শেখ রাসেল কে নিয়ে রচনা

শেখ রাসেল কে নিয়ে রচনা

আমাদের সবার কাছে শেখ রাসেল নামটি বেশি পরিচিত একটি নাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান নায়ক ও বাঙ্গালী দের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট পুত্র নাম শেখ রাসেল। শেখ রাসেলের জন্মতে শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবার নয় পুরো বাংলাদেশের মানুষ খুশিতে ভেসেছে। তাই আপনারা অনেকেই শেখ রাসেলের সম্পর্কে জেনে নিতে আগ্রহী। তাছাড়া অনেকেই শেখ রাসেল কে নিয়ে রচনা পড়ার জন্য আপনারা অনেকেই গুগলের মাধ্যমে সার্চ করেছেন। তাই আমরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেল টির মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দিতে চাই শেখ রাসেল কে নিয়ে রচনা। আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিতে চান আমাদের ওয়েবসাইটে থাকা আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনো যোগ সহকারে পড়ুন। তাছাড়া আপনাদের জন্য প্রতিনিয়ত এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরগুলো আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত করি আপনারা গুগলের সার্চ করে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর গুলো জেনে নিতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কোল আলো করে ১৯৬৪ সালের ১৮ ই অক্টোবর শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজস্ব বাড়ি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জন্মগ্রহণ করেন শেখ রাসেল। তার জন্মের সময় তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান তার কাছে ছিলেন না তিনি এক রাজনৈতিক জনসভায় চট্টগ্রাম ছিলেন। আর তার এই জন্মের খবর পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একাই খুশি হননি সারা বাংলার মানুষ তার জন্মগ্রহণ অনেক খুশি হয়েছিলেন। জন্মের পর রাসেল দেখতে খুব স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দেশপ্রেমী একজন মানুষ। তাই তার ছোট ছেলের রাসেলের নামের পিছনে একটি ইতিহাস রয়েছে।

শেখ রাসেল নামটি একজন বিখ্যাত নামের সঙ্গে মিল রেখে নামকরণ করা হয়। আর এই নামকরণ করেন তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্ব বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল এর নামের সাথে মিল রেখে তার নামকরণ করা হয়। শেখ রাসেলের বেড়ে ওঠা খুব সাধারণ ছিল। জন্মের পরে থেকে তার পিতাকে সে কখনো কাছে পাননি। রাজনৈতিক নানা কারণে ও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ব্যস্ত থাকতে হতো তাই শেখ রাসেল তার পিতাকে তেমন একটি কাছে পাননি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে কারাগারে থাকতেন। তবে শেখ রাসেল বেড়ে ওঠাটা হঠাৎ থমকে যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধু সহ তার সহ পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে একদল বিপদগামী সেনা সদস্যরা।

আর সেই অভিশপ্ত রাতে ছোট্ট রাসেল যার বয়স মাত্র ১০ বছর ছিল তাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই দিনের নারকীয় ঘটনা গোটা বাঙালি জাতিকে এখনো কাঁদায়। সেদিনের ঘটনা এখনো বাঙালি জাতিকে ক্ষতবিক্ষত করে। বারবার মনে করিয়ে দেয় সেদিনের ঘটনার কথা। আর সেই হত্যাকাণ্ডে ছোট্ট শেখ রাসেলকেও তারা বাদ দেয়নি। সে দিনের অমানবিক হত্যাকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশের মানুষ একটি জাতির পিতা কে হারিয়েছে। শেখ রাসেলের মত একজন উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কে হারিয়েছে বাঙালি জাতি। শেখ রাসেলের মত একজন বঙ্গবন্ধু কে হারিয়েছে গোটা বাংলার মানুষ। শেখ রাসেল ছোট থেকে তার পিতার আদেশে বড় হচ্ছিল যদিও সে তার পিতাকে কাছে পায়নি তবুও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত যার গায়ে তার আদর্শ কখনো ভুল হতে পারে না।

