আপনাদের সকলকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের এ আর্টিকেলে। আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন ওলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে। ঠিক সেই জন্য আমরা আজকে শুধুমাত্র আপনাদের সাথে আলোচনা করার জন্য এসেছি ওলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যগুলো নিয়ে।
ওলট কম্বল গাছের ঔষধ একটি পরীক্ষিত ঔষধ বলে পরিচিত রয়েছে। ওলট কম্বল গাছের পাতা ডাল মূল বা কল আমাদের জন্য খুবই উপকারী। এক কথায় এই গাছটির কোন অংশই ফেলে দেওয়ার মত নয় সবগুলো অংশই আমাদের প্রয়োজন। বিশেষ করে বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে এই উলট কম্বল গাছ ব্যবহার করা হয়ে থাকে যুগ যুগ ধরে।
আপনারা যারা জানতে আগ্রহী রয়েছেন উলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে তারা অবশ্যই আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো আমাদের আর্টিকেল থেকে সংগ্রহ করুন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক উলট কম্বল গাছের কি কি উপকারিতা রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
উলটকম্বল কি?
উলট কম্বল গাছের উপকারিতা জানার আগে আমাদেরকে জেনে নিতে হবে উলট কম্বল কি সে সম্পর্কে। ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম ঔষধি গাছ হল ওলট কম্বল। উলটকম্বল দেশে জন্মানো ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। যার ইংরেজি নাম ডেভিলাস কটন। এটি একটি গুল্ম জাতীয় চিরহরিৎ গাছ। উলটকম্বল গাছের পাতা, ডাল,মূল, বাকল বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উলট কম্বল গাছ বাংলাদেশ,ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় আপনি পাবেন। এটি বাংলাদেশের উপকূলীয় পিরোজ পুরের ভান্ডারিয়া ও ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া সড়কের পাশে দুই একটি গাছ পাওয়া যায়। এছাড়া কাঁঠালিয়া উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি মোবাইল টাওয়ারের সড়কের পাশে পাবেন। এছাড়াও এটি পাবেন এশিয়ার প্রধান অঞ্চল এর আদি নিবাসে। উলটকম্বল ফুল মূলত বর্ষার ফুল।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ওলট কম্বল গাছের উপকারিতা
আপনারা যারা অনেকদিন যাবত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তাদেরকে বলব খুব সহজেই আপনারা এই কষ্ট থেকে উদ্ধার পেতে পারেন শুধুমাত্র উলট কম্বল গাছের সাহায্যে। উলট কম্বল গাছের বাকুল ও ডাটা, পানিতে ভিজিয়ে রাখলে আঠালো পদার্থ বের হয়। যা কুষ্ঠু কাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। প্রথমে আপনাদেরকে রাতে উলট কম্বল গাছের বাকুল ও ডাটা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
এরপর সারা রাত ভিজিয়ে থাকার পর সকালবেলা উঠে সেই পানিটা আপনাকে খালি পেটে খেতে হবে। এভাবে বেশ কয়েকদিন এই ওষুধটি সেবন করার মাধ্যমে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও পাতার ডাটা প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া উপশম আমাশয় রোগের জন্য বেশ উপকারী। আপনাদের যাদের প্রসাবের জ্বালাপোড়া রয়েছে এবং আমাশয় রোগ রয়েছে তারা চাইলে উলট-কম্বল পাতার ডাটা সেবনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
স্ত্রী রোগের ক্ষেত্রে উলট কম্বল গাছের উপকারিতা
উলটকম্বল গাছের পাতা ও কাণ্ডের রস গনোরিয়া, ফোড়া ও স্ত্রী রোগে বেশ উপকারী। উলটকম্বল গাছের মূলের ছাল থেকে এক ধরনের আঠা জাতীয় রস বের হয়ে থাকে যা গর্ভাশয়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে বন্ধ্যাত্ব রোগীদের ক্ষেত্রে উলট কম্বলের মূলের ছাল ভীষণ উপকারী। আপনারা যারা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ্যাত্ব রোগে ভুগছেন তারা চাইলে উলট কম্বল গাছের ছালটি সেবন করতে পারেন। পাতা ও কাণ্ডের রস গনোরিয়া রোগে বিশেষ উপকারী। এছাড়াও যাদের দীর্ঘদিন থেকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব জরায়ু সংক্রান্ত রোগ বন্ধ্যাত্ব ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কার্যকর এটি বলে জানান ভেষজ বিশেষজ্ঞগণ। তাই যাদের এরকম সমস্যাগুলো রয়েছে তারা নিশ্চিন্তে এই কাজটি সেবন করতে পারেন।
গবাদি পশুর ক্ষেত্রে উলট কম্বল গাছের উপকারিতা
গবাদি পশুর পাতলা পায়খানা, বিলম্ব প্রজনন, এবং হাঁস মুরগির বিভিন্ন চিকিৎসায় উলট কম্বলের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ থেকে তৈরি ওষুধের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বলে জানিয়েছেন ভেষজ বিশেষজ্ঞগণ। আশা করি আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা জেনে নিতে পেরেছেন উলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্যগুলো।
Leave a Reply