস শুধুমাত্র একটা শব্দই নয়, এর অন্তর্নিহিত অর্থ অনেক গভীর৷ এই গভীর অর্থটা যারা বুঝতে পারে আর বিশ্বাসের মর্যাদা যারা রাখতে পারে তারাই প্রকৃতপক্ষে সফল হয় এবং তারাই জীবনে সুখী মানুষ হিসেবে পরিগণিত হয়।
মনের মধ্যে সবসময় অবিশ্বাস রাখলে কখনো ভালো কিছু করা যায় না, সফল হওয়া যায় না, সামনে এগোনো যায় না৷ তাই মনের মধ্যে থেকে প্রথমেই সন্দেহপূর্ণ মনোভাব দূর করতে হবে। আবার সবাইকেই সরলভাবে বিশ্বাস করাটাও বোকামী। কেননা এর ফলে বরং ক্ষতির সম্ভাবণাটায় বেড়ে যায়৷ তাই যে কাউকে বিশ্বাস করাটা ঠিক না৷ বিশ্বাস করার আগে বুঝতে হবে, তাকে জানতে হবে। তারপর বিশ্বাস করতে হবে।
বিশ্বাসের তাৎপর্য যেহেতু অনেক গভীর। তাই নিজের উপর এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। বিশ্বাসের ফলেই যেকোন সম্পর্ক টিকে থাকে এবং নিজের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারলেই সফলতা পাওয়াটা সহজ হয়৷ তাই সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে এবং নিজের আর নিজের সব প্রিয় মানুষদের ভালো রাখতে বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা অনেক গভীর।
Leave a Reply