শীত নিয়ে প্রেমের কবিতা

শীত নিয়ে প্রেমের কবিতা

বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক শীত নিয়ে অনেক রোমান্টিক কবিতা ও গল্প লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক গান রয়েছে শীত নিয়ে লেখা। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা শীত নিয়ে লেখা প্রেমের কবিতা সম্বন্ধে আলোচনা করব। আপনারা যারা শীত নিয়ে লেখা কবিতা পড়তে চান তারা শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।

বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর প্রতিটির অপরূপ সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। প্রতিটি ঋতু নিয়ে কবি সাহিত্যিকরা অসংখ্য লেখা লিখেছেন। প্রতিটি ঋতুর সৌন্দর্য আলাদা ভাবে বর্ণনা করেছেন তাদের লেখায়। এর আগে আমরা গ্রীষ্ম বর্ষা ও বসন্ত নিয়ে কবিতা ও গল্প আমাদের আর্টিকেলগুলোতে প্রকাশ করেছি। যেহেতু সামনে শীত আসছে তাই আমরা আজকের আর্টিকেলে শীত নিয়ে লেখা কবিতা আপনাদের কাছে তুলে ধরবো। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য অনেক আনন্দদায়ক হবে।

আসছে  নতুন  সাল  শীতের  চাদরে
উত্তাপ  মাখা  মিঠে  রোদের আদরে ।
কমলা  লেবুর কাল কনকচূড়ের খই
নলেন  গুড়ের  মোয়া পিকনিক হইচই ।

ঘোর লাগে বেড়ানোর চলেযাই সুদূরে
শীতের আমেজ এত সেকি শুধুশুধুরে ।
খেজুরের গাছ থেকে  টুপটাপ টুপ টুপ
শিউলি নামায় রস  মজা হয় বেশ খুব ।

মাঠেবোনা নানা ধান উঠেআসে খামারে
কুলোঝাড়া পাকাধানে ভরেওঠে ধামারে ।
পিঠে পুলি পায়েসের  ঘ্রাণে মন ভরিয়ে
এগিয়ে  যাচ্ছে দিন  বেশ  তড় – বড়িয়ে

আপনি যদি একজন রোমান্টিক মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে সব ধরনের পরিস্থিতিতে নিজের প্রিয় মানুষের সাথে মানিয়ে চলতে পারবেন। নিজের প্রিয় মানুষকে নিয়ে সব রকম সময় উপভোগ করতে পারবেন। শীত ঋতু নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেকের নানা রকম অভিযোগ দেখা যায়। প্রচন্ড ঠান্ডায় অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে শীত আমাদের সকলের জন্য বাধা হলেও শীতের সময় গুলো অনেকেই উপভোগ করে। ঠান্ডার সময়গুলোতে আমরা মুক্ত ভাবে কোন কাজে মন বসাতে পারে না কারণ সিট থেকে বাঁচার জন্য আমাদের ভারী ও গরম কাপড় চোপড় পরিধান করতে হয়। মোটা ও ভারী কাপড় চোপড় পড়ে কায়িক পরিশ্রম করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। ঠিক এ কারণেই কিছু মানুষ শীত একদম পছন্দ করেনা।

রসিক ও রোমান্টিক মানুষগুলো সবরকম ঋতুতেই পরিবেশের সৌন্দর্য উপভোগ করে। শীতের সময়ও প্রভৃতি অনেক শীতল হয়ে যায়। উত্তরের শুষ্ক বাতাস বইতে থাকে। নানারকম ফুল ফোটে সময়। শীতের সময় অনেক শাকসবজি উৎপাদিত হয়। সব মিলিয়েই শীতের সৌন্দর্য অন্যান্য ঋতুর থেকে কম বলা যাবে না।

শীতের রোমান্টিক কবিতা

তুমি শীতের সন্ধ্যায় কুয়াশা হও,,
আমি হবো শীতের সকাল।
তুমি প্রেমের বাতাস হও
আমি মত্ত হবো ভালবাসার আকাশে।
চলে এসো আজ সব মায়াজাল ভেঙ্গে;
আমরা ভেসে যাই একাকী আনমনে
আবীর রাঙানো তোমার মুখটা
যেন ফুলের বাগানে রঙের ঘনঘটা
সুদূর নীলাকাশে ওই মেঘরাশি
তোমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে এক পশলা বৃষ্টিতে
তুমি বৃষ্টি ভেজা হয়ে-
আলতো ছোঁয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস দিলে
পাহাড়ের বুকে ঝর্ণা যদি মাতোয়ারা হয়
তোমাকে জড়িয়ে ধরবো
এক পলকের দেখায়,,
তুমি সাঁঝবাতি হয়ে জ্বালিয়ে দিলে
আমার অন্ধকার মন।
আমি যদি হই খরস্রোতা নদী,
তবুও রোজ নিয়মমাফিক জ্বালাবো-
তোমার দেওয়া আলোর বাতি
তোমাকে পেয়ে নিজেকে নদী ভরা ঢেউ ভাবি
এসেছো জীবনে‌ আমার;
করো নি কোনদিন কোন দাবী!
নিজেকে যখন করছিলাম বন্দী,
তুমি এসে আমাকে শেখালে
এক নতুন জীবনের সন্ধি
তুমি আমার বাঁচার প্রেরণা,,
তুমি আমার কল্পনার কবিতা,,
তুমি মুক্ত আকাশে মৃদঙ্গ,
তুমি আমার জীবনের
শ্রেষ্ঠ একটা অঙ্গ।।

