রমজান মাস মূলত মুসলমানদের ইবাদত করার মাস। কারন এই মাসের রোজা মহান আল্লাহতালা প্রতিটি নর-নারীর ওপর ফরজ ইবাদত হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর রমজান মাসে একজন মুসলমান ব্যক্তিকে শুধু ফরজ রোজার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। তাই রমজান মাসে বিশেষ একটি নামাজের কথা বলা হয়েছে আর তা হলো তারাবির নামাজ। যে নামাজটি প্রতিটি মুসলমানকে আদায় করার কথা বলা হয়েছে। যদিও এই নামাজটি ফরজ নামাজ নয়। যেহেতু এই নামাজটি রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আদায় করেছেন তাই আমাদের জন্য এ নামাজটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা
অর্থাৎ নফল ওয়াজিব ইবাদতের চেয়েও উত্তম তাই আমাদের প্রত্যেককেই রমজান মাসে এই নামাজ পড়া উচিত। তাই রমজান মাসের যখন আমরা রোজা পালন করি এবং তারাবির নামাজ পরিনা অনেকেই এই তারাবির নামাজ প্রসঙ্গে অনেক ধরনের প্রশ্ন উত্তর জানতে চাই। অনেকেই আমরা জানতে আগ্রহী তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে। কারণ আমাদের মধ্যে অনেক মুসলমান ব্যক্তিকে দেখা যায় যারা রমজান মাসে রোজা পালন করে কিন্তু তারাবির নামাজ আদায় করে না।
তারাবির নামাজ রমজান মাসের অন্যতম ফজিলতম একটি ইবাদত। সাধারণত এশার সুন্নত ও ফরজ নামাজের পর তারাবিহ আদায় করা সুন্নত। রমজান মাসে প্রত্যেকটি নফল ইবাদতের সওয়াব ফরজের ইবাদতের সমান দেওয়া হয়। আর একটি ফরজের সওয়াব সত্তরটি ফরজের সমপরিমাণ বলে গণ্য করা হয়। এটি রমজান মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তাছাড়া মহান আল্লাহতালার কাছে ইবাদতের মধ্যে অধিক মর্যাদাবান ইবাদত হলো নামাজ। আর কোন ব্যক্তি যদি রমজানের অন্যতম নামাজ তারাবির নামাজ সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে
মহান আল্লাহতালার খুশির উদ্দেশ্যে আদায় করে থাকেন তাহলে মহান আল্লাহতালা সে বান্দার নামাজ কবুল করে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেন। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন রমজানে একটি নফল আমল করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। তাই রমজানে তারাবি নামাজের সওয়াবও এই হিসেবে দেওয়া হবে তারাবি নামাজ আদায় কারী কে ফরজের সওয়াব প্রদান করা হবে। প্রত্যেক মুমিনকে তারাবি নামাজ আদায়ে সবসময় যত্নবান হতে হবে। কারণ রমজানের অধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হল তারাবির নামাজ।
রমজানের ইবাদত পালন করার ক্ষেত্রে যেমন অধিক পরিমাণে সওয়াব রয়েছে, তেমনি কোন ব্যক্তি যদি রমজানের ইবাদত গুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখে তার থেকেও বেশি গুনার কথা রয়েছে ইসলামে। তাই আমরা অনেকে জানতে চাই রমজান মাসে তারাবির নামাজ না পড়লে বা এই নামাজ না পড়ার কারণে গুনাহ হবে। তাই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে তারাবী নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা জরুরি সুন্নত যা আদায় করা না হলে গুনাহ্ হবে।
যেহেতু রাসূল সাঃ তারাবির নামাজ আদায় করেছেন এবং তার সাহাবাদের এই তারাবির নামাজ পাঠ করার জন্য বিশেষ ভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই তার উম্মত হিসেবে আমাদের অবশ্যই তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে তা না হলে আমাদের গুনার অংশীদারিত্ব হতে হবে। তারাবির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। কারণ মাহে রমজান যেসব বৈশিষ্ট্যের জন্য মহিমান্বিত, তার মধ্যে অন্যতম হলো তারাবির নামাজ। রাসূলে (সা:) তারাবির নামাজ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আদায় করতেন বলে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
একজন মুসলমান ব্যক্তি যদি রমজান মাসের যেই ইবাদত করুক না কেন সেই ইবাদতের ক্ষেত্রে সে সত্তর গুণ বেশি সওয়াব পেয়ে থাকবেন। আর ইবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো নামাজ আর কোন ব্যক্তি যদি রমজান মাসে এশার নামাজের পরবর্তী তারাবির নামাজ নিয়ম অনুসরণ করে সারা মাস পালন করে থাকেন তাহলে সে ইহকাল ও পরকালে সেই নামাজের জন্য মুক্তি পেয়ে থাকবেন। কারণ এই নামাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে তারাবির নামাজ যে ব্যক্তি পড়েন মহান আল্লাহতালা তার উপর খুশি হয়ে অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়।
আর যারা আল্লাহর হুকুম মানে না রমজান উপলক্ষে তারাবির নামাজ পড়ে না রোজা পালন করে না তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তির বিধান। আর যারা আল্লাহর হুকুম মানে না তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অধিক পরিমাণে গুনা। যেই গুনার কারণে তাদেরকে যেতে হবে জাহান্নামে। আর জাহান্নাম এমন একটি স্থান যেখানে শাস্তি আর শাস্তি। তাই আমরা কোন অবস্থাতেই রমজান মাসের অধিক গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদত তারাবির নামাজ ছাড়বো না।
Leave a Reply