দেনমোহর একটি পরিশোধযোগ্য বিষয়। বিয়ের ক্ষেত্রে দেনমোহর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং দেনমোহর নির্ধারণ থেকে শুরু করে এটি পরিশোধ করার বিষয়ে তাগিদ প্রদান করা হয়েছে। তবে কেউ যদি নিজের আর্থিক সমস্যার কারণে পরবর্তীতে দেনমোহর পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় এবং সেই সংসারে যদি পরবর্তিতে ঝামেলার কারণে ডিভোর্স হয়ে যায় তাহলে দেখা যাবে যে তাকে দেনমোহর অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি স্ত্রী নিজের থেকে তালাক প্রদান করে অর্থাৎ স্ত্রী নিজ উদ্যোগে যদি তালাক প্রদান করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তারপরও দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে।
তবে পাত্রের যদি দেনমোহর পরিশোধ করতে সমস্যা হয়ে থাকে অথবা আর্থিক সমস্যার কারণে দেনমোহর পরিশোধ করার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে সেটি যদি আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স হয়ে থাকে তাহলে সেখানে সময় নির্ধারণ করার মাধ্যমে কিস্তিতে আপনারা দেনমোহর পরিশোধ করতে পারবেন। আর যদি পারিবারিকভাবে এই সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে তাহলে দেখা যাবে যে নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনারা দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করলেন।
তবে যখন হোক যেভাবেই হোক অথবা আপনার অবর্তমানে হোক দেনমোহর পরিশোধ করতেই হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে দেনমোহর পরিশোধ করার ব্যাপারে পাত্রপক্ষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে এবং তারা বলেন যে পরবর্তীতে দেনমোহর দিয়ে দিবেন। এক্ষেত্রে কন্যা এবং কন্যার পরিবারের লোকজনেরা এ বিষয়গুলো মেনে নেন। সংসার খুব স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকে এবং পরবর্তীতে যদি কোনোভাবে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন দেখা যায় যে তারা আলাদা হওয়ার জন্য তালাক বা ডিভোর্সের পথ বেছে নেন।
কিন্তু এভাবে সমস্যার সমাধান হয় না। কারণ তার দেনমোহর পরিশোধ করা হয়নি এবং দেনমোহর তালাকের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলে বিয়ে করেছেন বলে আপনাকে অবশ্যই দেনমোহর দিতে হবে। তবে এ দেনমোহর দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার যদি একেবারে আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকে এবং কোনে পক্ষের লোকের জনেরা এ বিষয়টি মেনে নিয়ে আপনাকে দেনমোহর কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদান করে তাহলে সেটা সবচাইতে ভালো।
কিন্তু দেখা যায় যে আপনি যখন আপনার স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছেন তখন তখন আপনার স্ত্রীর পক্ষের লোকজন আপনাদের প্রতি সহানুভূতিশীল না হয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধিতার সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। তখন কোন পক্ষ কাউকে ছাড় দিতে চাই না। এক্ষেত্রে কেউ যদি ছাড় দিতে না চায় তাহলে ছেলেপক্ষকে অবশ্যই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া দেনমোহর পরিষদ না করলে বিষয়টি আইনি পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে এবং একসময় আপনাকে আদালত এগিয়ে উপস্থিত হতে পারে।
আদালতে উপস্থিত হলে যদি ম্যাজিস্ট্রেট এ বিষয়টা সুন্দরভাবে বিবেচনা করেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় প্রদান করবে এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর অবশ্যই আপনারা কিস্তি আকারে এই দেনমোহর পরিশোধ করতে পারবেন। তবে এই ক্ষেত্রে আপনাদেরকে খুব বেশি সময় প্রদান করা হবে না এবং এক্ষেত্রে বিয়ের সময় বিয়ের আসরে দেনমোহর পরিশোধ করার কথা বলা হয়ে থাকে। তাই বিয়ে যখন যেভাবে যেকোনো জায়গায় করেন না কেন অবশ্যই আপনারা দেনমোহর প্রদান করার মাধ্যমে স্ত্রীর হক পূর্ণভাবে আদায় করবেন এবং এই বিবাহ সম্পন্ন করবেন।
Leave a Reply