সার্টিফিকেটে বয়স সংশোধন করার নিয়ম

সার্টিফিকেটে বয়স সংশোধন করার নিয়ম

আপনি কি সার্টিফিকেট বয়স সংশোধন করতে চাচ্ছেন? যদি আপনার এসএসসি এবং এইচএসসি সার্টিফিকেটে বয়স ভুল থেকে থাকে তাহলে আপনাদের এটা অতিসত্বর সংশোধন করে নিতে হবে। কারণ জীবনের বিভিন্ন পর্যায় এবং কর্মক্ষেত্রের সার্টিফিকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আর এখানে যদি আপনাদের বয়সের ভুল থাকে তাহলে তো একটি বড় সমস্যা হয়ে গেছে। তবে সমস্যা যখন আছে তার সমাধানও রয়েছে।

যাদের সার্টিফিকেটে বয়স এর ভুল রয়েছে তারা কিছুটা সময় অপেক্ষা করে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বয়স সংশোধন করে নিতে পারেন। আপনার সার্টিফিকেটে যদি বয়স কোনভাবে কম বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে এটা খুব তাড়াতাড়ি করে নিতে হবে এবং তার জন্য কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে। কারণ কর্মক্ষেত্রে অথবা চাকরি ক্ষেত্রে আপনার সার্টিফিকেটের বয়সে যদি ভুল থেকে থাকে তাহলে আপনার এই অজ্ঞতার কারণে আপনার সেই কাজের সুযোগ নাও হতে পারে।

তাই আমাদের ওয়েবসাইটে যে সকল নিয়মাবলী দেওয়া আছে সেগুলো আপনারা অনুসরণ করুন এবং খুব দ্রুত সময়ে সার্টিফিকেট সংশোধন করুন। সার্টিফিকেট সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনারা যদি কোন দালাল অথবা লোক মারফৎ এ কাজ করতে চান তাহলে আপনাদের অনেক খরচ পড়তে পারে এবং আপনাদের অনেক বেশি সময় অপেক্ষা করা লাগতে পারে।সাশ্রয়ী হতে পারবেন এবং কাজটি দ্রুত করতে পারবেন। তাই চলুন আমাদের ওয়েবসাইটের নিচের দিকে সার্টিফিকেট বয়স সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য বিস্তারিত ভাবে জেনে নিই এবং সেই অনুযায়ী সার্টিফিকেট সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি।

অনেক সময় দেখা যায় যে পরীক্ষার পর যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট উত্তোলন করার সময় কিছু ভুল পরিলক্ষিত হয়। এই ভুল পরিলক্ষিত হওয়ার ক্ষেত্রে নিজের নাম, পিতার নাম অথবা মাতার নাম, বয়সের ভুল হয়ে যেতে পারে। তাই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সঙ্গে অথবা জন্ম নিবন্ধন এর সঙ্গে যদি বয়সের মিল না থাকে তাহলে আপনারা বয়স সংশোধন করে নিতে পারবেন। এ প্রক্রিয়ার জন্য আপনাদের বেশ কিছু পদ্ধতি জানা লাগবে এবং সেগুলো আপনারা নিয়ম-শৃঙ্খলা অনুসারে করলে সার্টিফিকেট বয়স সংশোধন করতে পারবেন। অনেকে প্রশ্ন করেন যে সার্টিফিকেট এর বয়স সংশোধন করতে কত সময় লাগতে পারে? সার্টিফিকেট এর বয়স সংশোধন করতে সাধারণত তিন মাস সময় লাগে।

তবে আরো কিছু প্রক্রিয়া এবং আপনার দীর্ঘসূত্রতার কারণে সময় বেশি লেগে যেতে পারে। মোটামুটি চার থেকে পাঁচ মাস সময়ের ভেতরে আপনারা সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন যদি ঠিকঠাক মত কাজ করেন। তাই সার্টিফিকেট সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনারা অবশ্যই এই পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। কারণ এই পোষ্টের কোন গুরুত্বপূর্ণ অংশ যদি আপনারা স্কিপ করে চলে যান তাহলে সার্টিফিকেট সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনাদের ভুল হয়ে যাবে। তখন আবার ভুল সংশোধন করে প্রথম থেকে শুরু করা লাগতে পারে। তাই নিজের উপকারের জন্য আপনারা এই পোস্ট প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।

