প্রিয় শিক্ষার্থী ভাই ও বোনেরা আপনারা যারা অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য পেতে আগ্রহী তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইট ঘুরে দেখতে পারেন। আমরা এখানে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করে থাকি। সেটা হতে পারে শিক্ষাবিষয়ক, হতে পারে পড়াশোনার অন্য কোন বিষয়ে অথবা পড়াশোনার বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়।
আমরা তেমনই একটা বিষয় বাংলা ব্যাকরণ এর ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে অনেকদিন যাবত পর্যায়ক্রমে আলোচনা করে আসছি। আপনারা যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বাংলা ব্যাকরণের ভাব-সম্প্রসারণ অধ্যায়ের বিভিন্ন ধরনের ভাব সম্প্রসারণ খুজতেছেন তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে আপনাদের প্রয়োজনীয় ভাব-সম্প্রসারণ টি পেয়ে যাবেন আশা করি।
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার উপযোগী বিভিন্ন বিষয়ের ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ কী নিয়ে আলোচনা করব সেটি মূলত নবম দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় আসার উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। তাহলে আর দেরি না করে চলুন আজকের ভাব-সম্প্রসারণ কি নিয়ে আলোচনা করা যাক:
ভাব সম্প্রসারণ: এক মাঘে শীত যায় না।
মূলভাব: প্রকৃতি তার নিজ আবর্তে পর্যায়ক্রমে ঘুরতে থাকে। প্রকৃতির রাজ্যে তীব্র শীত যেমন আসে, জীবনের আবর্তনে জীবনে বহুবার বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। ক্ষুদ্র এক জীবনে মানুষ নানা পরীক্ষায় পড়ে নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করে। বৈচিত্র্যময় জীবনে বিপদ থেকে পরিত্রাণের অভিজ্ঞতা মানুষের ভোলা উচিত নয়।
সম্প্রসারিত ভাব: প্রকৃতিতে মাঘ মাস আসে তীব্র শীত নিয়ে। যদিও পৌষ এবং মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। কিন্তু মাঘ মাসের শীতের তীব্রতা মানুষও প্রাণীকূলকে দারুণভাবে ভোগায়। অনেক সময় একটি মানুষকে জীর্ণ-শীর্ণ ও রিক্ত করে ফেলে। অনেক সময় আবার শীতের প্রকোপ সইতে না পেরে অনেক বৃদ্ধ ও শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কিন্তু এক সময় প্রকৃতির নিয়মেই মাঘ মাস শেষে শীত বিদায় নেয়।
এমন শীতের তীব্রতার কথা ভুলে যাওয়া একেবারেই বোকামি। কারণ পালাবদলের খেলায় আবারো মাঘ মাস শীতকে সঙ্গী করে ফিরে আসবে। এই শীতের মতোই মানুষের জীবনে অনেক দুঃখ কষ্ট আসে। কিন্তু বিপদ শেষে এই দুঃখ কষ্টকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। মানুষের জীবন সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনায় পরিপূর্ণ।
অনুরূপভাবে মানুষের জীবনে বিপদ কেবল একবারের জন্য আসে না। জীবন চক্রের আবর্তে এটি বহুবার আসতে পারে। তাই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার পর বিপদের কথা বিস্মৃত হওয়া মোটেই ঠিক নয়। জীবনের পথে নানারকম বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হয়। জীবনে চলার পথে নানাজনের সাহায্য সহযোগিতার দরকার হয়। অনেকে আছেন যারা একবার দুঃসময় পার হয়ে গেলে তা আর মনে রাখেন না। এমন কি বিপদের সময় যে ব্যক্তি তাকে সহায়তা করেছিল তার কথাও ভুলে যায়। এ কথা মনে করে না যে সে আবার বিপদে পড়তে পারে আবার ঐ ব্যক্তির প্রয়োজন হতে পারে।
যারা সংকটময় সময়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান, তারাই মহৎ মানুষ। যারা বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় সেই বন্ধুদের কথা ভুলে যাওয়া স্বার্থপরতার শামিল। অনেক মানুষ আছে যারা স্বার্থপরের মত বিপদের বন্ধুকে ভুলে যায়। এতে করে আবার বিপদে পড়লে কেউ বিপদে জন্য হাত বাড়ায় না। তাই তাদের ঋণ কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ রাখা উচিত।
আমাদের সমাজে অনেকে আছেন যারা নিজেদের পরোপকারী বলে দাবী করেন অথচ কারো উপকার করেন না। তারা ধন-সম্পদের ভারে বৈচিত্র্যময় জীবনের কথা ভুলে যান। পরোপকারী মনোভাব হারিয়ে ফেলেন। ঘটে যাওয়া বিপদের কথা ভুলে গিয়ে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দেন। তাদের সচেতন হওয়া দরকার যে, বিপদ যেকোনো সময় আসতে পারে।
মন্তব্য: যারা বিপদ আর বিপদ এর বন্ধুদের ভুলে যায় তারা পরবর্তীতে বিপদকে ঠিকমতো মোকাবেলা করতে পারে না। আমাদের মনে রাখতে হবে বিপদ জীবনে একবারই আসে না। বিপদে যারা এগিয়ে আসে তারাই প্রকৃত বন্ধু। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ভাষা থাকেনা এবং তাদের ঋণ কখনোই শোধ হবার নয়।
Leave a Reply