আমরা যদি আমাদের আশেপাশে একটু খোঁজ করতে যাই তাহলে দেখা যাবে যে প্রত্যেকটি মানুষেরই দায় রয়েছে এবং প্রত্যেকেই কম বেশি ঋণের সঙ্গে জর্জরিত। আবার আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ঋণের সঙ্গে নিজেদেরকে জড়িত করছে এবং এই জড়িত করার পর একটা সময় তারা কোন দিকবিদিক খুঁজে না পেয়ে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিচ্ছে।
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হওয়ার কারণে আপনি যদি ঋণী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বেশ কিছু আমল রয়েছে এই আমলগুলো করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের কাছে ঋণ মুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন বা ফরিয়াদ করতে পারেন। তাই আপনি যদি আপনার ঋণ পরিশোধ করার জন্য আমল করে থাকেন এবং আপনার আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিচের আমলটি পাঠ করবেন। এতে করে আপনার ঋণ যেমন পরিশোধ হবে তেমনি ভাবে আপনি মানসিকভাবে অনেক প্রশান্তি অনুভব করতে পারবেন।
ছোট অথবা বড় হোক যে কোনো ঋণ একটা মানুষের জীবনে অনেক খারাপ একটি বিষয়। বাস্তবিক জীবনে চলার পথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করার জন্য অথবা বিভিন্ন ধরনের জরুরি মুহূর্তে আমরা হয়তো আমাদের পরিচিত ব্যক্তিদের কাছে ঋণ করে থাকি। তাছাড়া বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের এনজিও সংস্থা এবং ব্যাংক সংস্থা সাধারণ জনগণের মাধ্যমে ঋণের যে সহজ প্রক্রিয়া গুলো চালু করেছে তাতে করে যে কোন জনগণ খুব সহজেই বিভিন্ন ঝামেলা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ঋণ করে থাকেন। তাছাড়া সাধারণ জনগণের ওপরে এই ঋণের বোঝা যাতে বৃদ্ধি পেয়ে যায় অথবা সকলে যাতে ঋণ নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানকে সচল করে তুলতে পারে তার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফল তুলে ধরা হচ্ছে।
তবে এক্ষেত্রে তারা যে সকল কার্যকরী উপায়ের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করে তা কাজে লাগানোর কথা বলছে তা হয়তো অনেকেই করছে না। আমাদের সমাজের এমন কিছু বেকুব মানুষ রয়েছে যারা ঋণের পর ঋণ তুলে যাচ্ছে এবং ইচ্ছা মত তাদের দৈনন্দিন জীবনের স্বাদ এবং চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটা সময় যখন ঋণ পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করছে তখন ছুটে যাচ্ছে মোহন সৃষ্টিকর্তার কাছে যাতে তিনি এ বিষয়ে সাহায্য করে থাকেন। এক্ষেত্রে আমাদের হাদিসে উল্লেখ এসেছে যে আমাদের চাহিদাগুলো যদি সংক্ষিপ্ত করা যায় তাহলে আমরা খুব সহজেই খুব ভালোভাবে দৈনন্দিন জীবনকে পরিচালিত করতে পারব।
তাই দৈনন্দিন জীবনের চাহিদাগুলো যদি আমরা সীমিত রাখতে পারি তাহলে এই ধরনের ঋণের মধ্যে যেমন নিজেদেরকে জড়িত করতে পারব না তেমনি ভাবে দুশ্চিন্তা মুক্ত থেকে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে সুন্দরভাবে দিন পার করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারব। তবে অনেকে আছেন যারা ঋণে জর্জরিত হয়ে এখন মানবতার জীবনযাপন করছেন এবং এই জন্য ভাবছেন সৃষ্টিকর্তার কাছে হয়তো ফরিয়াদ জানালে তিনি আপনাদেরকে এ বিষয়ে সাহায্য করবেন।
তাই আপনারা তার কাছে খুব সহজভাবে বেশ কিছু আমল করার মাধ্যমে এই সাহায্য চাইতে পারেন। বিশেষ করে আপনারা যখন দোয়া করবেন ভালোভাবে এবং এই দোয়া যেন কবুল হয় সে সকল আমল যদি করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনাদের পরিবার মহান আল্লাহ পাক শুনছেন এবং আপনাদেরকে এ বিষয়ে সাহায্য করছেন।
এক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল হযরত মোহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে কোন ব্যক্তি যদি নিজের উল্লেখিত দোয়াটি পাঠ করতে পারে এবং সকাল সন্ধ্যা যদি পাঠ করে তাহলে তার ঋণ এবং দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে। যেহেতু ঋণের মাধ্যমে একটা মানুষের দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পায় সেহেতু আপনার ঋণ যখন পরিশোধ হয়ে যাবে তখন আপনি শান্ত মনে এবং স্থির মনে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি শোকর গোজার এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারবেন।
তাই নিজের জীবনকে খুব সুন্দর ভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং মানসিক তৃপ্তি পাওয়ার জন্য ঋণের ভেতরে না গিয়ে আমাদের অর্জিত ইনকামের দ্বারাই জীবনকে পরিচালনা করার নামই হলো জীবন। নিচে আপনাদের জন্য এই দোয়া প্রদান করা হলো এবং তথ্য সহ প্রদান করা হলো বলে আপনারা অবশ্যই পাঠ করবেন।
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল আঝযি ওয়াল কাসালি ওয়াল বুখলি ওয়াল ঝুবনি ওয়া দালায়িদ-দাইনি ওয়া গালাবাতির-রিঝালি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি থেকে আশ্রয় চাই, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে আশ্রয় চাই, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে আশ্রয় চাই, ঋণভার ও মানুষজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে মুক্তি চাই। (বুখারি)
Leave a Reply