সার্টিফিকেটের বয়স সংশোধন অথবা অন্য কোনো তথ্য সংশোধন করার ক্ষেত্রে দুইটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চলে আসে। একটি হল এফিডেভিট করা এবং অন্যটি হলো পেপারে এড দেওয়া। তবে এ বিষয়গুলো যদি আপনি বুঝে না থাকেন তাহলে আপনার নিকটস্থ এবং পরিচিত কোন উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করুন। কারণ তারা এ বিষয়ে কাজ করে থাকে বলে এ বিষয়ে তাদের খুব ভালো জানাশোনা আছে। আপনি তাদের সঙ্গে দেখা করুন এবং তাদেরকে সার্টিফিকেটের নাম অথবা বয়স সংশোধন করবেন বলে এই তথ্যটি জানান।

তাহলে সে ক্ষেত্রে কি করা লাগতে পারে তিনি আপনাদেরকে ঠিকঠাকমতো বলে দেবেন। যদি শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট বয়স সংশোধন করা লাগে এবং তার বয়স যদি 18 বছরের উপর হয় তাহলে সে নিজেই করতে পারবে। আর শিক্ষার্থীর বয়স যদি 18 বছরের ওপরে না হয়ে থাকে তাহলে পিতা-মাতা এই এফিডেভিট বা নোটারি পাবলিক করে নেবেন। এই এফিডেভিট বা হলফনামা করতে আপনাদের কিছু টাকা খরচ হবে। এই খরচটা জায়গা বিশেষে এবং লোকো বিশেষে কমবেশি হয়ে যেতে পারে। তাই আপনারা সার্টিফিকেট বয়স সংশোধন করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে আপনাদের এফিডেভিট এর ঝামেলা মিটিয়ে নিতে হবে।

তারপরে আপ্নারা পত্রিকায় একটি এড দেওয়ার জন্য নিকটস্থ পত্রিকা অফিসে যাবেন। তাদের কেউ আপনারা সার্টিফিকেট এর বয়স সংক্রান্ত তথ্য পরিবর্তনের উদ্দেশ্যের কথাটি বলবেন। সে ক্ষেত্রে আপনাদের থেকে যে সকল তথ্য যা হবে সেগুলো দিলে তারা সেই তথ্য অনুযায়ী পত্রিকায় একটি এড দিয়ে দিবে। পরবর্তীতে যখন পত্রিকায় সেই অ্যাড প্রকাশ হবে তখন আপনারা সেই অ্যাড কাটিং করবেন। তবে পত্রিকা অফিসে গেলে আপনাদের যে সকল তথ্য দেওয়া লাগতে পারে সেগুলো আমরা এখন তুলে ধরার চেষ্টা করব।

পত্রিকায় এড দেয়ার সময় শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেটের নাম, তার পিতার নাম, তার মাতার নাম, শাখা, কোন সালে পরীক্ষায় পাশ করেছে, পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম কি, পরীক্ষার রোল নম্বর কত, কোন বোর্ড থেকে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং জন্ম তারিখ কত তা উল্লেখ করতে হবে। পত্রিকায় এড দিতে মোটামুটি 300 টাকার মত আপনাদের লাগতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই টাকা কম বেশি হতে পারে।

উপরে উল্লেখিত কাগজ অর্থাৎ নোটারি পাবলিকের কাগজ এবং পেপার কাটিং নিয়ে আপনি চলে যাবেন আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অর্থাৎ যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেছেন সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে সরাসরি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং উল্লেক্ষিত কাগজ গুলো দেখানোর পাশাপাশি শিক্ষাসংক্রান্ত শিক্ষার্থীর আরো অন্যান্য কাগজ দেখাতে হবে। পিতা-মাতার তথ্যের পরিবর্তন করা লাগলে পিতা-মাতার তথ্যের জন্য ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে হবে।

তাছাড়া শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য অর্থাৎ যেগুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো আপনারা দিয়ে দেবেন। যদিও অনেকে বলে থাকে যে ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট সংশোধন করা যায়, তারপরও প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন নাম্বার রয়েছে। সেই নাম্বারের মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের লগইন করে আপনার সার্টিফিকেটে বয়স সংশোধন তথ্য পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করে দিবেন। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকের দ্বারস্থ হলে তিনি আপনাদের স্কুলের কম্পিউটার অপারেটরের মাধ্যমে এ কাজগুলো করে দিবেন।

যখন আপনারা কম্পিউটারের মাধ্যমে সার্টিফিকেট এর বয়স সংশোধনের জন্য সকল ধরনের তথ্য প্রদান করছেন তখন আপনাদেরকে মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে হবে। সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণের পরে যখন কম্পিউটার অপারেটর সংশোধনের আবেদন পত্রটি সাবমিট করবেন তখন আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি এসএমএস চলে আসবে। এই এসএমএস এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার কি করতে হবে।

