ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৪

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ

প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের জীবন হয়ে উঠছে সহজ ও সরল। এখন মানুষ তাদের বাস্য বসেই অনেক ধরণের কাজ সম্পাদন করতে পারে যা এককালে ভাবা হতো প্রায় অসম্ভব৷ কোন কিছি কেনা কাটা করতে আর এখন বাজারে যাওয়া লাগে না। অনলাইনে অর্ডার করলেই এখন সব ধরণের পণ্য বাসায় পৌঁছে যায়।

জীবনের সব ক্ষেত্রেই যখন এখন আধুনিকতার ছোঁয়া তাহলে পাসপোর্ট পিছিয়ে থাকবে কেন? সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ সরকার শুরু করেছে ই-পাসপোর্ট বিতরন। এই ই-পাসপোর্ট আগের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এর চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষিত এবং এই পাসপোর্ট জাল করার কোন উপায় নেই। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও এখনো এই পাসপোর্ট বিতরণ শুরু হয় নি। কিন্তু বাংলাদেশ তা শুরু করেছে এবং সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা হলো, ভবিষ্যতে আর কোন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সরবরাহ করা হবে না। বাংলাদেশের সকল পাসপোর্টধারীদের হাতেই থাকবে ই-পাসপোর্ট। এখন প্রশ্ন হলো ই-পাসপোর্ট কীভাবে পাওয়া যায়? নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অনুসরণ করলেই এই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব অতি সহজেই।

প্রথমত, আবেদনকারীকে তার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট এর আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এই ফরম এখন অনলাইনেও সংগ্রহ করা যায়। আবেদন ফরম পূরণ করার পর, পাসপোর্ট এর জন্য নির্ধারিত টাকা জমা দিতে হবে যে কোন ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে। টাকা জমা হয়ে গেলে, টাকা জমা দেওয়ার রশিদ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ পূরণকৃত আবেদন ফরমটি জমা দিতে হবে।

ফরম জমা দেওয়া হলে পাসপোর্ট অফিস থেকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হবে ছবি তোলার জন্য এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদানের জন্য। সেই নির্দিষ্ট তারিখে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। এরই মাঝে পুলিশ ভ্যারিফিকেশন এর কাজও শুরু হবে। পুলিশ আবেদনকারীর প্রদত্ত ঠিকানায় যাবে, এবং সকল তথ্য উপাত্ত খতিয়ে দেখবে। তথ্য উপাত্ত ঠিক থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝেই পাসপোর্ট পাওয়া যাবে।

পাসপোর্ট ফি বা পাসপোর্ট করতে যেই খরচটা লাগে সেটা পাসপোর্ট এর ধরণ ও ডেলিভারির সময়ের উপর নির্ধারিত হয়। বাংলাদেশ সরকার সাধারণত দুই মেয়াদী পাসপোর্ট প্রদান করে থাকে একটি ৫ বছর মেয়াদী আরেকটি ১০ বছর মেয়াদী। এই দুই ধরণের পাসপোর্ট আবার পাতার সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ফি পরিবর্তন হতে পারে৷

৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট এর ফি ডেলিভারি সময়ের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। নিয়মিত ডেলিভারিতে ফি প্রদান করতে হয় ৪,০২৫ টাকা। একই পাসপোর্ট জরুরী ডেলিভারিতে নিলে খরচ পরবে ৬,৩২৫ টাকা। আবার যদি কোন আবেদনকারী অতি জরুরী সেবার মাধ্যমে এই পাসপোর্ট পেতে চায় তাহলে খরচ হবে ৮,৬২৫ টাকা।

১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট এর খরচ হতে পারে নিম্নরূপ। যেমন, নিয়মিত ডেলিভারিতে এই পাসপোর্ট নিলে খরচ পরবে ৫,৭৫০ টাকা, জরুরী ডেলিভারিতে পেতে চাইলে গুণতে হবে ৮,০৫০ টাকা এবং একই পাসপোর্ট অতি জরুরী ডেলিভারিতে নিলে খরচ পরবে ১০,৩৫০ টাকা।

৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে খরচ ৬,৩২৫ টাকা নিয়মিত ডেলিভারিতে, জরুরী ডেলিভারির ক্ষেত্রে খরচ ৮,৩২৫ টাকা, আবার যদি একই পাসপোর্ট কেউ অতি জরুরী সেবায় নিতে চায় তাহলে তাকে গুণতে হবে ১২,০৭৫ টাকা।

১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট পেতে হলে গুণতে হবে ৮,০৫০ টাকা, ১০,৩৫০ টাকা ও ১৩,৮০০ টাকা যথাক্রমে নিয়মিত, জরুরী ও অতি জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য।

কিন্তু অতি জরুরী ডেলিভারির জন্য আগে থেকেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হয়। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আগে থেকেই নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করত্র হবে এবং তারা যেভাবে আবেদন করতে বলেন সেভাবে আবেদন করতে হবে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কোনভাবেই অতি জরুরী পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব নয়।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*