বাংলা ব্যাকরণ এর একটি বিষয় হল ভাব সম্প্রসারণ। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় ভাব-সম্প্রসারণ এসে থাকে। আপনারা বাংলা ব্যাকরণ এর বিভিন্ন বই এ বিভিন্ন ভাব সম্প্রসারণ গুলো পেয়ে থাকেন। আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের সুবিধার্থে আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা। আজও আপনাদের উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব:
পাপীকে নয় পাপকে ঘৃণা করো
মূলভাব: সমাজে পাপী অন্যায়কারী সকলের কাছে ঘৃণিত । কিন্তু মানুষ এ কথা ভুলে যাই যে মানুষ কখনো জন্মগতভাবে পাপী হয় না। বরং পারিপার্শ্বিক অবস্থা সমাজ ব্যবস্থাই মানুষকে অন্যায় ও পাপের পথে পরিচালিত করে। মানুষ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন সে নিষ্পাপ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। এদিক দিয়ে মানুষের পাপী ব্যক্তিতে পরিণত হওয়া দায়ভার সমাজের। তাই পাপীকে ঘৃণা না করে বরং পাপকে ঘৃণা করতে হবে। তাহলেই সমাজ দেশ ও জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে সমাজের সকলের কাছে।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের জীবন সংগ্রাম মুখর। এই সংগ্রামমুখর জীবনে মানুষকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে টিকে থাকতে হয়। এই প্রতিযোগিতায় যারা পিছিয়ে পড়ে বা ছিটকে পড়ে তারা তখন নিজের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই অন্যায়, অসত্য তথা পাপের পথে পা বাড়ায়। নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হত্যা প্রভৃতির জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়।
এ অবস্থায় সমাজ যদি তাদের ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে তবে তাদের শোধরানোর পথ বন্ধ হয়ে যায়। সমাজের প্রতি তাদের ক্ষোভ আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। এর ফল কখনও মঙ্গলজনক হয়না। তাই আমাদের উচিত পাপীকে ঘৃণা না করে তাকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হওয়া। অন্যদিকে পাপকে ঘৃণা করার মাধ্যমে মানুষকে পাপের বিরুদ্ধে সচেতন করে তোলা হলে তার মাধ্যমে পাপের প্রবণতা হ্রাস করা সম্ভব।
মনে রাখতে হবে সমাজে পাপের অস্তিত্ব থাকলে পাপী সৃষ্টির সুযোগ থাকে। পাপকে নির্মূল করায় তাই সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত। পাপকে ঘৃণা করে সেই লক্ষ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। পাপীদের হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা কিন্তু যখনই তার হিতাহিত জ্ঞান ফিরে আসে এবং বিবেকের পুনর্জাগরণ ঘটে তখনই সে তার অতীত পাপের জন্য অনুতপ্ত হয় যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নিতে দ্বিধা বোধ করে না। তাই এসব মানুষকে ঘৃণা করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাতে পাপী ব্যাক্তিটির সুপথে আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
অপরপক্ষে যদি সেই খারাপ কর্মটিকে তথা পাপকে ঘৃণা করা যায় তাহলে মানুষ আর সে পথে ধাবিত হবে না। পাপ আছে বলেই পাপী সৃষ্টি, তাই প্রথমেই উচিত সমাজকে পাপ মুক্ত করা। সমাজে পাবনা থাকলে পাপীর জন্ম হবে না। যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, পাপীকে নয় ঘৃণা করো পাপকে। যারা শত্রু তাদেরকে শত্রু না ভেবে ক্ষমা করে দাও, তাহলে তুমিও ক্ষমা পাবে।
মন্তব্য: উপরের বিস্তারিত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। পাপকে ঘৃণা করেই পাপী নির্মূল করা সম্ভব। পাপীকে ঘৃণা করলে পাপ আরো বেড়েই যাবে। তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে হবে। এবং সমাজ থেকে কিভাবে পাপকে নির্মূল করা যায় সে বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
যারা বাংলা ব্যাকরণ এর ভাব সম্প্রসারণ এর উপর তথ্য পেতে চাচ্ছেন, তারা আমাদের এই ওয়েবসাইটে ওই বিষয়টা দিয়ে সার্চ দিলেই সেই ভাবসম্প্রসারণ টি পেয়ে যাবেন। আমরা এখানে চেষ্টা করেছি প্রতিটা ভাব-সম্প্রসারণ নিয়েই আলোচনা করার। বিশেষ করে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত ভাব সম্প্রসারণ গুলো তুলে ধরার ।
শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি আমাদের এই ওয়েবসাইটে আপনাদের প্রয়োজনীয় ভাব-সম্প্রসারণ গুলো পেয়ে যাবেন। আপনাদের যদি কোন মতামত থাকে এবং এই ওয়েবসাইটের উত্তরোত্তর আরো কিভাবে সাফল্যমন্ডিত করা যায় সে বিষয়ে অবশ্যই মন্তব্য প্রদান করবেন। আপনাদের মতামতের ওপর গুরুত্ব দিয়েই এই ওয়েবসাইটে আরো তথ্য সংযোজন করা হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।
Leave a Reply