আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রবন্ধ রচনা গুলো আলোচনা করে আসছি। আজকে আমরা যে রচনাটি নিয়ে আপনাদের সামনে তুলে ধরব সেটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে অহরহ এর সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে ঢাকা শহরের এবং চট্টগ্রাম শহরের ব্যস্ততম জায়গায় এই ঘটনা আপনারা প্রায়ই সম্মুখীন হবেন আশা করি।
কৌতুহল জাগছে আসলে আমরা আজকে কি লজ্জা নিয়ে আপনাদের সামনে আলোচনা করব। হ্যাঁ আজকে আমরা যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হলো যানজট। শুনেই মনে হচ্ছে আপনাদের খুবই পরিচিত একটি ভোগান্তি। তো যাই হোক এই রচনার বিস্তারিত নিচে আলোচনা করি;
যানজট
অথবা যানজটের কারণ ও প্রতিকার
ভূমিকা: নাগরিক জীবনে মানুষের মারাত্মক বিপত্তির নাম যানজট। যানজট বলতে বুঝায় রাস্তার উপর অসংখ্য যানবাহনের ভিড় ও চলাচলে বিঘ্ন। বর্তমানে যানজট শুধুমাত্র বড় বড় শহরগুলোতেই দেখা যায় না, ছোট শহর- গঞ্জ, এমনকি গ্রামের রাস্তায়ও মানুষ যানজটের ফাঁদে আটকা পড়ে থাকে। ফলে মানুষের মূল্যবান শ্রমঘন্টা নষ্ট হয়, অপচয় হয় মূল্যবান জ্বালানি সামগ্রী।
যান জটের স্বরূপ: যানজট আমাদের রাজধানী ঢাকা সহ অন্যান্য শহরের এক নিত্য নৈমিত্তিক সমস্যা। একটি শহরবাসীর জীবন ধারাকে ক্রমশ জটিল করে তুলছে। পায়ে হাঁটার গতি এখানে মোটরজানের ক্ষতিকে হার মানায়। যানবহনে করে দশ মিনিট রাস্তা অতিক্রম করতে সময় লাগে এক ঘন্টা। একই রাস্তায় বিশৃঙ্খলভাবে ধীরগতি ও দ্রুতগতির যান চলে।
যানজটের ক্ষয়ক্ষতি: যানজটের ফলাফল জাতির জন্য ভয়াবহ। এর কারণে নগরবাসীর বহু মূল্যবান সময় অপচয় হয়। যানজট সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের অর্থনীতি। যানজটের কবলে পড়ে নষ্ট হয় লক্ষ লক্ষ টাকার কাঁচামাল। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পায়। মানুষের ভোগান্তির সীমা থাকে না। অফিস যাত্রীরা ঠিক সময়ে অফিসে পৌঁছতে পারেনা। মুমূর্ষু রোগী অনেক সময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার যানজটের কারণেই পথেই মারা যায়।
উন্নত বিশ্ব ও আমাদের দেশের যানজট: উন্নত বিশ্বের কোন দেশেই আমাদের দেশের মতো যানজটের বালাই নেই। সে সব দেশের রাস্তাঘাট, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ লাইন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এসব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় না। ফলে রাস্তা কাটাকাটি ও খোড়াখুড়ি কাজ চলে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে।
যানজটের কারণ: বাংলাদেশের পটভূমিতে যানজটের নিম্নলিখিত কারণ গুলো সনাক্ত করা যায়:
১. সংকীর্ণ ও অনুন্নত রাস্তাঘাট;
২. জনসংখ্যা ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি;
৩. বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের একই সাথে চলাচল;
৪. ত্রুটিপূর্ণ ট্রাফিক ব্যবস্থা;
৫. চালকদের অদক্ষতা ও হীন মানসিকতা;
প্রতিরোধ ও প্রতিকার: দুঃসহ যানজট থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গুলো গ্রহণ করলে সুফল আশা করা যায়:
১. রাস্তা সংস্কার;
২. ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি;
৩. রিকশা নিয়ন্ত্রণ;
৪. চালকদের প্রশিক্ষণ;
৫. যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধ;
৬. বাইপাস রাস্তা নির্মাণ;
উপসংহার: যানজট নগরবাসীর কাছে এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ও দুঃসহ অভিজ্ঞতা। যানজটের হাত থেকে মুক্তি চায় তারা। জীবনের গতি ও ছন্দ ফিরে পেতে চায়, এ লক্ষ্যে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে এবং তার বাস্তবায়নে আরো আন্তরিক হতে হবে। সেই সাথে আমাদেরকেও যানজট নিরসনে যাবতীয় বিষয়গুলো সরকারের সাথে সহযোগিতা করে চলতে হবে। তাহলে যানজট থেকে আমরা মুক্তি লাভ করতে পারি।
আজকে যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করলাম অবশ্যই আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি আজকের রচনার প্রতিটি বিষয়ে আলোচনা করার। এরপরেও কিছু কিছু বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র মূল তথ্যটি উপস্থাপনা করেছি আলোচনাটা আপনারা নিজেরা পাঠ্যপুস্তক দেখে করে নিবেন। কারণ অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমরা পুরো বিষয়টা তুলে ধরতে পারি না।
কিন্তু সেক্ষেত্রে আমরা মূল পয়েন্টটা আউট করে দেই যেটা দেখে আপনারা নিজেদের মতো করে আপনারা সেটা করে নিতে পারবেন। যাইহোক আগামীতে নতুন একটি রচনা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর বেশি বেশি করে আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
Leave a Reply