
ইসলাম সম্পর্কিত ইতিহাস ও সংস্কৃতি কেই ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বলা হয়ে থাকে। এখানে ইসলামের উদ্ভব ও গৌরব গাঁথা দিনগুলির কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। আরব দেশীয় ইতিহাস থেকে দেখা যায় যে ইসলামের পূর্ব মুহূর্তে সেখানকার ইতিহাস কেমন ছিল এবং পরবর্তীতে ইসলাম উদ্ভবের পর সেখানকার ইতিহাস কেমন হয়। অর্থাৎ আরো ভালো করে বলতে গেলে বলতে হয় যে ইসলামের উদ্ভবের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইসলাম সম্পর্কিত যে ইতিহাস অথবা ইসলামের গৌরবের ইতিহাস সেগুলিই হচ্ছে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি।
ইসলামের ইতিহাসের জনক আল মাসুদী
এই ইতিহাসের মধ্যে ইসলামের ইতিহাস ইসলামের সভ্যতা রাজনৈতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কৃতি ইত্যাদি স্থান পেয়ে থাকে। বেশিরভাগ ঐতিহাসিকগণ স্বীকার করেন যে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে মক্কায় ও মদিনায় ইসলামের ইতিহাসের সূত্রপাত হয়। মুসলমান জনগোষ্ঠী অর্থাৎ মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে ইসলামকে ইশা সুলাইমান দাউদ মুসা ইব্রাহিম নুহ এবং আদমের মত নবীদের মূল বিশ্বাসের ওপর প্রত্যাবর্তন।
তারা আরো বিশ্বাস করে যে আদি কাল থেকেই অর্থাৎ প্রথম মানব আদমের সময় থেকেই ইসলাম ধর্মের সূচনা ছিল। মুসলমানরা বিশ্বাস করে তাদের সর্বশেষ নবী মুহাম্মদের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে ঐশী বাণী প্রেরিত হয় এবং এটাকে তারা কোরআনের বাণী হিসেবে দেখে। মহানবীর প্রভাবশালী চাচা আবু তালিবের মৃত্যু হলে তিনি মক্কায় নিরাপত্তা বোধ না করায় সেখান থেকে তিনি মদিনায় হিজরত করেন। সেখানে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদের পর রাশিদুল খিলাফতের সময় মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকেই শুরু হয় ইসলামের গৌরবের ইতিহাস। অষ্টম শতাব্দীতে ইসলামের আরো নতুন নতুন দেশ বিজয় লাভ করে। পরবর্তীতে উমাইয়া ও আব্বাসীয় ফাতিমিও আইয়ুবীয় এদের দ্বারা আরো অনেক রাষ্ট্র ইসলামের পতাকা তলে আসে এবং এই রাষ্ট্রগুলি পরবর্তীতে অনেক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে।
আবার দেখা যায় সামানি সাম্রাজ্য গাজনি রাজ বংশ, ঘুড়ি সাম্রাজ্য এরা নিজেদের সাম্রাজ্যকে উল্লেখযোগ্য ভাবে উন্নতি লাভ করে। আবার ইসলামের স্বর্ণযুগের ইসলামের সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানের অনেক উন্নতি লাভ করে বলে জানা যায়। এই সময় অনেক জ্যোতির্বিদ গণিতবিদ চিকিৎসক দার্শনিক এদের জন্ম লাভ হয়। ১৩ শতাব্দীর গোড়ার দিকে দিল্লি সালতানাত ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর অংশ জয় করে এবং সেখানে তার রাজত্ব গড়ে তোলে। এভাবে পৃথিবীর অনেক দেশে ইসলামের জয় পতাকা উড়তে থাকে। এরপর চতুর্দশ শতাব্দীতে মঙ্গোলিয়াদের ধ্বংসাত্মক আক্রমণে ঐতিহ্যবাহী নগর রাষ্ট্রগুলি আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে।
কিন্তু সেই সময়ে রেনেসাঁ নবজাগরণের এবং পশ্চিম আফ্রিকায় মালি সাম্রাজ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার বাংলা সালতানাতের মত বড় বড় অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে। এ সময়ে সিসিলি ও ইতালীয় অঞ্চল থেকে মুসলিমরা বিতাড়িত হয় এবং দাসত্বে পরিণত হতে থাকে। তা সত্ত্বেও প্রারম্ভিক আধুনিক যুগে ইসলামের সেই শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি মহান শক্তিধর হয়ে উঠতে থাকে। উনবিংশ ও বিংশ শতকে ইসলামের বেশিরভাগ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি ইউরোপীয় বিপ্লবের বৈশ্বিক শক্তি এর প্রভাবে তাদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পরবর্তী দুই শতাব্দীর পরিক্রমায় দেখা যায় স্বাধীনতা অর্জন এবং আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে তাদের প্রচেষ্টা আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে। তেল পারশ্য উপসাগরের আরব উপরাষ্ট্রগুলিকে স্থিতিশীল করেছে এবং তাদেরকে সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে। এসব আরব উপরাষ্ট্রগুলিকে তেল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ্ব পরিচিতি লাভ করেছে।
তাই ইসলাম এর ইতিহাস এবং সমৃদ্ধির গল্প সংস্কৃতির গল্প সুদূর প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে তাদের উত্থান। ইসলামের গৌরব গাঁথা দিনগুলির কথা মনে করে আজও মানুষ ইসলামের শক্তিকে অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। এখন আমাদের দেখাতে হবে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জনক কে
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জনক: আল মাসুদী।
আলমাস উদ্দিন ছিলেন একজন বিখ্যাত ভূগোলবিদ। তার সবচাইতে জনপ্রিয় লেখা হচ্ছে কিতাব আল মুরাজ আল ধাহাব। তার এই বইটির কারণেই তাকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জনক হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। তার জন্ম ৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের বাগদাদ শহরে।
Leave a Reply