বাংলাদেশ দিনকে দিন যে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ যতই দিন যাচ্ছে জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ থেকে এক যুগ আগেও প্রযুক্তির নানাবিধ ব্যবহার সম্পর্কে এদেশের মানুষ এতোটা ওয়াকিবহাল ছিলো না। অতি সামান্য সময়ের ব্যবধানে আজ বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই কোন না কোনভাবে প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের জনগণ এখন প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহারে এতোটাই পটু যে, জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই এদেশের মানুষ এখন প্রযুক্তির ছোঁয়া চায়। সেই চিন্তাকে মাথায় রেখেই ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার জনগণের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ই-পাসপোর্টের৷ ই-পাসপোর্ট আগের এম.আর.পি বা “Machine Redeable Passport” এর চেয়ে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য।
বাংলাদেশ সরকার এটাও ভেবে রেখেছে যে, ভবিষ্যতে সকল পাসপোর্টই হবে ই-পাসপোর্ট। তাই ই-পাসপোর্ট এর সকল বিষয় সম্পর্কে জানা থাকলে খুব সহজেই আবেদন করে ই-পাসপোর্ট পাওয়া যেতে পারে। পাসপোর্ট আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছে দিন কে দিন। যে কোন কাজেই আমরা যদি বিদেশ ভ্রমণ করতে চাই তাহলে পাসপোর্ট এর কোন বিকল্প নেই।
পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হলে কয়েকটি ধাপ সতর্কতার সাথে পার করতে হয়। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমেই যেটা করতে হবে সেটা হলো আবেদন ফরম সংগ্রহ। আবেদন ফরম সংগ্রহ করার দুইটি পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমটি হলো, পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করা।
আর দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো, অনলাইনে সংগ্রহ করা। ফরমটি সংগ্রহ করে পূরণ করার পর সেটির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিকটস্থ কোন ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হয় বা ইদানিংকালে এই টাকা মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমেও জমা দেয়া যায়। টাকা জমা দেওয়া হলে, টাকা জমার রশিদ ও পূরণকৃত ফরম নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হয়।
এবার আসা যাক টাকার বিষয়ে। কোন ধরণের পাসপোর্ট এর জন্য কত টাকা লাগে এটা অনেকের কাছেই অজানা। টাকার পরিমাণ পাসপোর্টের পাতার সংখ্যা ও মেয়াদের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। টাকার পরিমাণ পাসপোর্ট ডেলিভারির সময়ের উপরও নির্ভরশীল। যেমন, ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্টের নিয়মিত ফি হলো ৪,০২৫ টাকা এবং এই পাসপোর্ট প্রদান করা হয় ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে।
ঠিক একই পাসপোর্ট এর জন্য গুণতে হবে ৬,৩২৫ টাকা যদি আবেদনকারী জরুরী ডেলিভারি সেবা চান, এই সেবার পাসপোর্ট প্রদান করা হয় ৭ কার্যদিবসে। আবার এই একই পাসপোর্ট এর জন্য ৮,৬২৫ টাকা লাগবে যদি আবেদনকারী অতি জরুরী সেবার জন্য আবেদন করেন এবং মাত্র দুই দিনে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করলে তা যদি নিয়মিত ডেলিভারিতে কোন আবেদনকারী নিতে চান তাহলে তার খরচ পরবে ৫,৭৫০ টাকা এবং ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। এই পাসপোর্টই যদি আবার জরুরী সেবায় কেউ পেতে চান তাহলে গুণতে হবে ৮,০৫০ টাকা এবং ডেলিভারি দেওয়া হবে ৭ কার্যদিবসের মাঝে। আবার অতি জরুরী সেবার ক্ষেত্রে এই পাসপোর্ট পেতে সময় লাগবে ২ কার্যদিবস এবং খরচ হবে ১০,৩৫০ টাকা।
বাংলাদেশ সরকার ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ও প্রদান করে থাকেন। এই পাসপোর্টগুলো ও নিয়মিত, জরুরী, অতি জরুরী এই তিন সময়ে সীমার মধ্যে প্রদান করা হয়। ৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট পেতে যথাক্রমে খরচ হবে ৬,৩২৫ টাকা, ৮,৩২৫ টাকা ও ১২,০৭৫ টাকা। দ্রুত ডেলিভারি পেতে হলে খরচ কিছুটা বেড়ে যাবে।
আবার ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী নিয়মিত, জরুরী ও অতি জরুরী পাসপোর্ট পেতে খরচ হবে ৮,০৫০ টাকা, ১০,৩৫০ টাকা এবং ১৩,৮০০ টাকা।
Leave a Reply