প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আজ আমরা বাংলা ব্যাকরণ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব। আজ আমরা যে ভাব-সম্প্রসারণ তিনি আলোচনা করব সেটি একাদশ, দ্বাদশ এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। আজকে যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি নিচে তুলে ধরা হলো:
পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে / মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে।
মূলভাব: পাপ ও পূণ্য পরস্পরের বিপরীতে যেমন অবস্থান নেয় তেমনি দুঃখ ও সুখ এবং পতন ও উত্থানও পরস্পরের বিপরীতে অবস্থান নেয়। মানুষকে এসব বৈপরীত্যের মাঝেই বেঁচে থাকার সার্থকতা খুঁজে নিতে হয়।
সম্প্রসারিত ভাব: আমাদের ভালো-মন্দ, পাপ-পুণ্য, সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতন সবই আছে। এসব নিয়েই আমাদের নিত্য দিনের পথচলা। জন্ম- মৃত্যু যেমন অমোঘ সত্য তেমনিই অমোঘ সত্য উত্থান-পতন, পাপ-পূণ্য, ভালো-মন্দ। এসব বৈপরীত্য নিয়েই জীবনকে মোকাবেলা করতে হয় আমাদের।
বেঁচে থাকার জন্য আমাদের তাই সংগ্রাম করতে হয় অনেক সমস্যা সংকটে দৃঢ় মনোবল দিয়ে মোকাবেলা করতে হয় আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে সবকিছু সমন্বয় সাধনের মধ্য দিয়ে জীবন চলার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, পৃথিবীতে নিরবচ্ছিন্ন সুখ বলে কিছুই নেই। দুঃখের দহনে সুখ গলে গলে পড়ে। তবুও জীবনের প্রতি বিশ্বাস হারানো যাবে না। দুঃখের ঘন কুয়াশার মধ্যে থেকেও আমাদের খুঁজে ফিরতে হবে সূর্যের আলো ঝলমলে সুখ নামক সোনার হরিণ টি।
মানুষের জীবনে চলার পথ মসৃণ নয় বরং তা কাঁটায় ভরা। প্রতিটি পদে পদে রয়েছে কষ্ট-দুঃখ, বাধা-বিপত্তি, সংঘর্ষ, সংঘাত। প্রতিটি পদক্ষেপ সংগ্রামের। মানুষের জীবনে বেদনা আছে, কষ্ট আছে, অপমান আছে, ব্যর্থতা আছে, পরাজয় আছে।
এসব জীবনের অঙ্গ এবং বৈশিষ্ট্য। এই সকল বিরোধী শক্তির সাথে অত্যন্ত সহনশীলতা এবং নিষ্ঠার সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হতে হয়। বাঁধাকে জয় করার মধ্যেই রয়েছে জীবনের তাৎপর্য। মানবজীবনের সার্থকতা লুকিয়ে থাকে বাধা জয়ের মধ্যে।
দুঃখ, কষ্ট, শোক, আঘাত মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তোলে। আগুনে পুড়ে সোনা যেমন খাঁটি হয়, তেমনি দুঃখ-দুর্দশার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ জীবনের সকল বাধাকে জয় করার শক্তি অর্জন করে। মানুষের জীবন মানেই সংগ্রামের ইতিহাস।
পৃথিবীতে যুগে যুগে যোগ্যতম প্রাণীগুলো টিকে থাকতে পেরেছে কিন্তু দুর্বল প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে সংগ্রামের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে। কেউ যদি জীবনে সফল একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তবে তাকে দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, অপমান, পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মনীষীদের জীবনী পাঠ করলে দেখা যায়, তারা কষ্ট, দুঃখ, সংগ্রাম, সংঘাতের মধ্য দিয়ে পথ চলেছেন। অনেক বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন।
কিন্তু তারা তাদের অটুট মনোবল এবং সাহসের মাধ্যমে সকল বাধাকে অতিক্রম করেছেন। সফলতার খাতায় নিজেদের নামকে লিপিবদ্ধ করেছেন। ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নামকে অঙ্কিত করেছেন এবং হয়েছেন অনুকরণীয় চরিত্র।
জীবনের গতি হারানো যাবেনা। প্রতিকূলতায় হতোদ্যম হলেই সর্বনাশ। সুখ- দুঃখ, ভালো- মন্দ, উত্থান-পতন সবকিছুতেই জীবনে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। দুঃখের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসার সংগ্রাম ই মানুষের জীবনের সাধনা।
মন্তব্য: ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতন কে জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিয়েই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সংগ্রাম করতে হবে মানুষকে। তা না করে আমরা যদি আমাদের সন্তানদের সবকিছু থেকে দূরে সরিয়ে রেখে ননীর পুতুল এর মত গড়ে তুলি তবে সে সমাজের বোঝায় পরিণত হবে।
উপরের যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আলোচনা করা হল শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সেটি পরীক্ষার কাজে লাগবে। গোটা বিশ্ব আজ ডিজিটাল যুগে পরিণত হয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের এই ওয়েবসাইটে শিক্ষা বিষয়ক ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান প্রদান করে থাকে। আপনারা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই মাক্স পরিধান করবেন করণা থেকে নিরাপদ থাকবেন। আগামী দিন অন্য কোন একটি বিষয় নিয়ে আবার আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে হাজির হবো সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
Leave a Reply