রমজান মাসের জন্য আলাদা ভাবে যে নামাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো তারাবির নামাজ। তারাবির নামাজ এমন একটি নামাজ যেটা আরবি অন্য কোন মাসে আদায় করা যায় না। পুরো রমজান মাস জুড়ে মুসলমান ধর্মলম্বীর এশার ফরজ ও সুন্নত নামাজের পরে তারাবির নামাজ আদায় করে থাকেন। মূলত তারাবির নামাজ রোজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। তারাবির নামাজটি নারী পুরুষ প্রতিটি মুসলমানের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা অর্থাৎ এই নামাজ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ বাদ দিয়ে থাকেন তার জন্য রয়েছে গুনার বিধান।
কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি তারাবির নামাজ আদায় করতে চাই তাহলে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে পারবেন আবার একাও এই নামাজ পরতে পারবেন। তবে জামায়াতের সঙ্গে পড়া টা উওম। তাই রমজান মাস আসলেই
তারাবি নামাজ নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জেগে ওঠে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তারাবির নামাজ কি ৪ রাকাত করে পড়া যায়। যেহেতু রমজান মাস চলে এসেছে তাই তারাবির নামাজ সম্পর্কে সকল মুসলমানেরই জেনে রাখা উচিত। কারণ এই নামাজটি রমজান মাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নামাজ।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে প্রতিটি মুসলমান ব্যক্তিকে রোজার পাশাপাশি যে সকল ইবাদত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সে সকল ইবাদত পালন করতে হবে। কারণ রমজান মাস এমন একটি মাস যে মাসটি তে মহান আল্লাহতালা তার বান্দাদের ইবাদত ও দোয়া খুব সহজে কবুল করে নেন।কারণ এই মাসটি রহমতের মাস নাজাতের মাস মাগফিরাতের মাস আর রহমত নাজাত মাগফেরাত এগুলো পেতে হলে আমাদের রমজান মাস উপলক্ষে বেশি বেশি করে ইবাদত পালন করতে হবে। আর রমজান উপলক্ষে শুধু পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আর
রোজার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না আমাদেরকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ নামাজ তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে। তাই রমজান মাসে সঠিক ভাবে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে রোজা পালনের পাশাপাশি তারাবির নামাজ পালন করতে হবে। যেহেতু প্রতিটি ইবাদত মহান আল্লাহতালার সন্তুষ্ট লাভের আশায় আমরা করে থাকি আর তারাবির নামাজের ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়। মূলত তারাবির নামাজ অন্য নামাজের মতই কিন্তু সামান্য কিছু আলাদা।
অনেকেই আমরা সময়ের স্বল্পতার কারণে জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করতে পারি না। তাই অনেক সময় আমরা বাড়িতে একা একা তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়। তাই তারাবির নামাজ নিয়ে অনেকেরই অনেক প্রশ্ন তাই আপনারা জানতে চান বা জানতে আগ্রহী তারাবির নামাজ কি ৪ রাকাত করে পড়া যায়। ইসলামের বিধান অনুযায়ী ও বিভিন্ন আলেমদের মতামত অনুসারে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা। আবার দুই রাকাত নামাজ পড়া। এভাবে ৪ রাকাত নামাজ আদায় করে তারাবির নামাজ আদায় করা যাবে।
৪ রাকাত নামাজ আদায় করার পর বিশ্রামের সময় তাসবিহ তাহলিল পড়া, দোয়া-দরূদ ও জিকির আজকার করা। তারপর আবার দুই দুই রাকাত করে আলাদা আলাদা নিয়তে পুনরায় তারাবি নামাজ শুরু করা। অন্যদিকে ৪ রাকাত পর পর তারাবির নামাজের নির্দিষ্ট কিছু দোয়া রয়েছে। আপনি সেই দোয়া গুলো মুখস্থ করে তারাবির নামাজের ৪ রাকাত পরপর পড়বেন। তবে তারাবির নামাজের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী তা হল এই নামাজের নিয়ত যেটা আমরা করবো।
মহান আল্লাহতালার যে কোন ইবাদত পালন করার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম আছে যে নিয়ম অনুসরণ করে আমাদের সকল ইবাদত করতে হবে আর তারাবির নামাজের ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়। সাধারণ নফল ও সুন্নত সালাতের চেয়ে তারাবির নামাজ অধিকতর মর্যাদাবান। গুরুত্বের দিক থেকে তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ যা ওয়াজিবের কাছাকাছি। তাই এই নামাজের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অবহেলা ঠিক নয়।
তারাবির নামাজের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্রাম নিয়ে নামাজ আদায় করা তাই প্রতি চার রাকাত পর পর কোন মুসলমান ব্যক্তি বিশ্রাম নিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করে সেক্ষেত্রে নামাজের কোন ক্ষতি হবে না বরং এ বিষয়টি সম্পর্কে ইসলামে বলা হয়েছে তারাবির নামাজ বিশ্রাম নিয়ে পড়া যাবে। তারাবিহ নামাজের মূল উদ্দেশ্য হলো আরাম সহকারে নামাজ আদায় করা। অর্থাৎ নামাজ আদায় করতে গিয়ে যেন মুসল্লীদের কষ্ট না হয়। তাই আমরা সুবহে সাদিকের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় তারাবিহ নামাজ বিশ্রাম সহকারে আদায় করতে পারি।
Leave a Reply