আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই এখন হরমোন জাতীয় সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে একটি হলো থাইরয়েড। অনেকেই রয়েছেন যারা থাইরয়েড সমস্যাটিতে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন। তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি। আপনারা অনেকেই কমেন্টের মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয় সে সম্পর্কে। তাই আমরা আজকে শুধুমাত্র আপনাদের জন্য আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করতে যাচ্ছি থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয় সে সম্পর্কে কিছু তথ্য।
শরীরের প্রতিটি উপাদানের ঐ নির্দিষ্ট একটা মাত্রা থাকা প্রয়োজন। মানুষের শরীরের জন্য থাইরয়েড হরমোনেরও একটি নির্দিষ্ট মাত্রা থাকা জরুরী। নির্দিষ্ট মাত্রাতে প্রয়োজনের কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলে শরীরের উপর বিভিন্ন রকম বিরূপ প্রভাব দেখা দিতে পারে। কিছু খাদ্যাভাসার পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রা ঠিক রাখার মাধ্যমে থাইরয়েড সমস্যার উপশম হতে পারে আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া টিপস
বাইরের খাবার পরিহার করা:
থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই প্রথমেই আপনাকে বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড এক ধরনের কৃত্রিম খাবার যাতে চর্বি লবণ কার্বনেট সহ ক্ষতিকারক উপাদান বেশি থাকে সেই খাবারগুলো পরিহার করতে হবে। এই খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকার খাবার।নিয়মিত এগুলো খাওয়ার ফলে শরীরের অনেক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে তাই অবশ্যই আমাদেরকে খাবারগুলো থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
জীবন যাত্রার মান
অগোছালো জীবন যাপন পরিহার জীবনযাত্রা ঠিক করতে হবে। বর্তমানে আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষেরই এত এত শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে এটি। তাই এর জন্য আমাদের জীবনযাপন এর মান ভালো রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা আমাদের খুবই জরুরী। শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি কমাতে ও শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের বিকল্প আর কিছু নাই। আমাদের নিয়মিত সকাল সন্ধ্যা ব্যায়াম করা প্রয়োজন এতে করে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
খাবার চিবিয়ে খাওয়া
আমরা যখন খাবার খাই তখন খাওয়ার সময় মনোযোগ দিয়ে ভাল করে চিবিয়ে খাবার খাওয়া উচিত তা থাইরয়েড এবং মনের মধ্যে সংযোগ করে তোলে। তাই খাওয়ার সময় কখনো তাড়াহুড়ো না করে সময় নিয়ে ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে এটা শরীরের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে থাইরয়েড গ্রন্থি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে সেজন্য সময় নিয়ে খাবার চিবিয়ে খেলে তা বিপাকক্রিয়া বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
কাঁচা সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকা
থাইরয়েড নিয়ে কিছু গবেষকেরা বলেন যে কিছু শাকসবজি আছে যেমন বাঁধাকপি, ব্রকলি, ব্রেসেলস, স্প্রট, ফুলকপি ইত্যাদি এগুলো কাঁচা অবস্থায় খাওয়া মোটেই ঠিক নয়। এগুলো রান্না করে খাওয়াই উত্তম। আমরা অনেকেই এই সবজিগুলো কাঁচা খেয়ে থাকি তবে এগুলো কাঁচা খাওয়া খুবই ক্ষতিকারক। এগুলো কাঁচা খেলে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ ব্যাহত হয়ে থাকে এবং থাইরয়েড গ্রন্থের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে এই সবজিগুলো কাঁচা অবস্থায় বা সালাদ হিসেবে না খেয়ে রান্না করে খেতে হবে।
নারকেল তেল গরম না করে ব্যবহার করা
নারকেল তেল গরম না করে ব্যবহার করলে তা ওজন কমাতে এবং বিপাকীয় ক্রিয়া বাড়িয়ে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। তবে এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই ভালোভাবে জানিনা। নারকেল তেলে যে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতেও এই তেল অনেক কার্যকরী একটি তেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ভিটামিন বি
এছাড়াও থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ভিটামিন বি খুবই সহায়ক একটি ভূমিকা পালন করে থাকে। ভিটামিন বি ১২ হাইপোথা এর এডি জমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই যেগুলো খাবারে এই ভিটামিন বেশি থাকে যেমন ডিম মাছ মাংস দুধ বাদাম এগুলো প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে করে এগুলো শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি সরবরাহ করতে পারে।
আশা করি আপনারা যারা থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয় এ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন তারা আমাদের উপরে উক্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে অনেক কিছু জেনে নিতে পারবেন।
Leave a Reply