কোন দেশে থেকে আরব বসন্তের সূচনা হয়

কোন দেশে থেকে আরব বসন্তের সূচনা হয়

আপনারা যারা আরব বসন্তের নাম শুনে থেকেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আজকে এখানে আলোচনা করা হবে কোন দেশ থেকে আরব বসন্তের সূচনা হয়। সেই সাথে কার মাধ্যমে এই আরব বসন্তের সূচনা হয় এবং কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে এটা শুরু হয়েছিল সেটা জানিয়ে দেব। মূলত এই আরব বসন্ত বা গণজাগরণের মধ্য দিয়ে চারটি দেশের সরকার পরিবর্তন হয়েছে এবং এই গণবিক্ষোভ পরিবর্তন সাধিত করেছে।

তাই আমরা যদি আরব বসন্ত সম্পর্কে জানতে চাই তাহলে এটা আমাদের জন্য জেনে নেওয়া প্রয়োজন কারণ দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের এডমিশন অথবা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন দেওয়া হয়। আমরা আপনাদের উদ্দেশ্যে এখানে আরব বসন্ত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলাম। তাই আরব বসন্ত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে এখানে ভিজিট করে আপনারা খুব ভালো কাজ করেছেন।

তবে সর্বপ্রথমে আপনাদেরকে এখানে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আরব বসন্ত তিউনিশিয়াই শুরু হয়েছিল। ২০১০ সালে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে গণজাগরণ হয়ে থাকে সেই গণজাগরণের নাম সাংবাদিকেরা দিয়েছিল আরব বসন্ত। একটি নির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আরব বসন্ত শুরু হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন ঘটে। মূলত গণতন্ত্রের নামে যে ধরনের অবিচার এবং শোষণ চালানো হয়েছিল সেটারই প্রতিবাদ স্বরূপ এটা ঘটে থাকে।

আরব বসন্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা এবং সাম্প্রতিক সময় ঘটে যাওয়াই ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের বিষয়গুলো হয়ে থাকার কারণে এটা ইতিহাসের জায়গা করে নিয়েছে।২০১০ সালের ১৮ই ডিসেম্বর তিউনিশিয়ায় মোঃ বোয়াজিজি নামে এক ফল বিক্রেতার সঙ্গে পুলিশের দুর্নীতি এবং দুর্ব্যবহারের ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। সেই ফল বিক্রেতা কোন আশ্রয় না পেয়ে এবং তার ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ক্ষোভে এবং দুঃখে গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যা করে।

আর এই ঘটনার মধ্য দিয়েই সেখানে এক বিপ্লব শুরু হয়ে যায় এবং সরকারের যে গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটার প্রশ্ন ওঠে। আস্তে আস্তে ঘটনা অনেক দূরে এগিয়ে যায় এবং আরব বসন্তের মধ্য দিয়ে এ ঘটনা সূত্রপাত হয়। আরব বসন্তের কারণ ছিল জনতাত্ত্বিক সংগঠনমূলক পূরক এবং স্বেচ্ছাচারিতার জন্য। একটি দেশের সরকার গণতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করার পরিবর্তে কর্তৃতবাদী রাষ্ট্র হিসেবে এটা পরিচালনা করা হয় এবং দেশের ভেতরে চরম দরিদ্রতা দেখা দেয়।

সেই সাথে যে সকল বিষয় সংবিধানে আছে সেগুলো পালন না করে মানবাধিকার লংঘন করা হয় এবং মুদ্রাস্ফীতি ঘটনার পাশাপাশি বেকারত্ব, সাম্প্রদায়িকতার বিষয়গুলো উঠে আসে। ফলে পরবর্তীতে এই ধরনের আত্মহত্যার কারণে সাধারণ জনগণ গণতন্ত্র ঠিকঠাক মতো পরিচালনা করার জন্য বিপ্লব শুরু করে। মানবাধিকার বিষয়ে তারা সচেতন হয় এবং সেই সকল দাবি পূরণের লক্ষ্যে প্রত্যেকটি স্থানে এই আন্দোলন ব্যাপক সাড়া ফেলেন। সেই সাথে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীকে সরকারের আসনে বসানোর জন্য তারা চেষ্টা চালাতে থাকে। আর এই সকল বিষয় যদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হয় তাহলে শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে বলে তারা এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করে তোলে।

ফলে আইন অমান্য হওয়া থেকে শুরু করে বেসামরিক প্রতিরোধ দেখা দেয় এবং অনলাইনে সক্রিয়তার পাশাপাশি খাদ্যাভাব দেখা দেয়। পরবর্তীতে এই আন্দোলন তিউনেশিয়ার থেকে শুরু করে মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক এর পতন ঘটে এবং পরবর্তীতে লিবিয়ার মোঃ আল গাদ্দাফি জামানার অবসান ঘটে।

এভাবে আস্তে আস্তে সরকার পরিবর্তন হয়ে থাকে এবং ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হওয়ার জন্য এই ক্ষুদ্র ঘটনা পরবর্তীতে বিশাল গণজাগরণের সৃষ্টি করে। তাই উপরের আলোচনার ভিত্তিতে আমরা এটা জানতে পারলাম যে ২০১০ সালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরব বসন্ত সূচনা তিউনিসিয়াতে শুরু হয়েছিল। আরব বসন্ত সম্পর্কে আরো যদি কিছু জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের কমেন্ট সেকশনে আপনার মূল্যবান প্রশ্ন লিখে জানিয়ে দিন।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*