আজকে আমরা নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আজকে যে রচনাতে নিয়ে আলোচনা করব এটা একটি বাস্তব ধর্মী রচনা। এই রচনা সম্মুখিন আমাদের প্রায়ই হতে হয়। কথা না বাড়িয়ে চলুন আমরা আমাদের রচনার মূল বিষয়বস্তুতে যাই:
প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা-বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমূহ বন্যা ঝড় সাইক্লোন নদী ভাঙ্গন অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন সংস্থা প্রতিকারের উপায় উপসংহার।
ভূমিকা: বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। প্রকৃতি তার খেয়াল খুশিমতো চলে প্রকৃতির উপর মানুষ আজও কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপের সক্ষম হয়নি। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা বিপর্যয় প্রায়ই সংগঠিত হয়ে থাকে। আমাদের দেশ বাংলাদেশ ও প্রতিবছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমূহ: আমাদের দেশের জনগণের বিভিন্ন সময়ে জীবনে নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙ্গন প্রভৃতি এদেশের জনজীবনকে প্রতিবছরই বিপন্ন করে তোলে। মূলত ঘূর্ণিঝড় এবং সামুদ্রিক ঝড় এদেশের বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত। তবে সাম্প্রতিক কালে বন্যাও একটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে আমাদের দেশে।
বন্যা: বাংলাদেশ যেহেতু নদীমাতৃক দেশ তাই বাংলাদেশের বন্যা একটি বার্ষিক দুর্যোগ হিসেবে পরিচিত। বর্ষাকালে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এসময় উজানের পাহাড় থেকে প্রচুর পানি নেমে আসে ফলে বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট তলিয়ে যায় পানির নিচে এছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে প্রতিবছরই অনেক পানি আমাদের দেশে আসে এই বর্ষাকালে সময়। বন্যায় কৃষকদের উঠতি ফসল বিনষ্ট হয় রাস্তাঘাটে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় পশুপাখি কখনো মানুষ ভেসে যায়। আমাদের দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ১৯৮৮,১৯৯৮ ও ২০০৪ সালে। ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালের বন্যা ছিল ভয়াবহ।
ঝড়: ঝড় প্রতিবছরই বাংলাদেশে আঘাত হানে। বৈশাখ মাসে সাধারণত ঝড়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। এসময় কালবৈশাখীর ছোবলে প্রতিবছর গ্রাম বাংলার ঘর-বাড়ি, বৃক্ষরাজি ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। বৈশাখ মাস ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময়ও দেশের বিভিন্ন স্থানে নিম্নচাপ জনিত ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয়। এতে একটি বিশেষ অঞ্চল মুহূর্তের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় জানমালের ক্ষতি সাধিত হয়।
সাইক্লোন বা জলোচ্ছ্বাস: বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড় জলোচ্ছ্বাস যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। আমাদের বাংলাদেশেও প্রতিবছরই সাইক্লোন এর প্রভাব থেকেই যাচ্ছে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ঘূর্ণি ঝড় বয়ে গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সিডর, ফণী,আইলা।
নদী ভাঙ্গন: নদী ভাঙ্গন বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রতিবছর বন্যার সময় এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় হাজার হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি বৃহৎ নদী ছাড়াও অসংখ্য শাখা ও উপনদীর ভাঙ্গন বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বিপত্তির সৃষ্টি করে চলেছে। অনেক সমৃদ্ধ জনপদ ও গঞ্জো আজ নদীগর্ভে বিলীন। সম্প্রীতি বুড়িগঙ্গা নদীর ভাঙ্গনে ঢাকা শহরের বাইরের অংশে বাড়িঘর ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে।
অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ: উল্লিখিত দুর্যোগ ছাড়াও গ্রীষ্মকালের দীর্ঘমেয়াদি খরা দুর্যোগ হিসেবে দেখা দেয়। ফসলের ক্ষতি করে। অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির নিচে নেমে যাওয়ায় পানীয় জলের সংকট দেখা দেয়। ভূমিকম্প বাংলাদেশের সম্ভাব্য মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও আমাদের দেশে চট্টগ্রামের পাহাড়ি ভূমিধসে অনেক সময় দুর্যোগের সৃষ্টি করে। আর্সেনিক দূষণ ও বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিকারের উপায়: আসলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় মানুষের নেই। তবে ক্ষয়ক্ষতি এবং বিপর্যয় যাতে কম হয় সে জন্য নানা রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপকূলবর্তী জনগণ যাতে জলোচ্ছ্বাসের সময় নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য প্রচুর বহুতল আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জনগণকে গনমাধ্যমের সাহায্যে তাদেরকে সতর্ক করা হয়।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশের মানুষের নিত্য সঙ্গী। নানা ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যেও এদেশের মানুষ বেঁচে থাকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এদেশের মানুষকে করেছে সংগ্রামী।
শিক্ষার্থী বন্ধুরা উপরের যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করা হলো তা অবশ্যই আপনাদের ভালো লাগবে আপনারা বেশি বেশি করে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং নতুন নতুন রচনা সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।
Leave a Reply