শেখ রাসেল দিবস রচনা

শেখ রাসেল সেইসব ব্যক্তিদের একজন যারা পৃথিবীতে অল্প হায়াত নিয়ে এসেছিল ৷ মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট নির্মম বুলেটের আঘাতে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছিল ৷

বাংলাদেশকে স্বাধীন করার ক্ষেত্রে যার নাম প্রথম চলে আসে তিনি হলেন বাঙালি জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ বিপদগামী কিছু সৈন্যের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি সপরিবারে নিহত হন ৷ ফুটফুটে শিশু শেখ রাসেলও সেদিন অকল্পনীয়ভাবে ফুটন্ত একটি ফুল অকালেই ঝরে গেল ৷

শেখ রাসেলের জন্ম

সময়টা ছিল হেমন্তকাল ৷ বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরে নতুন ফসল তোলার আনন্দ হিল্লোল বয়ে যাচ্ছিল ৷ ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছিল চারদিক ৷ হেমন্ত উৎসব এবং পিঠাপুলির ধুম পড়েছিল ৷ ঠিক এমনই এক মুহূর্তে আনন্দঘন পরিবেশে জন্মগ্রহণ করেছিল শেখ রাসেল ৷ শেখ রাসেলে জন্মেছিলে ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে মায়ের কোল আলো করে জন্ম নেন শেখ রাসেল। রাসেলের জন্ম হয়েছিল তার বড় বোন শেখ হাসিনার ঘরে। রাসেলের জন্মের কিছুক্ষন পর, বড়বোন শেখ হাসিনা এসে, একটা ওড়না দিয়ে তার ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন। জন্মের সময় রাসেল ছিলেন স্বাস্থ্যবান। তার জন্ম যেন শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবারেরই নয়, সমগ্র জাতির আনন্দ ছিল।

শেখ রাসেলের নামকরণ

সন্তান জন্ম লাভ করলে মা-বাবা আত্মীয়-স্বজন তার একটি চমৎকার নাম রাখার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন ৷ অনেক পিতা-মাতা সন্তান গর্ভে আসার পরেই সম্ভাব্য নাম ঠিক করে রাখেন ৷ এই নামের পেছনেও থাকে ইতিহাস ৷ স্বপ্ন ৷

ঠিক তেমনি শেখ রাসেলের নামকরণের পেছনে রয়েছে এক চমৎকার ইতিহাস ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন শান্তিকামী মানুষ ছিলেন ৷ তিনি কখনোই হানাহানি মারামারি পক্ষে ছিলেন না ৷ যুদ্ধবিগ্রহ তার অপছন্দের তালিকায় ছিল ৷ তবে স্বাধীনচেতা ছিলেন ৷ দেশ মাটি-মৃত্তিকাকে দেশের শত্রু জাতির শত্রুদের হাত থেকে উদ্ধারের জন্য আপসহীন ছিলেন ৷

বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্বশান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে এবং যুদ্ধের ঘোর বিরোধী। এজন্য তিনি বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক, বার্ট্রান্ড রাসেলের বিশেষ ভক্ত ছিলেন। একদিকে বার্ট্রান্ড রাসেল ছিলেন যেমন নোবেলবিজয়ী দার্শনিক এবং সমাজবিজ্ঞানী, অন্যদিকে তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পুরো পৃথিবী যখন সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আছে ৷ তখন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। এমনই মহান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে অনুপ্রাণিত ছিলো বঙ্গবন্ধুর পরিবার। এই অনুপ্রেরণা থেকেই বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রাখেন শেখ রাসেল।

কিছু মানুষ জন্মই গ্রহণ করে তুমুল ঝঞ্ঝাট ঝড়কে মোকাবেলা করার জন্য ৷ শেখ রাসেলের ছোটবেলাটা অন্য দশটা ছেলের মত আনন্দঘন ছিল না ৷ রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশে সে জন্মলাভ করে ৷ উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শেখ রাসেল দীর্ঘদিন বাবার সান্নিধ্য থেকে দূরে ছিলো ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হয়ে প্রথমে ঢাকায় পরবর্তীতে পাকিস্তানে কারাগারে থাকেন ৷

শোনা যায় বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলেন রাসেল। মাত্র দু বছর বয়সের রাসেল তার আপাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন – “তোমার বাবা কে কি আমি বাবা বলে ডাকতে পারি?”। অর্থাৎ সে কি তার আপার বাবা, অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে কি বাবা বলে ডাকতে পারে?

