আমাদের সমাজে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের বসবাস রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ আছে অর্থনৈতিকভাবে ধনী এবং কেউ আছে গরিব। এই রকমের উভয় শ্রেণীর মানুষের আমাদের সমাজে আমরা একসঙ্গে বসবাস করে থাকি। ধনী ও গরীবের মাঝে আর্থিক সমন্বয় সাধন করতে মহান আল্লাহতালা যাকাতের বিধান দিয়েছেন।
যাকাত আদায় করলে মুসলিম সমাজের দুর্বল লোকেরাও আর্থিকভাবে সবল হয়ে উঠবে। আর এ কারণেই মহান আল্লাহতালা যাকাতের বিধান দিয়েছেন। এর ফলে ধনী এবং গরিবের মাঝে তৈরি হবে সেতু বা সেতুবন্ধ। মনে করা হয় এবং মনে করা হবে কেন অবশ্যই এতে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা এবং সম্প্রীতি বজায় থাকবে।
আর এজন্যই ইসলামের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম যাকাতকে ইসলামের সেতুবন্ধ হিসেবেই উল্লেখ করে বলেছেন যে, “যাকাত হল ইসলামের সেতুবন্ধ।”এই কারণে আমাদের সমাজের ওপর বা মুসলিম সমাজের উপর অবশ্যই যাকাতের একটি গুরুত্ব রয়েছে। ধনীরা যদি গরিবদেরকে যাকাত
দেয় তাহলে অর্থনীতির একটি সমতা বজায় রাখা যায়। আল্লাহতালা পবিত্র কুরআনে এজন্য অনেক স্থানে সালাতের সাথে সাথে অবশ্যই যাকাতের কথা বলেছেন। আর এই কারণে যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয় স্তম্ভ। যাকাতের সামাজিক নৈতিক অর্থনৈতিক ও ধর্মীয়ভাবে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এসব কারণেই মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের ওপর যাকাত অবশ্যই ফরজ করেছেন।
সামাজিক দত্তের দিকে দেখলে আমরা অবশ্যই দেখতে পারি যে, যাকাতসমাজ থেকে অস্থিতিশীলতা এবং বিশৃঙ্খলতা দূর করে পারস্পরিক একে অপরের সহিত সৌহার্দ্য স্থাপন করে। অর্থাৎ ধনীরা শুধু ধনী হবে এবং গরিবেরা দিন দিন গরীব হবে এই বিষয়টা ইসলামে হবে না। কারণ হলো প্রত্যেক মুসলমানের যেহেতু যাকাত দেওয়ার বিধান রয়েছে এবং তাদের অর্থনীতির ওপর স্থায়ী সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হয়েছে এজন্য অবশ্যই এ সকল অর্থ গরিব মুসলিমদের সবল করে। সামাজিক নিরাপত্তা দেয় এই ধনীদের যাকাত। এ কারণে বলা যায় যে এইরকম নিরাপত্তা দানের পাশাপাশি সমাজে মানুষের মানুষের মধ্যে বৈষম্য দূর করে এই যাকাত।
নৈতিকভাবে দেখলে আবার দেখা যায় যে যাকাত মানুষের মনে খোদা প্রিতি সৃষ্টি করে। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষের একটি ভক্তি বা মোহাম্মদ সেটি চলে আসে। এদিক থেকে দেখতে গেলেও অবশ্যই নৈতিকভাবে একটি গুরুত্ব রয়েছে এই যাকাতের। পবিত্র এবং উন্নত দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে মানুষের মাঝে এই যাকাত।
যাকাত অফিসার রোধ করতে শেখায় সর্বোপরি যাকাত মানুষের আত্মিক প্রশান্তি নৈতিক উন্নতি সম্পদের পবিত্রতা এবং পরিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে বলে মনে করা হয়। আবার যদি আমরা অর্থনৈতিক গুরুত্ব দিকে দেখি তাহলেও যাকাতের অবশ্যই এই গুরুত্বটি রয়েছে। কারণ ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার উৎস গুলোর মধ্যে অবশ্যই যাকাত হল অন্যতম। এর উপর ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং জনকল্যাণমুখী প্রকল্পসমূহের সাফল্য নির্ভরশীল।
আর এই যাকাতের ফলে সম্পদের প্রবাহ গতিশীল হয় ধনীর সম্পদ পুঞ্জিভূত না হয়ে দরিদ্র লোকদের মধ্যেও এই সম্পদ বিতরণ হয় ফলে তাদের অর্থনীতি ও অনেক চাঙ্গা হয়। এই কারণে দেখা যায় যে যাকাতের ফলে রাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল হতে পারে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং বেকারত্ব হ্রাস পেতে পারে। বেড়ে যেতে পারে মাথাপিছু আয় আর এই কারণেই রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভীত মজবুত এবং শক্তিশালী হয় বলে মনে করা হয়। ধর্মীয় দিক থেকে আমরা দেখলে দেখতে পারি যে কোন মুসলমান যাকাত না দিলে শেয়ার পরিপূর্ণ মুসলমান থাকতে পারবে না এই কারণে আল্লাহ তা’আলা বলেন যে যারা যাকাত দেয় না এবং তারা পরকালে ও অস্বীকারকারী।
তাহলে আপনারা যারা আজকে আমাদের এই পোস্টে এসেছেন যাকাত শব্দের অর্থ জেনে নিতে তারা অবশ্যই যাকাত বিষয়টি সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনে নিতে পারলেন। তাহলে এখন শুধু আপনাদের প্রয়োজন যাকাত শব্দের অর্থ কি সেটি জানা। তাহলে চলুন দেখি যে যাকাত শব্দের অর্থ কি। যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- পবিত্রতা, পরিশুদ্ধতা ও বৃদ্ধি পাওয়া। আর ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন মুসলিম নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে বসার আনতে তার সম্পদের শতকরা ২.৫০ হারে নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করাকেই যাকাত বলে।
Leave a Reply