
দেনমোহর একটি অবশ্যই পালনীয় কর্তব্য। বিবাহের সময় স্বামীর কর্তৃক স্ত্রী দেনমোহর প্রাপ্য হয়ে থাকে। তবে সাময়িক আর্থিক সমস্যার কারণে দেখা যায় যে অনেক সময় দেনমোহর বিয়ের আসরে পরিশোধিত না হয়ে বিলম্বিত দেনমোহর হিসেবে পরিগণিত হয় এবং পরে এটা পরিশোধ করা লাগে। তবে কেউ যদি স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতে করতে পরে মনোমালিন্যের কারণে সংসার বিচ্ছেদ করতে চান অথবা তালাক দিতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই বিলম্বিত দেনমোহর হিসেবে আগে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। তবে কেউ যদি দেনমোহর পরিষদ করতে অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে অথবা মামলা করার মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।
তাই একজন নাগরিক হিসেবে এবং ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে অবশ্যই দেনমোহর স্ত্রীকে প্রদান করতে হবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে বিয়ের আসলেই দেনমোহর পরিশোধ করাটা সবচেয়ে ভালো এবং এর মাধ্যমে আপনি সকল দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারছেন এবং স্ত্রীকে আপনার নিজের করে পাচ্ছেন। অনেকে বলে থাকেন যে দেনমোহর পরিশোধ না হলে স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করাটা ঠিক না। তবে আমাদের বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায় যে দেনমোহর দুই প্রকার এবং এই দুই প্রকার দেন মোহরের ভেতরে আসু দেনমোহর রয়েছে এবং বিলম্বিত দেনমোহর রয়েছে।
তবে কেউ যদি আর্থিক সমস্যার কারণে এই দেনমোহর পরে পরিশোধ করে এবং এ ক্ষেত্রে পারিবারিকভাবে অথবা স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে বিয়ে সম্পন্ন করে তাহলে তাও হবে। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে কোন ভাবে যদি আপনি সংসার করতে অবহেলা কথা প্রকাশ করেন অথবা তার সঙ্গে যদি আপনার মনোমালিন্য হয়ে থাকে অথবা মানসিক দিক থেকে আপনি যদি তার সঙ্গে কোনোভাবে খাপ খাইয়ে নিতে না পারেন তাহলে সংসার জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি মনে করেন আপনার স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করবেন না এবং তাকে ডিভোর্স দিবেন তাহলে অবশ্যই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেনমোহর পরিষদ না করলে আইনের দিক থেকে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি পাওয়ার পাশাপাশি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি কখনোই ক্ষমা পাবেন না। কারণ স্ত্রীকে প্রাপ্য সম্মান প্রদর্শন না করে আপনি যদি বিয়ে করেন এবং বিয়ে করার পরেও যদি সেই দেনমোহর পরিশোধ না করেন তাহলে দেখা যাবে যে এটা অনেক বড় একটা অপরাধ।
সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি হঠাৎ করে মৃত্যুবরণ করেন তাহলে আপনার পরিবারের যিনি ওয়ারিশ রয়েছেন তাকে অবশ্যই এই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। কারণ আপনি যদি কারো কাছে ঋণ করে মৃত্যুবরণ করেন তাহলে সেই ঋণ অবশ্যই পরিবারের ব্যক্তিদেরকে পরিশোধ করতে হবে এবং সেই ক্ষেত্রে সেই ঋণ যদি পরিশোধ না করে তাহলে আপনি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেমন বিভিন্ন ধরনের শাস্তি পাবেন তেমনিভাবে সমাজের দৃষ্টিতে একজন খারাপ মানুষ হিসেবে প্রতিপন্ন হবেন।
আর বেঁচে থাকা অবস্থায় যদি আপনি গায়ের জোরে দেন মোহর পরিষদ না করেন তাহলে দেখা যাবে যে স্ত্রী পক্ষ যে কোন সময় তালাক দেওয়ার তিন থেকে তিন বছরের ভেতরে এই মামলা করতে পারবে এবং দেনমোহর পরিশোধের বিষয়ে আপনাকে আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় জড়াতে হতে পারে। তাই দেনমোহর পরিশোধ না করার শাস্তি ভয়াবহ এবং এটি যদি আমরা যুবক সমাজ বুঝে থাকি তাহলে এই বিষয়গুলো থেকে আমরা সবসময় ঝামেলা এড়িয়ে চলবো এবং প্রত্যেকটি কাজ আইনসম্মত ভাবে করার চেষ্টা করব।
Leave a Reply