আজও আপনাদের একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আরো অন্যান্য ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আমরা এই ওয়েবসাইটে আলোচনা করবো। আজকে ভাব সম্প্রসারণ এ আলোচনা করা হবে সেটি বাংলা ব্যাকরণ এর গুরুত্বপূর্ণ ভাব সম্প্রসারণ। বিশেষ করে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ,নবম, দশম শ্রেণীর পর্যন্ত এই ভাব-সম্প্রসারণ বিভিন্ন পরীক্ষায় এসে থাকে। আপনারা আমাদের এই পেজে ভাব-সম্প্রসারণ লিখে সার্চ দিলেই বিস্তারিত পেয়ে যাবেন। যা আপনাদের মূল বইয়ের সাথে এই ভাব সম্প্রসারণ অনেক উপকার করবে। সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে। চলুন আমরা আমাদের আজকের ভাব সম্প্রসারণ এর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি।
ভাব সম্প্রসারণ:
সবলের পরিচয় আত্মপ্রসারে, আর দুর্বলের স্বস্তি আত্মগোপনে।
মূলভাব: সবল ও দুর্বল এর অবস্থান ভিন্ন, তাই তাদের জীবনাচরণ ও প্রবণতাও ভিন্ন। তবে সবল অবশ্যই শ্রেয়তর অবস্থানে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব: সবল ও দুর্বল মিলেই সমাজ গঠিত। শুধু মানব সমাজ নয়, প্রাণিজগতের সর্বত্র সবল ও দুর্বল এর সম্মিলন লক্ষনীয়। এই কারণে দুর্বল সেখানে কখনো কখনো সবলের খাদ্য রূপে পরিগণিত। কিন্তু মানব সমাজ নানা বিধি-ব্যবস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ইচ্ছে করলেই সবল-দুর্বল কে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করতে পারে না। কিন্তু আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রবণতা মানুষের জন্মগত। তার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হলো অন্যদের মধ্যে নিজেকে বিস্তৃত বা প্রতিষ্ঠিত করতে চাওয়া। কখনো কখনো এই প্রবৃত্তি মানুষকে সর্বগ্রাসী করে তোলে।
আধিপত্য কায়েমের জন্য মানুষের প্রয়োজন হয় শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক সঙ্গতি। এ সংগতি বা সক্ষমতার বিষয়টি আজকাল সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও ব্যাপ্ত হয়েছে। এসবের আনুকূল্য পেয়ে সমাজে সফল ব্যক্তি সকলকে নিজের করতলগত করে ফেলে। সর্বক্ষেত্রে আত্মপ্রসারের ফলে মানুষের লাভ করে আত্মপ্রসাদ। তাই মানব সমাজে আধিপত্য কায়েম এ সবলের প্রচেষ্টা যেখানে শুধু শারীরিক ও জৈবিক সেখানে মানুষের সফলতা প্রমাণের প্রচেষ্টা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অনেকটা রাজনৈতিকও বটে।
সমাজে মাথা তুলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ যখন মরিয়া হয়ে ওঠে তখন যারা দুর্বল তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও নিজস্ব অধিকার রক্ষায় দুর্বল হয়ে ওঠে। সামাজিক বিধি-বিধান সত্বেও সবলকে সবাই ভয় পায় সমীহ করে। আইন ও বিচার ব্যবস্থাও সবলকে নানাভাবে আনুকূল্য প্রদর্শন করে। এমতাবস্তায় দুর্বল ব্যক্তি আত্মপ্রতিষ্ঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। কখনো কখনো আত্মরক্ষাও দুরূহ হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে সে আত্মগোপন করে স্বস্তি পেতে চাই। আত্মপ্রসার নয়, তার ক্ষেত্রে নিভৃতচারী হয়ে কিংবা নিরীহ সেজে বেঁচে থাকাই বড় হয়ে দেখা দেয়। যদিও এই আত্মগোপনের মধ্যে পূর্বের কোন কিছু নেই, নেই মনুষ্যত্বের মর্যাদাও। তবু আমাদের সমাজে সকলের আত্ম প্রসারের দাপটে দুর্বলের জীবন আত্ম অবমাননায় অবনমিত হয়।
মন্তব্য: সবলের অন্যায় দাপটটি জনসমাজে মেনে নিয়েছে হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বীকৃত বিধি। এক্ষেত্রে ন্যায়-অন্যায় মানবতা ও মনুষ্যত্বের বিষয়টি আপেক্ষিক- ই থেকে যায়।
উপরোক্ত যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আলোচনা করা হল নিশ্চয়ই আপনাদের ভাল লেগেছে। আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটের যতটুকু পেরেছি সুন্দর সহজ এবং ভাবে উপস্থাপনা চেষ্টা করেছি। আপনারা বেশি বেশি করে এই ওয়েবসাইট পেজে ভিজিট করুন এবং অন্যান্যদের ভিজিট করতে বলুন। আমরা বাংলা ব্যাকরণ এর আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিশদ আকারে এই ওয়েবসাইট পেজে আলোচনা করব।
আমরা বারবারই আপনাদেরকে বলে আসছি আমাদের এই ওয়েবসাইট আপনাদের রেগুলার পাঠ্যপুস্তক এর পাশাপাশি সহায়ক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা বিভিন্ন অনলাইনের ওয়েবসাইটের পাশাপাশি অবশ্যই আপনাদের নির্ধারীত পাঠ্যপুস্তক পড়বেন। আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত থাকলে অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে জানাবেন। আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন।
Leave a Reply