
বর্তমান যুগে পাসপোর্ট হলো আমাদের একটি অতি প্রয়োজনীয় বস্তু। বিভিন্ন কারণে কোন ব্যক্তির পাসপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে। কারও বিদেশে পড়লেখা করার জন্য পাসপোর্ট প্রয়োজন পরে, কেউবা আবার বিদেশে চাকুরি করে তাই তার পাসপোর্ট প্রয়োজন, আবার কেউ যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চায় তাও তার পাসপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে।
প্রয়োজন যাই হোক না কেন পাসপোর্ট ছাড়া নিজের দেশ ব্যতিত আর কোন দেশে ভ্রমণ করা সম্ভব না। পূর্বে অনেকেই অবৈধভাবে বিদেশে যেত এবং পাসপোর্ট ছাড়াই ভ্রমণ করত। কিন্তু, বিশ্বের সকল দেশের সরকারের চেষ্টায় আজ অবৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণ প্রায় শুন্যের কোটায়, তাই বর্তমান যুগে পাসপোর্ট এর প্রয়োজনীয়তা আরও বহুগুণ বেড়ে গেছে।
ইদানিং সময়ে যারা নিয়মিত বিদেশে যান না তারাও পাসপোর্ট করিয়ে রাখেন। কেননা, যেকোন মুহুর্তে কোন কারণে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন হলে যেন সহজেই বিদেশে যাওয়া যায়। অতীতে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করাও ছিলো একটি কষ্টসাধ্য কাজ। সকল জেলায় পাসপোর্ট অফিস ছিলো না, তাই পাসপোর্ট প্রত্যাশিদের যেতে হতো বিভাগীয় শহরগুলোতে শুধু মাত্র আবেদনের জন্য।
আর পাসপোর্ট করা বেশ ব্যয়বহুল ও ছিলো। কিন্তু সময়ের সাথে বাংলাদেশে আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগায় এখন আর পাসপোর্ট এর জন্য এতোটা কষ্ট করতে হয় না। যেকোন পাসপোর্ট আবেদনকারী কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করলেই, নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে পাসপোর্ট পেয়ে যেতে পারেন।
পাসপোর্ট এর জন্য আবেদনের প্রথম ধাপই হলো আবেদন ফরম সংগ্রহ করা। অতীতে আবেদন ফরম পূরণের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যাওয়া লাগতো কিন্তু এখন আর তাও লাগে না। নিজের ঘরে বসেই যে কেউ আবেদন ফরমটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে পূরণ করে ফেলতে পারেন। এই আবেদন ফরম PDF আকারে অনলাইনে পাওয়া যাবে।
কেউ যদি অনলাইন থেকে ডাউনলোড না করতে চান তাহলে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে এই ফরম সংগ্রহ করতে পারেন। যেহেতু এখন সকল জেলা শহরেই পাসপোর্ট অফিস রয়েছে তাই আর আগের মত কাউকে বেশি একটা ঝামেলা পোহাতে হয় না এই আবেদন ফরম সংগ্রহের ক্ষেত্রে।
আবেদন ফরম পূরণ করা হয়ে গেলে তা পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হয়। কিন্তু পূরণকৃত ফরম জমা দেওয়ার আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা চালানের মাধ্যমে যেকোন সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ব্যাংকে যেতে না চাইলে ঘরে বসে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমেও এই টাকা জমা দেওয়া যায়।
টাকা জমা দেওয়ার পর, টাকা জমাদানের রশিদ ও পূরণকৃত ফরমসহ প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিলে, পাসপোর্ট অফিস থেকে একটি নির্দিষ্ট তারিখে পাসপোর্ট অফিসে ছবি তোলা ও আংগুলের ছাপের জন্য ডাকা হয়। এরই মাঝে আবার শুরু হয়ে যায় পুলিশ ভ্যারিফিকেশন এর কাজ। অনেকেই যারা পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে থাকেন তারা এই পুলিশ ভ্যারিফিকেশন নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। কিন্তু চিন্তিত হওয়ার কিছু নাই সকল তথ্য প্রমাণ দিতে পারলে, একবারেই পুলিশ ভ্যারিফিকেশন হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন মেয়াদী ও পাতার সংখ্যার উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট এর ফি নির্ধারণ করেছেন। পাসপোর্ট এর ফি বিষয়ক সকল তথ্য দেওয়া আছে পাসপোর্ট এর ওয়েবসাইটে৷ পাসপোর্ট কত পাতার হবে এবং কতকাল তার মেয়াদ হবে এর ওপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট এর ফি সাধারণত ৪,০২০ থেকে ১৩,৮২৫ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আবেদনকারী কোন ধরণের পাসপোর্ট পেতে চান তার উপর ভিত্তি করে এই ফি প্রদান করতে হয় ও আবেদন ফরমে উল্লেখ করতে হয়।
এই বর্তমান সময়ে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করা খুবই সহজ একটা বিষয়। ঘরে বসেই যে কেউ এর আবেদন করতে পারেন। কিন্তু পাসপোর্ট অফিসে গেলে দালাল হতে সাবধান। দালালরা বিভিন্নভাবে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করতে চায় তাই দালাল হতে সাবধান হতে হবে।
Leave a Reply