আপনারা যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যাকরণ অংশের বিভিন্ন তথ্য পেতে আগ্রহী তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমাদের ওয়েবসাইটে আপনারা বাংলা ব্যাকরণ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এর তথ্য পেয়ে যাবেন। এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করবো।
বর্তমান ডিজিটাল যুগের শিক্ষা ব্যবস্থা অনলাইন ভিত্তিক হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তক ব্যতীত অন্যান্য অনলাইন ভিত্তিক অর্জিত শিক্ষা অবশ্যই প্রয়োজন। আর সে কাজটি আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করে থাকি।
আমাদের এই ওয়েবসাইটে শিক্ষা বিষয়ক ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সমসাময়িক তথ্য তুলে ধরা হয়। আপনার প্রয়োজন মত আপনাদের বিষয়ের টপিকস ডাউনলোড করে নিতে পারেন অথবা পড়েও নিতে পারেন। আজ আমরা বাংলা ব্যাকরণের যে ভাব সম্প্রসারণটি নিয়ে আলোচনা করা হবে সেটি নিম্নে তুলে ধরা হলো:
ভাব সম্প্রসারণ: নানান দেশের নানান ভাষা বিনে স্বদেশী ভাষা, পুরে কি আশা
মূলভাব: মাতৃভাষা প্রত্যেক মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। মাতৃভাষার সুমধুর বাণী ছাড়া অন্য কিছুতেই হৃদয় প্রাণ জুড়ায় না। মানুষ মাত্রই তার মাতৃভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি লাভ ক’রে থাকে। মাতৃভাষার যত সহজে বোধগম্য অন্য ভাষা তত সহজ নয়। পরিপূর্ণভাবে মনের ভাব প্রকাশের পরিতৃপ্তি স্বদেশী ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় পাওয়া যায় না।
সম্প্রসারিত ভাব: স্বদেশী ভাষা বলতে মাতৃভাষা কেই বোঝায়। মাতৃভাষায় মনের ভাব যত সহজে ও অবলীলায় প্রকাশ করা যায় তা অন্য কোন ভাষায় সম্ভব নয়। বিদেশী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব হলেও মাতৃভাষার মত চিন্তা চেতনার বিকাশ ও তার সাবলীল প্রকাশ সম্ভব হতে পারে না। কারণ শিশুকাল থেকেই মানুষ মাতৃভাষা আয়ত্ত করে। মাতৃভাষায় কথা বলে অর্থাৎ মাতৃভাষার আবাল্য পরিচিত, নিতান্তই মায়ের মত আপন। তাই মানুষের কথা বলার ও মনের ভাব প্রকাশের উৎকৃষ্ট বাহন মাতৃভাষা।
এই বিশাল পৃথিবীতে অসংখ্য দেশ ও জাতি যেমন রয়েছে তেমনি প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা। মাতৃভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ যত বেশি আনন্দ পায়, অন্য কোনো ভাষায় মনোভাব প্রকাশ করে তা পায় না। পৃথিবীতে মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যেক জাতির মাতৃভাষা বা স্বদেশী ভাষার নিজস্ব একটা বৈশিষ্ট্য আছে এবং মাতৃভাষার সঙ্গে মানুষের এমন একটি আত্মিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ থাকে যে সেই ভাষাই তার মনোভাব প্রকাশ এর সর্বোত্তম বাহন হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিদেশী ভাষা কষ্টে আয়ত্ত করা গেলেও তার মর্ম যথার্থ ভাবে উপলব্ধি করা যায় না। প্রতিভাশালী লোকেরা পৃথিবীর নানান জাতির নানান ভাষা শিখে ও চর্চা- গবেষণা করে বহুভাষাবিদ বা পন্ডিত খ্যাতি লাভ করেন। কিন্তু তারা মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য মাতৃভাষা বা স্বদেশী ভাষারই সহায়তা নিয়ে থাকেন। নিজের ভাষার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে শিশুকাল থেকে। সুখ- দুঃখ, হাসি-কান্না,আনন্দ -বেদনা ইত্যাদি প্রকাশের জন্য মানুষ মাতৃভাষাকে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারে এবং অন্যকে বুঝাতে সক্ষম হয়।
আমরা বাংলাদেশী। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। মাতৃভাষা বাংলার সাথে আমাদের ভাব সহজ, প্রগাঢ় ও অন্তরঙ্গ। আমাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আবেগ- অনুভূতি সবই আমরা ঐকান্তিকভাবে প্রকাশ করতে পারি মাতৃভাষা বাংলার মাধ্যমে। আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং বিমুর্ত চিন্তা ও চেতনা মূর্ততা লাভ করে মাতৃভাষা বাংলার মাধ্যমেই।
মাতৃভাষার সঙ্গে আমাদের নিবিড় আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। যে জাতি পৃথিবীতে শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞান চর্চা, গবেষণাকাজে মাতৃভাষার যত বেশি চর্চা করেছে সে জাতি তত বেশি উন্নত হয়েছে। মাতৃভাষার ব্যাপক চর্চা ও প্রয়োগ ছাড়া জাতীয় বিকাশ সম্ভব নয়। পৃথিবীর বিদ্বান ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা বিভিন্ন ভাষা শেখেন সাধনা করেন জ্ঞানের চর্চা করেন কিন্তু অর্জিত সাধনার ফল প্রকাশ করেন মাতৃভাষায়। তাই আমরা সহজেই বলতে পারি মাতৃভাষার মত সুন্দর সাবলীল প্রকাশ অন্য ভাষায় সম্ভব নয়।
মন্তব্য: পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে মাতৃভাষা হচ্ছে আমাদের মায়ের ভাষা। একজন শিশু যখন পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয় তখন তার মায়ের ভাষাতেই সে কথা বলা শিখে। ভাষা হলো মানুষের ভাব বিনিময় অন্যতম বাহন। তাই আমরা নিজ নিজ মাতৃভাষার একে অপরের সাথে ভাব বিনিময় করব এর মাধ্যমেই মানুষের মনের আশা আকাঙ্খার পরিতৃপ্তি ঘটে।
Leave a Reply