স্বামী স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে সঠিক নিয়ম জানতে এসেছেন তাদের জন্য আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের নিয়ম অনুসরণ করে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং কাজের মাধ্যমে কিভাবে তালাক দিতে হয় সেই তথ্যগুলো জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা সকলেই অবগত আছি যে বাংলাদেশের যেকোনো ধরনের বিবাহ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে কাজির মাধ্যমে।
বিবাহের অনুষ্ঠানে কাজী উপস্থিত থাকার মাধ্যমে যেমন সাক্ষীদের স্বাক্ষর সহ প্রত্যেকটি তথ্য লিপিবদ্ধ করে একটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করে থাকে ঠিক একইভাবে কোন নিয়ম অনুসরণ করে তালাকের অনুষ্ঠানগুলো অনুষ্ঠিত হবে এবং এক্ষেত্রে কোন কোন শর্ত পূরণ করতে হবে তা এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাছাড়া আপনাদের ভেতরে যারা স্ত্রী কর্তৃক তালাকের হাদিস সম্পর্কিত তথ্য জানতে চান তারা অবশ্যই এই পোস্ট পড়লে এটার বিশেষ হাদিস জেনে নিতে পারবেন।
সামাজিক রীতিনীতি এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যে বিবাহ একটি প্রাচীনতম অনুষ্ঠান। বিয়ের মাধ্যমে দুইটি অপরিচিত পরিবার অথবা পরিচিত পরিবার একত্রিত হওয়ার সুযোগ পায় এবং একজন নর এবং একজন নারী একত্রে বসবাসের অনুমতি পাই। দাম্পত্য জীবন থেকে শুরু করে বাচ্চা উৎপাদন এবং সেই পরিবারকে কেন্দ্র করে দুইটি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আন্তরিকতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি খুব সুন্দর একটি সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একে অন্যের মধ্যে যেমন আত্মীয়তার সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় তেমনি ভাবে সমাজে এর মাধ্যমে অনেক ভালো ভালো কাজ সম্পাদন হয়ে থাকে। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানের পর বিভিন্ন ধরনের অসংগতির কারণে হয়তো কেউ এই সংসার টিকে রাখতে পারেনা এবং তখন নিয়ম অনুসরণ করে তালাকের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।
আমাদের সমাজে বিভিন্ন অসঙ্গতদের কারণে অথবা স্বামীর সমস্যার কারণে অথবা স্ত্রী সমস্যার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের মত ঘটনা ঘটে থাকে। প্রকৃতপক্ষে একটি সংসার জুড়ে দেওয়ার মাধ্যমে সেখানে অনেকগুলো মানুষ একত্রিত হওয়ার সুযোগ পায় এবং সেখানে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার মাধ্যমে একটি এলাকার সাথে আরেকটি এলাকার সম্পর্ক গুলো মধুর হতে থাকে। কিন্তু যখন তালাকের মতো বিষয়গুলো ঘটে থাকে তখন দুইটি পরিবার একে অন্য শত্রু হয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে এগুলো অনেক বড় বড় বিষয় পর্যন্ত গড়িয়ে থাকে।
তবে স্বামীর অসঙ্গতির কারণে কোন স্ত্রী যদি স্বামীকে তালাক প্রদান করতে চাই এবং স্বামীর সংসার করতে যদি একজন স্ত্রীর সম্ভব না হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে কোন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে তা আজকের এই পোস্ট থেকে অনুসরণ করবেন।
স্ত্রীর যদি ঘর সংসার করতে খুবই অসুবিধা হয় অথবা স্বামীর দোষ গুন গুলো যদি বিচার করে বুঝতে পারে এখানে ঘর-সংসার করা আর সম্ভব নয় তাহলে সেই স্বামীকে পরিত্যাগ করা যাবে। প্রকৃতপক্ষে একজন মানুষের জীবনের ওপরে যদি কোন বিষয় উঠে যায় তাহলে তার সেখানে জীবন নির্ভর করা খুবই কষ্টের হয়ে যায়। তবে যে কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যদি একজন স্ত্রী স্বামীর সংসার করতে না পারে অথবা জীবন যদি হুমকিস্বরুপ হয়ে যায় তাহলে দুইটি উপায়ে তালাক প্রদান করতে পারবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী কোর্টের সহায়তা গ্রহণ করে তালাকের নোটিশ স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারবে। আবার চাইলে কাজী অফিসের তালাক নিবন্ধন এর মাধ্যমে এটা করতে পারবেন।
তাই কোন স্ত্রী যখন স্বামীকে তালাক দিবে তখন তাকে অবশ্যই একজন উকিলের সহায়তা গ্রহণ করতে হবে এবং তিনি যে তাকে স্বইচ্ছাই তালাক প্রদান করতে রাজি আছেন এ বিষয়গুলো উল্লেখ সহ তালাকের নোটিশ ডাকযোগে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। স্বামী যদি সেই তালাকের কাগজপত্র ভালোমতো দেখে নাই এবং বুঝতে পারে এই তালাক প্রদান করার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে এবং তিনি যদি স্বইচ্ছায় এই তালাক গ্রহণ করে তাহলে তালাক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে এক্ষেত্রে স্বামীর যদি দেনমোহর পরিশোধ করতে বাকি থাকে তাহলে সেই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে নয়তোবা সেটা কোর্ট কাছারি পর্যন্ত গড়াবে।
আর যদি উভয় পরিবারের সমঝোতার মাধ্যমে এগুলো করতে চান তাহলে ছেলের পক্ষ কে এবং মেয়ের পক্ষে উপস্থিত থাকতে হবে এবং সাক্ষী সাবুদ উপস্থিত থেকে সেখানে তালাক রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তালাক রেজিস্ট্রেশন করার সময়ে অবশ্যই আপনাদেরকে প্রদান করতে হবে। যদি দেনমোহর পরিশোধ করার বিষয়ে কোনো জটিলতা থেকে থাকে তাহলে স্বামীর থেকে সেই দেনমোহর আপনারা গ্রহণ করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে যদি মনে করেন কিছুটা সময় দিয়ে স্বামীকে টাকা পরিশোধ করার সুযোগ দিবেন তাহলে তাও করতে পারেন।
তাছাড়া আপনারা যারা স্ত্রী কর্তৃক তালাক দেওয়ার ব্যাপারে হাদিস সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাচ্ছিলেন তারা আজকের এই পোস্ট থেকে এই তথ্যগুলো জেনে নিবেন। আশা করি যে স্ত্রী কর্তৃক তালাক দেওয়ার বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আপনারা এখান থেকে বুঝতে পারলেন।
Leave a Reply