তালাক দেওয়ার নিয়ম – কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম

আপনারা যারা তালাক দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করেছেন তাদেরকে সঠিক তথ্য এই পোস্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। যারা তালাক দিতে চান অথবা এ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে চান তারা অবশ্যই এই পোস্ট করবেন এবং এখানকার এই তথ্যগুলো অনুসরণ করলেই আপনাদের অনেক কাজে আসবে। সামাজিক স্বীকৃতি অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠান খুব সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে পারলেও পরবর্তীতে মানসিক সমস্যা হতে বা শারীরিক সমস্যার কারণে অথবা মতের মিল না পড়ার কারণে তালাক নামক বিষয়টি ঘটে থাকে।

পারিবারিক জীবনে অথবা দাম্পত্য জীবনে কেউ যদি অসুখী হয়ে থাকেন এবং সেখানে যদি সংসার করা সম্ভব না হয় তাহলে তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হওয়াটাই ভালো। যেহেতু বিয়ে হল আজীবনের একটি বিষয় সেহেতু আপনাদেরকে এখান থেকে সুখ খুঁজে বের করতে হবে এবং যখন আপনারা এখান থেকে সুখ পাবেন না অথবা অশান্তিতে থাকবেন তখন আপনাদের কাছে মনে হবে তালাক হলো একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে এই সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন।

আপনি যদি রাষ্ট্রীয় নিয়ম অনুসরণ করে তালাক দিতে চান তাহলে আমাদের দেশে দুই পদ্ধতি অনুসরণ করে এই তালাক দেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া আমাদের দেশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও এখানে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক এই কাজগুলো করা হয়ে থাকে না। ইসলামী শরিয়া মোতাবেক যদি তালাক দিতে হয় তাহলে প্রথম শর্ত হলো যে আপনি যখন বিয়ে করেছেন তখন অবশ্যই আপনাকে বিয়ের দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। ইসলামী শরীয়া মোতাবেক তালাক শব্দের অর্থ হলো সংশোধন করা এবং এই ক্ষেত্রে স্ত্রী অথবা স্বামী যদি সংশোধন না হয়ে থাকে তাহলে পর্যায়ক্রমে একমাস পর পর এই তালাকের ব্যবস্থা করতে হবে।

পরপর তিন মাসের পর যখন তালাক প্রদান করা হবে তখন যদি এই বিষয়গুলো সংশোধন না হয়ে থাকে তখন উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে বাইন তালাকের মাধ্যমে এই সম্পর্ক খারিজ হয়ে যাবে। আপনারা অনেকেই আছেন যারা এই সম্পর্কিত তথ্য জানতে চান বলে আমরা আজকে এ বিষয়ে জানিয়ে দিলাম এবং এছাড়াও আপনারা যখন রাষ্ট্রীয় নিয়ম অনুসরণ করে তালাকের বিষয়গুলো জানতে চাইবেন তখন আপনাদেরকে আমাদের ওয়েবসাইটের এই পোস্টটি অনুসরণ করতে হবে। নিচে আপনাদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে তালাকের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয় অথবা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো হয় তা জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম।

আপনি যদি কোর্টের মাধ্যমে তালাকের কাজগুলো সম্পন্ন করতে চান তাহলে স্বামী স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারবেন। দাম্পত্য জীবনে কলহ অথবা একাধিক সম্পর্ক থাকার কারণে সংসারে যখন অশান্তি নেমে আসবে অথবা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন যখন ক্রমাগতভাবে চলতে থাকবে তখন এই কাজগুলো আপনারা হয়তো মেনে নিতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে অনেক সময় স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে চলে যায় অথবা তার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আবার অনেকে আছে স্ত্রীর আচরণগত সমস্যার কারণে তাকে বাবার বাড়িতে রেখে আসে এবং পরবর্তীতে তালাক পাঠিয়ে দেয়। তাই কোর্টের মাধ্যমে তালাক প্রদান করতে হলে আপনাকে একটি উকিলের মাধ্যমে একটি তালাকনামা প্রস্তুত করতে হবে এবং নোটিশের মাধ্যমে ডাকযোগে তাদের বাসায় তালাকের একটি নোটিশ চলে যাবে।

এক্ষেত্রে ছেলে মেয়েকে অথবা মেয়ে ছেলেকে তালাকের নোটিশ পাঠাতে পারবে। এক্ষেত্রে তালাক যাকে পাঠানো হয়েছে সেই ব্যক্তি যদি এটা মেনে নেয় এবং দেনমোহর সংক্রান্ত ঝামেলা গুলো নিষ্পত্তি করতে চাই তাহলে খুব সুন্দর ভাবে তালাকের কাজগুলো সম্পাদন হয়ে যাবে। আর যদি দেনমোহর বিষয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হয় তাহলে সেগুলো কোর্টে মীমাংসার মাধ্যমে করা হবে। তবে স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেয় তাহলে দেনমোহরের বিষয়গুলো আগে থেকেই নিষ্পত্তি করে রাখতে হবে যাতে পরবর্তীতে আপনাদেরকে কোর্টে উপস্থিত না। তাছাড়া কাজেই অফিসের মাধ্যমে তালাকের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা যায় এবং এক্ষেত্রে উভয় পরিবারের উপস্থিতি থাকা লাগে।

বিয়ের অনুষ্ঠান কনের এলাকায় অনুষ্ঠিত হলেও তালাকের অনুষ্ঠান আপনার সুবিধামতো যে কোন এলাকার রেজিস্ট্রেশন করা কাজের মাধ্যমে করতে পারবেন। উভয়পক্ষ উপস্থিত থেকে এবং স্বাক্ষীর স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেনমোহরের যাবতীয় বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করার ভিত্তিতে এই তালাকের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এই তালাকের অনুষ্ঠানে অনেকেই অংশগ্রহণ করতে পারে এবং খুব সুন্দরভাবে মীমাংসার ভিত্তিতে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই তা নিষ্পত্তি করা যায়।

যে কাজের মাধ্যমে এই কাজগুলো করা হচ্ছে তিনি উভয় পক্ষের তথ্য তালাক নিবন্ধন করার বইয়ে লিপিবদ্ধ করবেন। তারপরে তালাকের যে কাগজ প্রস্তুত হবে সেটার তিন কপি কাগজ ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষ এবং মেয়ে পক্ষের স্থানীয় সরকার বিভাগে এটা প্রেরণ করবেন। এক্ষেত্রে কাজের খরচসহ আনুষঙ্গিক কিছু খরচ রয়েছে এবং সেগুলো আপনাদের করতে হবে।