তার মানে তার বাবা তার কাছে একেবারেই অপরিচিত মানুষের মতো ছিলেন। যখন সে ভালোভাবে চিনতে পারে। তখন সে বাবার কাছ থেকে আসতে চাইতো না। তখন তাকে বোঝানো হয়েছিল জেলই বাবার বাড়ি। সেখানে বাবা থাকেন।

ঘটনাটি কতটা হৃদয়বিদারক এবং মর্মন্তুদ তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ রাজনীতি দেশ ও মানুষের জন্য ৷ দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে এমন হাজারো রাজনৈতিক নেতা তাদের পরিবারকে সঠিক এবং সুষ্ঠ সময়ে দিতে পারেন না ৷ প্রতিটি জালিম শাসককে একথা মনে রাখা দরকার, প্রতিটি অন্যায়ের একদিন সুবিচার হবে ৷

যারা হাজারো সন্তানকে বাবার আদোর, স্নেহ ভালোবাসা থেকে দূরে রেখেছে ৷ তাদের একদিন কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করতে হবে ৷ আজকের এই দিনেও যারা জুলুমবাজি করছে পৃথিবীর দিকে দিকে ৷ তাদেরও এক সময় আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে ইনশাআল্লাহ ৷

শেখ রাসেলের পড়াশোনা শুরু হয়েছিল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজে। ১১ বছর বয়সে যখন তার নির্মম মৃত্যু হয়, তখন সে সেই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলো

শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকান্ড

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এর সেই অভিশপ্ত রাত সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। সেই রাতে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা, দেশি বিদেশি বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রে, সেই রাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন ট্যাংক দিয়ে ঘিরে ফেলে। একে একে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাইকে হত্যা কারে। সেইদিনই শেষ রাতে বঙ্গবন্ধু, এবং ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করে হত্যাকারীরা।

এতোটুকুন বাচ্চার কি অপরাধ ছিল? তাকে রাজনীতির নির্মম বলি হতে হল ৷ তার কি এটাই অপরাধ তার বাবা বাংলাদেশের অপমার জনতার মুক্তি চেয়েছিল? চেয়েছিল তাদেরকে সুখে-শান্তিতে রাখতে?

শেষ কথা

শেখ রাসেল দিবসে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে আর যেন কোন মায়ের কোল এভাবে খালি না হয় ৷ আর যেন কোনো শেখ রাসেল এভাবে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার না হন ৷ আর যেন কোন রাসেল এভাবে পিতা মাতাকে না হারান ৷ গুম খুন ও জখমের শিকার না হন ৷

প্রতিবছর শেখ রাসেলের জন্মদিনে নানা আয়োজনের বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা মূলক কর্মসূচি হাতে নিয়ে দিনটিকে পালন করা হয়। প্রতি বছরের ১৮ অক্টোবর তার জন্মদিনে বিভিন্ন ধরনের ছড়া, কবিতা, ও রচনা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দিনটিকে নানাভাবে উদযাপন করা হয়। শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে একটি বাস্তবিক উদাহরণ যার মাধ্যমে বাঙালি জাতি খুঁজে পাই তার নিজের ছোটবেলা। শেখ রাসেলকে যেন আমরা কখনোই ভুলতে না পারি তাই বাংলাদেশের গঠন করা হয়েছে শেখ রাসেল ক্রিয়া চক্র ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ।

আপনারা যারা এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জেনে নিতে চান আপনাদের জন্য আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে এ বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়ে দিলাম। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে এ বিষয়টি সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*