
আমাদের এই ওয়েবসাইট পেজে আপনাদেরকে স্বাগতম জানাই। আমরা প্রতিদিনই বাংলা ব্যাকরণ এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে আসছি। আজও আমরা তেমনি ভাব সম্প্রসারণ এর আরও একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
তার আগে আমরা ভাবসম্প্রসারণ সম্পর্কে কিছু কথা বলতে চাই। ভাব সম্প্রসারণ করতে হলে উদ্ধৃত অংশটি বা সারগর্ভ বাক্যটি মনোযোগ দিয়ে বারবার পড়ে তার প্রচ্ছন্ন ভাবটুকু বুঝে নিতে হবে। তারপর সেটা সুন্দর, সহজভাবে উপস্থাপন করতে হবে। আমরা অবশ্য আমাদের এই ওয়েবসাইটে সেভাবেই প্রত্যেকটি ভাব-সম্প্রসারণ উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।
যাতে প্রত্যেকটা শিক্ষার্থী সহজ ভাবেই বুঝতে পারে। পাশাপাশি অবশ্যই তাদেরকে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত বাংলা ব্যাকরণ এর বইটা পড়তে হবে। আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব সেটি অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপযোগী আজকের ভাব সম্প্রসারণ। তাহলে চলুন আজকের ভাব-সম্প্রসারণ যে নিয়ে আলোচনা করা যাক:
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা বিন্দু বিন্দু জল
গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল
মূলভাব: ক্ষুদ্র থেকে বৃহতের সৃষ্টি। পৃথিবীতে কোন কিছুই তুচ্ছ বা ফেলনা নয়। ক্ষুদ্র বলে কোন কিছুকে অবহেলা করা উচিত নয়। জগতের সকল বিশাল মহৎ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার সমন্বিত প্রয়াস। কেননা সমগ্র সৃষ্টি জগত গড়ে উঠেছে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণার সমন্বয়ে। ক্ষুদ্র কে তাই তুচ্ছ বা অবহেলা করা ঠিক নয়।
সম্প্রসারিত ভাব: পৃথিবীর কোন বস্তুকে ক্ষুদ্র বলে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। ছোট থেকেই বৃহতের এর সৃষ্টি। কারণ বহু ক্ষুদ্রের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় বৃহৎ। ছোট ছোট দুঃখ কথা থেকেই বৃহৎ অশান্তি অবলীলায় পরিবারকে অশান্ত করে তোলে। তাই জগত সংসারে ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র কোন বিষয় কে তুচ্ছ করা সমীচীন নয়। কেননা পৃথিবীতে কোন বস্তু তুচ্ছ বা হেয় নয়। প্রত্যেকটি বস্তুর কম বেশী গুরুত্ব আছে।
পৃথিবীর কোন বস্তুকে ক্ষুদ্র মনে করে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। কারণ বহু ক্ষুদ্রের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় বৃহৎ। আপাতদৃষ্টিতে আমরা সাধারণত একটি ক্ষুদ্র বালুকণা বা একবিন্দু পানির কোন গুরুত্ব দেইনা। কিন্তু আমাদের ভুললে চলবে না যে বহু বছর ধরে কোটি কোটি বালুকণা প্রতিমুহূর্তে সঞ্চিত হয়ে বিশাল ভূ-ভাগ গড়ে উঠেছে। ঠিক তেমনি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলবিন্দুর সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় সাগর বা মহাসাগর। কাজেই আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ক্ষুদ্র কে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। সেসব ক্ষুদ্র কে অবহেলা করে আমরা তার অপচয় করি। ফলে আমাদের জীবন সাধনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আমরা আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জ্ঞান, দয়া, মমতা, প্রচেষ্টা, ক্ষমতা প্রভৃতির সমন্বয়ে জীবনকে সাফল্যমন্ডিত করে তুলতে পারি।
ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন সৃষ্টি তত্ত্ব সম্পর্কে বলেছেন– “সরল এবং ছোট প্রাণী গুলো থেকে জটিল ও বড় প্রাণের উৎপত্তি ঘটেছে”। অর্থাৎ আদি পৃথিবীর এককোষী অ্যামিবা থেকেই ক্রমশ বহুকোষী প্রাণীর উৎপত্তি হয়েছে। একইভাবে ক্ষুদ্র দোষ-ত্রুটির সমারোহে পৃথিবীতে মানব জীবন হয়ে উঠতে পারে দুর্বিসহ। পক্ষান্তরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মহৎ কাজের সমারোহে পৃথিবিকে স্বর্গময় করে তোলা সম্ভব। তাই প্রতিটি ক্ষুদ্র এর মধ্যে নিহিত রয়েছে অপরিসীম তাৎপর্য।
আমরা অনেক সময় ছোটখাটো কথা বা উপদেশ কে মূল্য দেই না। সামান্য কথা হলেও তার জীবনের বৃহত্তর পরিসরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সামান্য বলে অনেক ‘সময়’ ও ‘অর্থ’- কে আমরা আমল দেই না। অথচ অবহেলায় ফেলে যাওয়া সামান্য ‘সময়’ বা ‘অর্থ’ একসাথে করলে জীবনের জন্য অনেক কিছুই করা সম্ভব হতো। তাই জীবন সঞ্চয় এর ক্ষেত্রে “ক্ষুদ্র” কথাটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে।
মন্তব্য: জীবনে বৃহৎ কিছুর মূল্য যেমন রয়েছে তেমনি ক্ষুদ্র কেউ অবহেলা করা সমীচীন নয়। মনে রাখতে হবে মানুষ ছোট থেকেই বড় হয়।
আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে যে ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো, এই ভাব সম্প্রসারণ এর মূল বিষয়টি হলো কোনো কিছুকেই তুচ্ছ এবং তাচ্ছিল্য বলে অবহেলা করলে হবে না। মহান আল্লাহতায়ালা প্রত্যেকটা জিনিসই কোনো-না-কোনো প্রয়োজনের তাগিদে সৃষ্টি করেছেন। ঠিক তেমনি পৃথিবীতে কোন বস্তুকে ক্ষুদ্র বলে অবজ্ঞা করা ঠিক হবে না, কারণ ক্ষুদ্রের মাধ্যমেই বৃহৎ কোন বিষয়ের সৃষ্টি হয়।
তো আজ এ পর্যন্তই। বন্ধুরা আপনারা বেশি বেশি করে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং শিক্ষার ওপর তথ্যমূলক বিষয়গুলো নিয়ে যে আলোচনা করা হয় সেটি আপনারা খুব সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন আমাদের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
Leave a Reply