বাচ্চা হওয়ার আমল কি কি

প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে বিবাহ করার পর বাচ্চা একটি খুবই সুন্দর নেয়ামত এবং মহান আল্লাহ পাক এই নিয়ামত প্রদান করার মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও সুশৃঙ্খল করতে সাহায্য করেন। বাস্তবিক জীবনে যারা কোন নিয়ম মেনে চলতে পারেন না তারা বিয়ের পর একটা নিয়মের মধ্যে চলে আসেন এবং সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণ করার পর তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় এবং সঠিক পথে সন্তানদেরকে মানুষ করার চিন্তাই একজন পিতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গুলো পালন করে থাকেন।

তাছাড়া আপনি যখন সামাজিক এবং ধর্মীয় স্বীকৃতি অনুযায়ী বিবাহ করেছেন তখন সেই বিবাহ থেকে যখন সন্তান উৎপাদন হবে তখন অবশ্যই আপনার জন্য সেটা আনন্দদায়ক একটা ঘটনা হবে। তাছাড়া পৃথিবীর এই বুকে আপনি যখন সন্তানের চিহ্ন রেখে যেতে পারবেন তখন তা আপনার জন্য বরকতময় হবে এবং তাদের ইবাদতের মধ্য দিয়ে আপনি পূর্ণবান হতে পারবেন। তাই সন্তান একটি অশেষ নিয়ামত হওয়ার জন্য যাদের বাচ্চা হচ্ছে না তারা বাচ্চা হওয়ার জন্য যে সকল আমল করবেন তাদেরকে এই পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো।

আমাদের আশেপাশে অনেকেই আছেন যারা নিঃসন্তান এবং তাদের অনেক টাকা-পয়সা থাকলেও মনের দিক থেকে তারা হয়তো শান্তিতে থাকতে পারেন না। সাধারণত গরীবের ঘরে সন্তানদের হাসিখুশি দেখে অনেক সময় নিঃসন্তান দম্পতিরা কষ্ট পেয়ে থাকেন অথবা অনেক সময় হিংসা করে থাকেন। এক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক এমন ব্যবস্থা করেছেন যাতে করে তিনি সর্ব ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য যে কোন ব্যক্তিকে সন্তান চাইলেই প্রদান করতে পারেন। আল্লাহপাকের কাছে যদি আপনি হাত তুলে খাস দিলে দোয়া করতে পারেন এবং সেই দোয়া যদি কবুল হয় তাহলে দেখা যাবে যে আপনার এই দুয়ার ভিত্তিতে সন্তান জন্মগ্রহণ করতে পারছে।

তাই সন্তান এ পৃথিবীর বুকে আসবে এবং আপনাকে বাবা বলে ডাকার পাশাপাশি আপনার অনেক দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং বৃদ্ধ বয়সে আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে এই ধরনের চিন্তাভাবনা ছাড়া সন্তান পেতে যাচ্ছেন তারা অবশ্যই নিচের দেখানো আমল গুলো অনুসরণ করবেন। মহান আল্লাহপাক চাইলে আপনাদের এই আমলের ভিত্তিতে এবং দোয়ার ভিত্তিতে আপনার শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকার পরও আপনাকে সন্তান দান করতে পারেন। সে মহান আল্লাহ পাকের কাছে হাত তুলে কান্নাকাটি করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই এবং তাঁর কাছে দোয়া করার ভিত্তিতে আমরা আমাদের মনের ইচ্ছাগুলো পূরণ করার পথে এগিয়ে যেতে পারি।

মহান আল্লাহপাকের কাছে সন্তান চাই আপনারা যদি খাঁটি বান্দা হয়ে নিচের দেখা দোয়া গুলো করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে আল্লাহ পাক অবশ্যই আপনাদের এই দোয়া কবুল করবেন। আল্লাহ পাকের প্রিয় বান্দা হওয়ার পর আপনারা যদি এই দোয়াটি পাঠ করেন তাহলে আল্লাহ পাক আপনাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেবেন না এবং আপনাদের বুক শীতল করার জন্য এই পৃথিবীর বুকে সন্তান দান করবেন।

তাই দোয়াটি হলো-

رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

উচ্চারণ : রাব্বানা-হাবলানা-মিন্ আয্ওয়াজ্বিনা ওয়া যুররিয়্যা-তিনা-কুররাতা আ’ইয়ুন, ওয়া জা’আল্না-লিল মুত্তাকিনা ইমামা।

অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের জীবনসঙ্গীর পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান দান করুন এবং আমাদেরকে আল্লাহভীরুদের জন্যে আদর্শস্বরূপ দান করুন। (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭৪)

আপনারা যদি এই পৃথিবীর বুকে সন্তান জন্ম দান করার মধ্য দিয়ে আপনার সম্পত্তি সঠিকভাবে ভোগ করার এবং এই পৃথিবীর যাবতীয় ইচ্ছাগুলো পূরণ করার ইচ্ছা মনের ভেতরে রেখে থাকেন তাহলে বলবো যে এক্ষেত্রে আপনাদের বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। সন্তান পাওয়ার জন্য আপনারা যখন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করবেন তখন অবশ্যই নিজের দেখানো দোয়াটি পাঠ করবেন এবং এতে করে আপনারা হয়তো আল্লাহ পাকের কাছে আপনাদের মনোবাসনা পূরণ করার জন্য দোয়া করলে আল্লাহ পাক কবুল করে নিবেন।

সহবাসের দোয়াটি হলো-

بِسْمِ اللَّهِ ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ ، وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তানা, ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রাজাকতানা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার নামে শুরু করছি, আপনি আমাদের নিকট হতে শয়তানকে দূরে রাখুন। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, তা হতেও শয়তানকে দূরে রাখুন।’

আমাদের প্রিয় নবী ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম সন্তান লাভের জন্য মহান আল্লাহ পাকের কাছে নিজে দেখানো দোয়াটি পাঠ করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে তিনি সন্ধান পেয়ে গিয়েছিলেন। আল্লাহপাকের কাছে নিজেকে নেক পুত্র সন্তান পাওয়ার জন্য আপনারা নিজের দেখানো দোয়াটি পাঠ করতে পারেন।

দোয়াটি এই-

رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ

উচ্চারণ : রাব্বি হাবলি মিনাস সলেহিন।

অর্থ : হে আমার প্রভু! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত : ১০০)

এছাড়াও আপনারা বেশি বেশি করে ইস্তেকফার পাঠ করার মধ্য দিয়ে প্রাচুর্যবান হতে পারেন এবং সন্তানদের বাবা হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারেন। যারা দীর্ঘ সময় চেষ্টা করার পরেও সন্তান আনতে পারছেন না অথবা সন্তান লাভ করতে পারছেন না তারা বৃদ্ধ বয়সেও যদি সন্তান পেতে চান তাহলে নিচের দেখানোর দোয়াটি পাঠ করলে মহান আল্লাহ পাক আপনাদের দিকে মুখ তুলে চাইবেন।

رَبِّ لَا تَذَرْنِى فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْوَٰرِثِينَ

উচ্চারণ : রব্বি লা-তাযারনি ফারদাঁও ওয়া আন্তা খাইরুল্ ওয়ারিছিন।

অর্থ : হে আমার রব, আমাকে একা রেখো না। তুমি তো সর্বোত্তম উত্তরাধিকারী।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৮৯)।