
ভাব-সম্প্রসারণ: ধনের মানুষ অপেক্ষা মনের মানুষই বড়
অথবা ,ধরনের মানুষ মানুষ নয়, মনের মানুষই মানুষ
অথবা, বিত্ত হতে চিত্ত বড়।
মূলভাব: ধন্য সম্পদের অধিকারী হলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য প্রয়োজন মনের উদারতা ও বিশ্বাস। সকলের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকে যে মানুষ সেই প্রকৃত মানুষ। ধন সম্পদে গড়া মানুষ প্রকৃত অর্থে মানুষ নয়। বরং যার একটি উদার মন আছে সেই মানব সমাজের আদর্শ হিসেবে বিবেচ্য।
সম্প্রসারিত ভাব: ধন-সম্পদ থাকলেই মানুষ হওয়া যায় না। মানুষ হতে হলে পরোপকারী মন থাকতে হবে।পরোপকারী মন না থাকলে বিত্তবান মানুষ সাধারণ মানুষের কল্যাণে আসে না। তাই সাধারণ মানুষের ভালোবাসা থেকে সে বঞ্চিত হয়। মৃত্যুর সাথে সাথে তার ঐশ্বর্যের পরিসমাপ্তি ঘটে। কেউ তাকে মনে রাখে না কিন্তু ধন-সম্পদহীন মানুষ সবার কাছে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পেতে পারে যদি তার পরোপকারী মন থাকে।
একদিকে ঐশ্বর্য-আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে ত্যাগ- মহিমা, একদিকে আত্মসুখ অন্যদিকে মানবকল্যাণ- মানব জীবনের এই দুই দিগন্ত। এক দিগন্ত তাকে ডাকে আত্ম-পরিধির মধ্যে, অন্য দিগন্ত ডাকে বিশ্বের পরিধিহীনতার মধ্যে। বিত্ত এবং চিত্তের মধ্যে স্থাপন করতে হবে সুষম সংগতি। বিত্ত-বাসনা এবং চিত্ত-বিলাসের মধ্যে সংগতি স্থাপিত না হলে জীবনের সার্থকতা নেই।
আমাদের সমাজে অনেক বিত্তবান ব্যক্তি রয়েছে। কিন্তু এসব বিত্তবানের সমাদর ক্ষণস্থায়ী। তারা সমাজে সাময়িকভাবে সমাদৃত হলেও মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারে না। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এ পৃথিবী থেকে তাদের নাম চিরতরে বিলীন হয়ে যায় এমনকি আপনজনেরাও তাদের নাম স্মরণ করে না।
মূর্খ ব্যক্তি ধনী হলে সে শুধু মৌখিক সমাদরই পায়, সম্মান পায় না। তার মুর্খতা নিয়ে হাসি-তামাশা করে। কিন্তু যারা জ্ঞানী, প্রতিভাবান, চরিত্রবান এবং পবিত্র হৃদয়ের অধিকারী তাদের দেখলে মানুষের মাথা আপনিতেই নত হয়ে আসে। যুগ যুগ ধরে মানুষ তাদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে। তাই মৃত্যুর পরেও তারা পৃথিবীতে অমর হয়ে থাকেন।
অর্ধ মানব জীবনে যে সর্বনাশ ডেকে আনে হৃদয়বত্তাই মানুষকে সেই সর্বনাশ এর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া চিত্তের নির্দেশে বিত্তের সদ্ব্যবহার হলে মানুষ আর আত্ম-সুখে সর্বস্ব হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, “মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন, বিলাসের সামগ্ৰী ধন নহে।
মন্তব্য: ঐশ্বর্যশালী ব্যক্তিরা মানুষের ওপর দৃশ্যত প্রভাব ফেললেও তারা মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিতে পারে না। যদি তাদের পরোপকারী মন না থাকে পরোপকারী মন যাদের আছে তারাই প্রকৃত মানুষ।
উপরের আজকে যে ভাব সম্প্রসারণ নীতি নিয়ে আলোচনা করা হলো আমরা আশা করব আপনারা সেটি অবশ্যই বুঝতে পারবেন। কারণ আমরা প্রতিটি লেখাই সহজ এবং সুন্দর সাবলীল ভাষায় উপস্থাপনা করার চেষ্টা করেছি। আপনারা শিক্ষার ওপর নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটের সংযুক্ত থাকুন।
Leave a Reply