তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি ওয়াজিব

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি ওয়াজিব

তারাবির নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। একজন মুসলমান ব্যক্তির জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত বিশেষ কিছু নামাজ রয়েছে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে আর সেই বিশেষ নামাজ গুলোর মধ্যে তারাবির নামাজ একটি। প্রতিটি মুসলমান ব্যক্তিকে সাধারণত রমজান মাসের চাঁদ দেখে তারাবির নামাজ শুরু করতে হয়। আর রমজানের রোজা করার পাশাপাশি আল্লাহতালার নির্দেশ মোতাবেক মুসলমানরা তারাবির নামাজ পালন করে থাকে রমজান মাসে।

রমজান মাস যেহেতু ইবাদতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মাস তাই এই মাসে শুধু রোজা পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না তারাবির নামাজ সহ নানান ধরনের ইবাদত রয়েছে সেই ইবাদত গুলো গুরুত্ব সহকারে পালন করতে হবে। কারণ রমজান মাসের ইবাদত মহান আল্লাহতালা অতি দ্রুত কবুল করে নেয়। রমজান মাস রহমতের মাস বান্দার সকল চাওয়া পাওয়াকে মহান আল্লাহতালা এই মাসটিতে প্রাধান্য দেয়। তাই আমরা তারাবির নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহতালার কাছে নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে উপস্থাপন করবো। তাই আমরা আজকে আপনাদের কে জানিয়ে দেবো তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি ওয়াজিব। আপনারা যারা তারাবির নামাজ আদায় করবেন এই বিষয়টি জেনে রাখাটা জরুরী।

আমরা মূলত অনেকেই তারাবির নামাজ আদায় করে থাকি কিন্তু তারাবির নামাজটি আসলে কি নামাজ সুন্নত নাকি ওয়াজিব এই বিষয়টি জানাটা অত্যন্ত জরুরী কারণ আমরা যখন তারাবির নামাজের জন্য নিয়ত করবো সে ক্ষেত্রে এই বিষয়টি আমাদের জেনে থাকতে হবে। প্রতিটি ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়ত করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আপনি মহান আল্লাহতালার উদ্দেশ্যে নামাজ বা রোজা পালন করলেন কিন্তু নিয়ত করলেন না তাহলে সেই নামাজ রোজা মহান আল্লাহতালার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

তাই যখন কোন মুসলিম তারাবি নামাজ আদায় করবেন তখন তার এই নামাজ টি সুন্নাত হিসেবে গণ্য করা হবে। এবং যখন আমরা নামাজের নিয়ত করব তখন এই নামাজের নিয়ত হিসেবে সুন্নত হবে। আমরা যখন যে ইবাদতই করি না কেন সেই ইবাদতের ক্ষেত্রে আমাদের জানতে হবে আসলে সেই ইবাদতটি ফরজ, সুন্নত, নাকি ওয়াজিব। আর রমজান মাসের তারাবির নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি সকলের জানা উচিত।

রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবি নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সা:) নিজে তারাবিহ নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা ও কোরআন শরিফ খতম করা অধিক সওয়াবের কাজ। তারাবির নামাজ মূলত নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম জামাতের সঙ্গে তিন দিন আদায় করেছেন। তিনি সারা মাস যদি জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করতেন তাহলে তারাবির নামাজ ফরজ হয়ে যেত।

তাই এটা যেন ফরজ না হয় তাই তিনি অল্প কয়দিন জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করেন। তারাবির নামাজ টি মূলত সুন্নত বা ওয়াজিব নয় এটা মূলত সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কোন মুসলমান ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে যদি তারাবির নামাজ না আদায় করে তাহলে সে ব্যক্তি গুনাগার হয়ে যাবে। কারন এই নামাজটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে আদায় করেছেন তাই তার উম্মত হিসেবে যদি আমরা এই নামাজটি পালন না করি সে ক্ষেত্রে আমাদের গুনাহ হতে হবে বা এই নামাজের জন্য মহান আল্লাহতালার কাছে হিসাব প্রদান করতে হবে।

ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী তারাবির নামাজ সুন্নতে মুআক্কাদাহ, আদায় না করলে নিশ্চিত ভাবে গুনাহ গার হতে হবে। তারাবির নামাজ রমজান মাসের জন্য অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ একটি ইবাদত। তারাবির নামাজ মুসলমানদের ওপর সারা বছরের মধ্যে শুধুই রমজান মাসের জন্যে সুন্নত বিধান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। যেহেতু রমজান মাস ছাড়া বছরের অন্য কোনো সময়ে তারাবির নামাজ আদায় করার সুযোগ নেই তাই এই ইবাদত হিসেবে এর গুরুত্ব অন্যান্য সুন্নত নামাজ অপেক্ষা বেশি।

রাসুলে করিম (সা:) তারাবির নামাজ কে অত্যন্ত গুরুত্বসহ আদায় করতেন বলে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে রোজা করবে আর তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বোঝা যায় তারাবির নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। তাই তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি ওয়াজিব এই বিষয়টি ভালো করে জেনে আমরা সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে তারাবির নামাজ আদায় করবো।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*