এসএমএসে আপনাকে একটি ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেয়া হবে। সেটি ব্যবহার করে আপনারা নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকের অফিসে চলে যাবেন। সেখানে যদি আপনাদের এসএসসি এবং এইচএসসি অর্থাৎ দুইটি সার্টিফিকেট এর বয়স সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাদের 558 টাকার দ্বিগুণ প্রদান করতে হবে। আর একটি সার্টিফিকেট হলে শুধু 558 টাকা পেমেন্ট করলেই হবে।

টাকা পেমেন্ট করার সময় যে পেমেন্ট স্লিপ আপনাকে প্রদান করা হবে সেটি সংরক্ষণ করতে ভুলবেন না। তারপরে আপ্নারা কিছুদিন অপেক্ষা করবেন এসএমএস এর জন্য। আপনাদের নাম্বারে এসএমএস দেওয়া হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা অনলাইনের মাধ্যমে একটি অ্যাকাউন্ট আপনার খোলা হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আপনার একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে যে একাউন্টে আপনি ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে প্রবেশ করতে পারবেন। আপনার সেই ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনারা এখন ঘরে বসেই আপনার একাউন্টে লগইন করে সার্টিফিকেট এর তথ্য সংশোধন কতদূর এগিয়েছে তা দেখতে পারবেন।

সে ক্ষেত্রে আপনারা যদি দেখতে পারেন যে আপনাদের সার্টিফিকেট এর বয়স সংশোধন করা হয়ে গেছে অনলাইনের মাধ্যমে তাহলে আপনারা সেই অনলাইনের কপি প্রিন্ট করে নিবেন। প্রিন্ট করে নেয়ার পরে আপনাদের হাতে যে অনলাইনের কপিটি রয়েছে সেটি অরিজিনাল কপি হিসেবে পাওয়ার জন্য আবার নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকের সেই একই নাম্বারে আবার টাকা প্রদান করতে হবে সমপরিমাণ হারে।

এবারের টাকা প্রদান করছেন আপনি জেলা শিক্ষা বোর্ডের অফিস থেকে সার্টিফিকেট সংশোধন এর অরিজিনাল কপি উত্তোলনের জন্য। তাই টাকা প্রদান করা হয়ে গেলে আপনারা সপ্তাহ খানেক অপেক্ষা করবেন। তারপরে আপনাদের ফোনে আরেকটি এসএমএস দিয়ে কনফার্মেশন জানিয়ে দেওয়া হবে। এই কনফার্মেশন এর মাধ্যমে আপনারা এবার চলে যাবেন জেলা শিক্ষা বোর্ডের অফিসে। সেখানে যাওয়ার সময় অবশ্যই আপনারা পত্রিকার কাটিং নোটারি পাবলিকের কাগজ ব্যাংকে যত টাকা পেমেন্ট করেছেন তার পেমেন্ট স্লিপ অনলাইন থেকে প্রিন্ট করা সার্টিফিকেটের কপি এবং অন্যান্য শিক্ষাগত যোগ্যতার যত কাগজপত্র রয়েছে এবং ভোটার আইডি কার্ডের ছবি নিয়ে উপস্থিত হবেন সেখানে।

তাদেরকে এই বিষয়ে অবহিত করলে তারা আপনার থেকে কিছুটা সময় নিয়ে আপনাকে নির্দিষ্ট দিনে যেতে বলবে। তারপরে আপ্নারা নির্দিষ্ট দিনে গিয়ে সেখান থেকে অরিজিনাল সঠিক সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে পারবেন। যদিও কর্ম প্রক্রিয়াটি অনেক দীর্ঘ তারপরও এটি যদি আপনারা নিজেরা করেন তাহলে অনেক ভালো হবে। আর যদি লক মাধ্যমে করাতে চান তাহলে আপনাদের দুই থেকে তিনগুণ টাকা খরচ বেশি হবে।

তারপরও আপনাকে বেশি সময় ধরে তারা ঘোরাতে পারে। তাই নিজের কাজ যদি নিজে করেন তাহলে দুর্নীতি করার মতো সুযোগ বা প্রশ্রয় কেউ পাবে না। তাই আপনারা উপরের সকল পদ্ধতি অনুসরণ করে অনলাইনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট এর বয়স সংশোধন করে নিতে পারেন। সকলেই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। সকলের কল্যাণ কামনা করে এই পোস্ট এখানে আমরা শেষ করছি।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*