আন্তর্জাতিক কন্যা দিবস পুরো বিশ্ব জুড়ে জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলো প্রতিবছর ১১ই অক্টোবর তারিখে পালন করে। এই দিবসকে মেয়েদের দিনও বলা হয়। ২০১২ সালের ১১ই অক্টোবর প্রথম কন্যা দিবস পারন করা হয়েছিল৷ লিঙ্গ বৈষম্য দুর করা এই দিবসের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্যসমূহ হলো শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইিন সহায়তা ও ন্যায়বিচার লাভের অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা, বৈষম্য থেকে সুরক্ষা, নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বলপূর্বক বাল্যবিবাহ রোধ করা।
কন্যা দিবস নিয়ে বিভিন্ন কথা অনেকে অনেক সময় খুঁজে থাকে। আপনি কি এরকস কন্যা দিবস নিয়ে বিভিন্ন কথা খুঁজছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসে পৌঁছেছেন। আর আজকের পোস্টটি আপনার জন্যই। কেননা আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে কন্যা দিবস নিয়ে বিভিন্ন কথার সাহায্যে। আশা করি আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হবেন৷
ইসলাম ধর্মে আছে যে বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকে, সেই বাড়ি বেহেস্তের বাগান। এই বাক্য থেকে বোঝা যায় কন্যা সন্তানের গুরুত্ব কি। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা বুঝতে পারি একটি পরিবারে মেয়ে সন্তানের গুরুত্ব অনেক বেশি। যে বাড়িতে একটি কন্যা সন্তান আছে, সেই বাড়িটা আসলে বেহেস্তের বাগানের মতোই পরিগণিত হয়। তাই বিশ্বজুড়ে কন্যা শিশুর গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে কন্যা দিবস পালন করা হয়।
কন্যা দিবস গোটা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়। অনেকেরই ধারণা কণ্যা শিশুর বিরুদ্ধে নেতিবাচক। কণ্যাশিশুর বিরুদ্ধে এই নেতিবাচক ধারণা ও বৈষম্য দূর করার জন্য কন্যা দিবসের প্রবর্তন করা হয়। পৃথিবীতে অনেক সমাজের মানুষ কন্যাকে এখন নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তে দেখে থাকে। এই দৃষ্টিভঙ্গি ও বৈষম্য দূর করার জন্য ২০১২ সালে প্রথম কন্যা দিবসের প্রবর্তন করা হয়।
অনেকে ধারনা করেন কন্যারা সমাজের জন্য বেশি সুফল বয়ে আনতে পারে না। কিন্তু এই ধারনা পুরোপুরি মিথ্যে কথাটা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কন্যা দিবসের সূচনা করা হয়েছিল। কারণ কন্যারা শিক্ষার সুযোগ পেলে শুধু সমাজের নয় একটি রাষ্ট্রের জন্য একজন উচ্চপদস্থ নাগরিক হতে পারে। বর্তমান সময়ে কন্যারা দেখিয়ে দিয়েছে তারা জ্ঞান অর্জনে এবং শিক্ষা -দীক্ষায় কোনভাবেই পিছিয়ে নেই।
অনেকেই মেয়েদেরকে অনেক সময় বোঝা মনে করে৷ তাদের পরিপূর্ণ অধিকার দিতে কার্পন্যবোধ করে অনেকেই। আবার কন্যা শিশুদের অবহেলাও করে অনেকেই। কিন্তু মেযে বা কন্যা শিশুরা আসলে অবহেলার পাত্র নয়। সমাজে একজন মানুষ হিসেবে পুরুষের যতটুকু অধিকার, কন্যাদেরও ঠিক ততটুকুই অধিকার৷ আর বর্তমান সময়ে ছেরেদের চেয়ে মেয়েরা কোন অংশে পিছিয়ে নেই। তারাও ছেলেদের সাথে সমান ভাবে তাল মিলিয়ে চলছে৷ আর সমাজকে পরিবর্তন করার জন্য বিভিন্ন ভাবে অবদান রাখছে।
আর মেয়েদের বাদ দিযে কোনভাবেই শুধুমাত্র পুরুষের দ্বারা একটি পরিবার, দেশ বা সমাজের উন্নতি করা সম্ভব নয়। তাই সমাজ এবং দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য অবশ্যই কন্যদের দরকার। কারণ বর্তমান সময়ে এমন কোন চাকরি নেই, যেখানে মেয়েরা নাই। সব ক্ষের্ত্রেই মেয়েদের অবদান কোন ভাবেই ছেলেদের চেয়ে কম নয়। বরং অনেকক্ষেত্রে মেযেরাই ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে আছে। তাই বিভিন্ন কাজে যেমন ছেলেদের উৎসাহিত করতে হবে। তেমনিভাবে মেয়েদেরও উৎসাহিত করতে হবে। ছেলে – মেয়ে উভয়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে উন্নতি সম্ভব হবে।
কন্যা দিবসের মাধ্যমে সাধারণত মেয়েদেরকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়৷ একটি পরিবারে, একটি সমাজ, সর্বোপরি একটি দেশের কল্যাণে মেয়েরা কিভাবে অবদান রাখছে, তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয় এই কন্যা দিবসের মাধ্যমে। মেয়েরা যে অবহেলার পাত্র নয়, তারা যে কোনভাবেই সমাজের বোঝা নয়, এই বিষয়গুলো বুঝানোর জন্য কন্যা দিবস পালন করা হয়। মূলত কন্যারা যে চাইলেই ছেলেদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে এই বিষয়টি যেদিন সবাই মন থেকে স্বীকার করে নিতে পারবে, তখনই দেশের উন্নতি সম্ভব হবে।
Leave a Reply