
খুব সহজভাবে আমরা যদি যাকাত কি অথবা যাকাত কাকে বলে বলতে চাই তাহলে বলব যে একজন মুসলিমের যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে সেই সম্পদের উপরে একটা নির্দিষ্ট অংশ গরিবের হক থাকবে। সেই নির্দিষ্ট অংশ তার সম্পদ অনুযায়ী নির্ধারণ করে সেই সম্পদ গরিবের মাঝে ভাগ করে দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে আমরা যখন সেই সম্পদ ভাগ করে দেবো তখন তা যাকাত বলে পরিগণিত হবে।
তবে কেউ যদি পাঠ্য বইয়ের ভাষায় যাকাত সম্পর্কে লিখতে চান তাদের জন্য এখানে সেই প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হবে। আর এই ক্ষেত্রে মহান আল্লাহপাক সামর্থ্য অনুযায়ী বারবার তাগিদ দিয়ে বলেছেন যে “অর্থাৎ তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং যাকাত আদায় করো।”তাই কেউ যদি যাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে সামর্থ্যবান হয়ে থাকে অথবা তার যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সম্পত্তি থাকে তাহলে তার জন্য যাকাত ফরজ হয়ে গিয়েছে এবং প্রত্যেক বছর তাকে নির্দিষ্ট সময় যাকাত প্রদান করতে হবে।
যারা যাকাত শব্দের শাব্দিক অর্থ জানতে চান তাদেরকে বলব যে যাকাত অর্থ হল সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া অথবা সম্পর্কে পবিত্র করা। এছাড়া নিজের সম্পদকে প্রাচুর্য অথবা প্রশংসা দ্বারা পরিপূর্ণ করা কেউ যাকাত বলে। তাই কেউ যদি যাকাতের সংজ্ঞা পেতে চান তাদেরকে বলব যে যাকাত তাকে বলা হয়ে থাকে যা প্রদান করলে একজন মানুষের মন ও আত্মা পবিত্রতা লাভ করে এবং সম্পদের বৃদ্ধি ঘটে এবং সম্পদ পরিচ্ছন্ন থাকে। আমরা মনে করি যে এখানকার এই তথ্যের ভিত্তিতে আপনারা যাকাত কি এবং যাকাত কাকে বলে তা জানতে পেরেছেন।
তবে যাকাত প্রদান করার ক্ষেত্রে কি কি শর্ত হতে পারে এবং যাকাত কাকে প্রদান করা যেতে পারে সে বিষয়ে যদি আপনারা জানতে চান তাহলে এখান থেকে তা জেনে নিন। আপনার যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে সম্পদ থাকে তাহলে আপনি যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে ফকির, মিসকিন, যাকাত, আদায়ের নিযুক্ত কর্মচারী, একজন নব মুসলিম, ক্রীতদাস, ধনী সম্পদশালী ব্যক্তি যার সম্পদের তুলনায় ঋণ বেশি, আল্লাহর পথে জিহাদরত ব্যক্তি এবং মুসাফিরকে যাকাত প্রদান করতে পারেন।
যাকাত প্রদান করার ক্ষেত্রে এই ৮ শ্রেণীর ব্যক্তিকে যাকাত প্রদান করা যেতে পারে। এই ৮ শ্রেণীর ব্যতীত অন্যান্য ক্যাটাগরির কোন মানুষকে যাকাত প্রদান করা যাবে না এবং আপনি যদি তা প্রদান করেন তাহলে তার যাকাত হিসেবে পরিগণিত হবে না। তাহলে চলুন এবার জেনে নেই কোন শর্ত সমূহ পালন করার মাধ্যমে আপনি যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে একজন যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হবেন বা বিবেচিত হবেন।
আপনি যদি একজন মুসলমান হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে তাহলে আপনার সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বাহান্ন তোলা রুপা অথবা সমপরিমাণ মূল্যের নগদ অর্থ অথবা সেই পরিমাণ সম্পদ যদি থেকে থাকে তাহলে আপনারা যাকাত দিবেন অথবা দিতে পারবেন। আপনি যদি সবদিক থেকে স্বাধীন হয়ে থাকেন এবং আপনার জ্ঞান ও বিবেক যদি সুস্থ থাকে তাহলে আপনারা আপনার সম্পদের ওপর পরিপূর্ণ মালিকানা থাকা সাপেক্ষে এই যাকাত প্রদান করতে পারবেন।
আপনার যে সম্পদ রয়েছে সেই সম্পদের চাইতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সম্পদ থাকলে আপনি সেখান থেকে যাকাতের জন্য সম্পদ বের করে নিতে পারবেন এবং তা উপরের উল্লেখিত ৮ শ্রেণীর ব্যক্তিকে প্রদান করতে পারবেন। নিজের জানের হেফাজত করার জন্য এবং তা পরিশুদ্ধ ও প্রাচুর্য বৃদ্ধি করার জন্য আপনারা এই যাকাত প্রদান করতে পারবেন।
Leave a Reply