আশুরার দিনের আমল ও ফজিলত

আশুরার দিনের আমল ও ফজিলত

আপনারা যারা আশুরার দিনের আমল এবং ফজিলত সম্পর্কে জানতে এসেছেন তাদেরকে এই পোষ্টের মাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রদান করব। তাছাড়া আশুরার দিন নিয়ে আমাদের ভেতরে যে ধরনের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে এই পোস্ট পড়লে আপনারা সঠিকভাবে বুঝতে পারবেন এবং আপনাদের ভেতরের ভুল ধারণা গুলো দূর হয়ে যাবে।

আমাদের দেশের অনেক মুসলমান আমাদের প্রিয় নবীর দৌহিত্র মৃত্যুবরণের কারণে এই দিনটি শোকের দিন হিসেবে পালন করে থাকেন এবং বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে এই দিনগুলো পার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়ে হালুয়া বানিয়ে আশেপাশের লোককে বিতরণ করে থাকেন তাহলে এটা সঠিক হবে না। তাই আশুরার দিন সম্পর্কে আমাদের সঠিক তথ্য আহরণ করতে হবে এবং সঠিক তথ্য ধারণ করার ক্ষেত্রে আমাদের ওয়েবসাইট আপনাদেরকে প্রত্যেকটি বিষয়ে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।

আমরা মহরম মাসে আশুরা পালন করে থাকি। আমরা জানি যে আরবি বছরের প্রথম মাসের নাম হলো মহররম এবং এই মহরম মাসের ১০ তারিখে আমরা আশুরা পালন করে থাকি। আশুরার পেছনে যে সকল ঘটনাগুলো রয়েছে সেগুলোর তাৎপর্য এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন সবকিছু না জেনে শুধু একটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই দিনটি পালন করে থাকবেন তখন আপনার ভুল হবে অথবা যখন একটি নির্দিষ্ট নিয়তে কাজটি করবেন তখন হয়তো আপনার এই কাজটি করা ঠিক হবে না। হিজরী বছরের মধ্যে মহরম প্রথম মাস হওয়ার কারণে এবং এই মাসের দশম তারিখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে আমরা চাইলে যে কেউ প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখতে পারি।

তবে যাই হোক মহরম মাসের এই ১০ তারিখে হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম এর পৃথিবীতে অবতরণ এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বারে বারে ঘটেছিল। এমনকি হযরত নূহ আলাইহিস সালামের নুহ (আ) যাত্রাও এই সময়ে অথবা মহরম মাসের দশ তারিখে আরম্ভ হয়েছিল এবং বন্যা প্লাবনের সমাপ্তি ঘটেছিল। এছাড়াও হযরত মুসা আলাইহি সালাম যখন সমুদ্র পথে যাত্রা শুরু করেন তখন সেই দিনটি ছিল আশুরা অর্থাৎ মহরম মাসের ১০ তারিখ।

এছাড়া আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাঃ মহরমের ১০ তারিখে কিয়ামত সংঘটিত হবে বলে এরকম ধারণা প্রদান করেছেন। তাই দিনটিতে যদি কেয়ামত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সকলকে শান্তশিষ্ট থাকতে হবে এবং রোজা পালন করতে হবে।

আমরা এ সকল ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট না জানার কারণে শুধু ফোরাত নদীর তীলে কারবালার প্রান্তরে হযরত হুসাইন (রা) শাহাদাত বরণকে কেন্দ্র করে দিন হিসেবে পালন করে থাকি। উপরের যেহেতু বিস্তারিত আলোচনা আপনারা জানতে পারলেন সেহেতু বুঝতে পারছেন এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম এবং এই শোকাবহ দিনের পাশাপাশি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আশুরার দিনে ঘটেছে। তাই শুধু সেই দিন থেকে কেন্দ্র করে আপনারা যে শোকের মাতম তুলেন অথবা হালুয়া তৈরি করে আশেপাশের সকলকে বিতরণ করেন বিষয়টি এই ক্ষেত্রে পালন করলে তা হবে না। উপরের উল্লেখিত ঘটনার বিষয়গুলোকে তাৎপর্যপূর্ণতার সঙ্গে এই বিশেষ দিনে রোজা রাখতে পারেন।

ইসলামী ধর্ম অনুসরণ করে এই বিশেষ দিনগুলোতে আপনারা যে সকল আমল করবেন সেগুলো খুবই তাড়াতাড়ি গ্রহণ করা হবে এবং দোয়া করলে সেটা অবশ্যই কবুল করবেন। তাই নিয়ম অনুসরণ করে আপনি যদি মহরম মাসের প্রথম তারিখ থেকে দশম তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখতে পারেন তাহলে খুবই ভালো। আর যদি তা না পারেন তাহলে নয়, দশ এবং ১১ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে এটা যদি করা আপনাদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব না হয় তাহলে অন্ততপক্ষে নয় দশ অথবা দশ এগারো তারিখে রোজা রাখতে পারেন।

আপনারা যদি 10 মহরমের রোজাটি রাখেন তাহলে সেটা সুন্নত পালন করা হবে এবং অন্যান্য দিনের রোজাগুলো নফল হিসেবে ধরা হবে। এই বিশেষ দিনটি অনেক ফজিলত পূর্ণ হওয়ার কারণে অবশ্যই আপনারা দিনটি পালন করার জন্য সচেষ্ট ভূমিকা পালন করবেন।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*