ভাব সম্প্রসারণ: পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে Poth Pothiker Sristi Kore Na, Pothikee Pother Sristi Kore

ভাব সম্প্রসারণ: পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।

আপনি কি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ভাব-সম্প্রসারণ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খুঁজতেছেন? আমাদের ওয়েবসাইটে আপনারা বাংলা ব্যাকরণ এর ভাব সম্প্রসারণ পেয়ে যাবেন। বর্তমান ডিজিটাল যুগের শিক্ষা ব্যবস্থা অনলাইন ভিত্তিক হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তক ব্যতীত অন্যান্য অনলাইন ভিত্তিক অর্জিত শিক্ষা অবশ্যই প্রয়োজন। আর সে কাজটি আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করে থাকি।

আমাদের এই ওয়েবসাইটে শিক্ষা বিষয়ক ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সমসাময়িক তথ্য তুলে ধরা হয়। আপনার প্রয়োজন মত আপনাদের বিষয়ের টপিকস ডাউনলোড করে নিতে পারেন অথবা পড়েও নিতে পারেন। আজ আমরা বাংলা ব্যাকরণের যে ভাব সম্প্রসারণটি নিয়ে আলোচনা করা হবে সেটি নিম্নে তুলে ধরা হলো:

ভাব সম্প্রসারণ: পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।

মূলভাব: পথ ও পথিকের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তবে পথিকই পদ সৃষ্টি করে। অর্থাৎ আদর্শের চেয়ে মানুষই বড়। কেননা মানুষই আদর্শের জন্ম দেয়। মানুষ পথিক হয়ে নিজের প্রয়োজনে নিত্য নতুন পথের সৃষ্টি করে সভ্যতার উৎকর্ষ সাধন করে থাকে।

সম্প্রসারিত ভাব: আমাদের মাঝে প্রায়ই প্রশ্ন দেখা দেয় যে, মানুষ বড় না আদর্শ বড়। কিংবা পথ বড় না পথিক। এমন বিতর্কে সরাসরি কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। কেননা পথ না থাকলে পথিক সৃষ্টি হবার সুযোগ নেই। আবার আদর্শহীন মানুষকে তো মানুষ এই বলা যায় না প্রকৃতপক্ষে পথিকই পথের জন্ম দেয় মানুষ যখন একই স্থান থেকে অন্যত্র গমন করে তখনই সৃষ্টি হয় পথের পথিক যদি না থাকে তবে পথের মূল্য কোথায় অধিক না থাকলে পথের সৃষ্টি হতো না কারণ মানুষ তার প্রয়োজনে পদ সৃষ্টি করেছে।

পথিক পৃথিবীর পথে পথে ভ্রমণকারী জীবনের রথের মত। সে গতির প্রতীক। পথ কখনও কোনও পথিকের সৃষ্টি করতে পারেনি পারবেও না। জীবনে আদর্শের প্রয়োজন রয়েছে সত্য। কিন্তু মানুষ ছাড়া আদর্শেরইবা মূল্য কোথায়? প্রকৃত বিচারে আদর্শের জন্যে মানুষ নয়, মানুষের জন্যই আদর্শ। আর আদর্শ বলতে যা বোঝায় তা তো মানুষই আপন চরিত্র মাহাত্ম্য এবং কীর্তিগাথার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছে।

পথ ও পথিক, এ দুটি আলাদা বস্তু হলেও পরস্পর অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পথিক তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় নতুন পথ সৃষ্টি করে। মানুষ ঠিক একইভাবে তার চেষ্টা ও সাধনা দিয়ে জীবনে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। মানুষের সৃষ্টিশীলতার মূলে নিহিত রয়েছে বিরামহীন অধ্যবসায় ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং ধৈর্য। তীব্র ইচ্ছা শক্তি আর প্রচেষ্টা দিয়ে মানুষ অসাধ্যকে জয় করতে পারে।

সৃজনশীল মানুষ তার চলার পথ নিজেই তৈরি করে নেয়। অন্যের পথে সে হাঁটে না। একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা জীবনে অগ্রসর হতে চায়। প্রতি পদক্ষেপেই তারা একটা নতুন উপায়ের সন্ধান করে। আর জীবনে নানা ব্যর্থতা অতিক্রম করে একদিন সে ঠিকই তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথটি তৈরি করে নেয়। অন্যের প্রদর্শিত পথে অগ্রসর হওয়ার মধ্যে কোনো আনন্দ নেই, নেই কোনো গৌরব।

আর এ পথে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অনেক সময়ই অর্জিত হয় না। তাই কৌতূহলী পথিক অবিরাম নতুন পথের সন্ধান করে। গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক পথ। এরকম অনেক পথই এ পৃথিবীতে তৈরি হয়ে আছে। কিন্তু প্রতিটি পথই যে মানুষকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দিবে এমনটি নয়। কারণ প্রতিটি মানুষই একে অপরের থেকে পৃথক এবং তাদের মেধা ও চিন্তাশক্তিও পৃথক।

তাই গতানুগতিক পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে চাইলে অনেককেই মাঝ পথে থেমে যেতে হয়। এমন দৃষ্টান্তের শেষ নেই। কারো অভিভাবক হয়তো আশা করে যে তাদের সন্তান ডাক্তার হবে। কিন্তু সন্তানটি হয়তো তার মেধা এবং সৃজনশীলতাকে বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে লাগাতে চায়। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক যদি সন্তানের ওপর তাদের ইচ্ছাটাকে চাপিয়ে দেয় তবে দেখা যাবে যে সে মাঝপথেই থমকে গেছে। অন্যদিকে সে যদি নিজের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজ পথের সন্ধান করে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে তবে সে প্রকৃত অর্থেই সফল। এরকম প্রতিটি মানুষেরই সফলতার পথ আলাদা। তাই প্রকৃত পথিক প্রতিনিয়ত নতুন পথের সন্ধান করে।

মন্তব্য: সৃষ্টিশীল কর্ম প্রেরণাই মানবজীবনের মূল চালিকা শক্তি হওয়া উচিত। আর্দশানুসারী হওয়ার চেয়ে আর দশ সৃষ্টি র প্রেরণাই গ্ৰহণযোগ্য।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*