যখন কারো পিতা-মাতা ইহজগতের মায়া ত্যাগ করে এই পৃথিবীর বুক থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় নিবেন তখন তার আমলনামা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তাদের জন্য একমাত্র দোয়া করে ভালো কিছুর জন্য আল্লাহ পাকের কাছে প্রার্থনা করতে পারবে তাদের নেককার সন্তান। তাই আপনি যদি একজন নেককার সন্তান হয়ে থাকেন এবং মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে আল্লাহ পাকের কাছে মৃত বাবা মার জন্য 17 টি কুরান সুন্নাহ সম্মত আমল সম্পর্কে জেনে নিন এবং সেই আমলগুলো পালন করুন।
এই আমলগুলো করতে পারলে আপনার পিতা-মাতা অন্ধকার কবরে গিয়ে নূরের আলোয় আলোকিত হবার পাশাপাশি কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে এবং আপনাদের আমলের বদৌলতে তারা আখিরাতে গিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। তাই আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আমাদের জন্মদাতা পিতা মাতার জন্য তাদের মৃত্যুর পর কোরআন সুন্নাহ মোতাবেক 17 টি আমল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করলাম।
মহান আল্লাহপাক মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর বেশি বেশি দোয়া করতে বলেছেন এবং বেশি বেশি দোয়া করার মধ্য দিয়ে আপনি তাদের আখিরাতের জীবন যেন সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে পারে তার জন্য দোয়া করবেন। তাছাড়া পিতা মাতার মৃত্যুর পরেও আপনারা তাদের উদ্দেশ্যে রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বিআনি সগিরা এই দোয়াটি পাঠ করতে পারেন। সাদকায়ে জারিয়া প্রদান করা একজন সন্তানের দায়িত্ব। পিতা মাতার যেমন দুনিয়ার জীবনে বিভিন্ন মানুষকে দান সদকা করতেন তেমনিভাবে তাদের মৃত্যুর পর তাদের আখিরাতের জীবন যেন শান্তিপূর্ণ হয় তার জন্য অবশ্যই সন্তানেরা সদকায়ে জারিয়া পালন করতে পারে।
মা-বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় যদি তাদের মানতের সিয়াম কাজা অবস্থায় রেখে যান তাহলে একজন সন্তান হিসেবে তাদের পক্ষ থেকে সিয়াম সাধনা করে সেটা আদায় করে নিতে পারবেন। তাছাড়া আপনারা যদি হজ অথবা ওমরা করতে চান তাহলে সেটা করতে পারবেন। মা-বাবার পক্ষ থেকে যদি কখনো তারা এগুলো করতে না পারে তাহলে একজন সন্তান হিসেবে মা বাবার হয়ে এই হজ অথবা ওমরা পালন করতে পারবে। তাছাড়া মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করা যাবে এবং এই কোরবানির সব দ্বারা তারা উপকৃত হবে বলে একজন সন্তান হিসেবে আপনারা তাদের হয়ে কুরবানী করতে পারেন। কোন পিতা মাতা যদি দুনিয়ার জীবনে ওসিয়ত করে যান তাহলে সেই ওসিয়ত পূর্ণ করাটা একজন সন্তানের দায়িত্ব এবং এই দায়িত্বের জায়গা থেকে আপনি অবশ্যই আপনার পিতামাতার ওসিয়ত গুলো পূর্ণ করে যেতে পারবেন।
মা বাবা যেমন তাদের বন্ধুদের খুব সম্মানের সঙ্গে এই দুনিয়ার জীবনে চলে ফিরেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা অবশ্যই দেখা হলে সম্মান প্রদর্শন করব। একজন নেক্কার এবং আদর্শবান সন্তান হিসেবে এই কাজগুলো আমরা করলে অবশ্যই তারা খুশি হবে এবং পিতা-মাতার অবর্তমানে তারা আমাদের পাশে ছায়ার মতো হয়ে দাঁড়াবে। তাছাড়া যে সকল পিতা মাতা তাদের আত্মীয় সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে তাদের আত্মীয় সঙ্গে অবশ্যই আমরা সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পারি। দুনিয়ার জীবনে যদি কোন পিতা-মাতার ঋণ করে রেখে যায় তাহলে একজন সন্তান হিসেবে সেই পরিশোধ করাটা আমাদের দায়িত্ব। তবে যার কাছে ঋণ করেছে সেই ব্যক্তি ক্ষমা করা না পর্যন্ত আপনারা সেই দিন থেকে কখনোই পিতা মাতাকে মুক্ত করতে পারবেন না।
মা-বাবা কোন শপথের কাফফারা যদি করে থাকে অথবা কোন ভুল করে থাকে তাহলে সেই ভুলের মা আসলে সেভাবে একজন সন্তানকে তা যাবতীয় ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। তাছাড়া আল্লাহ পাকের কাছে আপনারা যদি পিতা মাতার হয়ে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাহলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হিসেবে বিবেচিত হবে এবং আল্লাহ পাক অবশ্যই পূরণ করবেন।
মা বাবা যদি কোন মান্নত করে মারা যায় তাহলে সন্তান হিসেবে সেই মান্নত পূরণ করাটা দায়িত্ব এবং বাবা মা বাবার ভালো কাজসমূহ যদি জারি করে রাখা হয় তাহলে সেটাও পূরণ করতে হবে। একজন সন্তান হিসেবে আপনারা মাঝেমধ্যে এগিয়ে পিতা মাতার কবরগুলোকে জিয়ারত করতে পারেন এবং তাদের জন্য দোয়া করতে পারেন। অর্থাৎ পিতা-মাতা এ পৃথিবীর বুকে যে সকল কাজ অসম্পন্ন রেখে গিয়েছেন সেগুলো যদি আপনারা আদর্শবান সন্তান হিসেবে পালন করতে চান তাহলে তা পালন করতে পারবেন।
Leave a Reply