আপনার হয়তো অনেকেই বর্ষা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক কবিতা ও গান পড়েছেন। আপনার অনেকে হয়তো জানেন না শীত নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক কবিতা ও গান আছে। ইউটিউবে গিয়ে শীতের গান লিখে সার্চ করলেই অসংখ্য শীত ঋতুর গান আপনারা খুঁজে পাবেন। শীত ঋতু যতটা সুন্দর, এই গানগুলো ঠিক ততটাই সুন্দর।

কবিতায় সুর দিলেই গান হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখাগুলো গান ও কবিতা হিসেবে আমরা শুনে ও পড়ে থাকি। তাই এই গানের কথাগুলো আবৃত্তি করেও পড়া সম্ভব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গানগুলোর শুনতে নিজেই করতেন। তাই তার লেখা শীতের কবিতাগুলো আপনারা পড়ে দেখতে পারেন।

শীতের সকালের প্রেমের কবিতা

তোমায় মনে পড়ে, 
শীতের সন্ধ্যা সাজানো
এই বিকেলে, 
মিনি মিনি কুয়াশা ঘেরা
প্রকৃতির নীচে। 
তোমায় মনে পড়ে, 
ছাদের কানায় সাজানো
বেঞ্চিতে বসে, 
ঐ দূরের পথ দিয়ে
এক্ষুণি যাবে কোথাও। 
ছিঁড়ে গেছে প্রেম
ভালোবাসার বাঁধন, 
তবু ভালোবাসি
ভালোবাসি আমি তোমাকে। 
একটু দেখি বা না দেখি
তবু তার পূবাভাষ
বয়ে আসে বাতাসে, 
ঐ আম বাগান 
পুকুরের বুক চিরে। 
মনে পরে যায় 
তোমার ও মুখ খানা, 
শরীরের লাবণ্য, 
মনে পরে যায় 
সেদিনের সেই
দূরে সরানোর ভাষা, 
ছিঁড়ে ফেলা ভালোবাসার
কুটি কুটি চাহনি। 
মনে পরে যায়
প্রথম দেখা তোমার
মুচকি হাসির ঝলকানি
ভালোবাসার ইশারায়। 
ভালোবাসা, ভালোবাসা, 
হা, ভালোবাসা, 
তোমায় মনে পরে। 

আপনারা যারা কবিতা লিখতে ভালোবাসেন তারা চাইলেই শীত ঝতু নিয়ে দুই একটি কবিতা লিখে ফেলতে পারেন। শীত ঋতু সৌন্দর্য বর্ণনা করে ছন্দ মিলিয়ে কবিতা লেখা যায়।

বইছে শীতল হাওয়া
খুব করে তোমায় চাওয়া
রাখবো বড় আদরে
দুজনে এক চাদরে।
এমন শীতের রাতে
শুধু তোমার হতে
মন যে আমার চায়
ডুবতে ভালোবাসায়।

শীতের সকাল গুলো অনেক মিষ্টি হয়। মিষ্টি রোদ পরে বাড়ির উঠানে উঠানে। প্রেমিকের মন এ সময়ে উতলা হয়ে ওঠে প্রেম পাবার জন্য। নিজের প্রিয়জনকে একটু কাছে পাওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকে প্রান।

শীতের রাতের প্রেমের কবিতা

তোমার খোলা চুলে ছুঁয়ে যায় পড়ন্ত শীতের  বিকেল , 
গোধূলির লাল সাজে সেজে ওঠে দূর দিগন্তরেখা –
জোনাকির কোলাহল বলে দেয় হাতে নেই সময় অঢেল , 
তবুও আমার  বিজ্ঞাপনে তোমারি কবিতা লেখা ।
 
রোজ ভাবি নাবিকের বেশে  পথ হারাই তোমার ঠোঁটে ;
এবং রাত্রি সাজুক কোন এক প্রাচীন ভৈরবী বেহাগ –
আমি তো খুঁজিনি প্রেম কোনদিন বইয়ের মলাটে ,
তবু কেন উড়ো চিঠি নিয়ে আসে অচেনা ফুলের পরাগ । 
 
বেজে ওঠে গল্পের সাইরেন- ঘরে ফেরে পরিযায়ীর দল, 
তখন বারান্দা জুড়ে তোমার নূপুরের   রিনিঝিনি-
ঝিনুক খুঁজতে চেয়ে ডুব দিয়ে সাগরের গহীন অতল, 
ভোর রাতে মনে পড়ে আমি কোন স্বপ্নই দেখিনি ।
 

শীতের সময় রাত অনেক বড় হয় আর দিন খুব ছোট হয়ে যায়। প্রতিটি রোমান্টিক মানুষের জন্য রাতগুলো অনেক স্পেশাল হয়। শীতের রাতগুলোতে প্রিয় মানুষের সাথে বসে চাঁদ দেখার মত আনন্দ অন্য কিছুতে নেই। শীতল হাওয়ায় দুজন দুজনকে জড়িয়ে নিয়ে ভালোবাসায় ডুবে থাকা এ যেন স্বর্গের মত। এমন স্বর্গ সুখ এই পৃথিবীতে কোথাও বিন্দুমাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। তাইতো আর একটা কথা আমরা বারবার শুনে থাকি, যার কাছে যে শান্তি পায়, তার কাছেই ঠাঁই হোক।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*