রচনা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

রচনা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

আপনারা যারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে রচনা খুঁজতেছেন তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এখানে আপনারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত পেয়ে যাবেন। আসলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা রচনা টি লিখতে গেলে অনেক কিছুই লিখতে হবে। কিন্তু সব কিছুই এখানে এভাবে লেখা সম্ভব হয়ে ওঠেনা তাই আমরা মূল বিষয়গুলো আলোচনা করব বাকিটা আপনারা নিজেরাই নিজেদের মতো করে লিখে নিবেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

ভূমিকা, মাতৃভাষা দিবসের পটভূমি, অমর একুশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও তাৎপর্য, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম আনন্দ উৎসব, বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সংস্কৃতির সেতুবন্ধন, বিশ্বের দেশে দেশে মাতৃভাষা চর্চা ও উপসংহার।

ভূমিকা: প্রত্যেক জাতির একটি নির্দিষ্ট ভাষা আছে। যার মাধ্যমে ঐই জাতি নিজেদের ভাব প্রকাশ করে থাকে। ভাব প্রকাশের মাধ্যম রূপে একটি জাতি সমন্বিতভাবে যে ভাষা ব্যবহার করে তাকে মাতৃভাষা বলে। মাতৃভাষার যে কোনো জাতির জন্য একটি অপরিহার্য প্রকাশ-মাধ্যম। বাংলার দামাল ছেলেরা তাজা রক্তের বিনিময়ে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ছিনিয়ে আনে আমাদের এই মাতৃভাষা । প্রতিষ্ঠা পায় বাংলা ভাষা ।

মাতৃভাষা দিবসের পটভূমি: বাংলা ভাষার ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এর নামই ২১শে ফেব্রুয়ারি। ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন, ” উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”। কিন্তু বাংলার জাগ্রত জনতা জিন্নাহর এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেন নি। ফলে ছাত্ররা ধর্মঘট পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই আন্দোলন সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি পরিষদ ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।

সরকার ছাত্রদের এ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে। ১৯৫২সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করা হয়। পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর বন্ধু বেয়নেট, লাঠিসোটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছাত্ররাও পুলিশের সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এর ফলে সালাম, বরকত, রফিক ,জব্বার সহ আরো অনেকে শহীদ হন। এ হত্যাকাণ্ডের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সমগ্র বাংলাদেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। ফলে বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে আতঙ্কিত সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

অমর একুশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও তাৎপর্য: বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আরো একটি ঐতিহাসিক গৌরবম-িত ও আনন্দঘন দিন। এই দিনে বাঙালি অর্জন করেছে তার প্রাণের সম্পদ একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা UNESCO প্যারিসে অনুষ্ঠিত ৩০তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ফলে পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষ এখন এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম আনন্দ উৎসব: মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পাওয়াই সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৯ সালের ২৭শে ডিসেম্বর উৎসবের ঘোষণা দেয়। ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে উৎসব পালিত হয়। দিনভর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা, আবৃতি নাচ, গান ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয় এই অনুষ্ঠানে।

বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন: একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে মর্যাদা লাভ করায় বাঙালি ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সারাদেশে বিভিন্ন স্তরের মানুষ ছুটে যায় শহীদ মিনারে। বিশ্ববাসী স্বীকৃতি দিয়েছে আমাদের মাতৃভাষাকে। জাতিসংঘের মহাসচিব এ দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কাছে বার্তা প্রেরণ করেন। এই দিবসটি পালনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী তাদের জাতিসত্তার প্রধান বিবেচ্য বিষয় মাতৃভাষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।

বিশ্বের দেশে দেশে মাতৃভাষা চর্চা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বিশ্বের প্রায় ১৮৮ টি দেশ প্রতি বছর পালন করে। মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ শ্রদ্ধা পৃথিবীর সকল দেশের বিদ্যমান। বিশ্ব ভাষা দিবসের প্রতিষ্ঠার ফলে এর গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে, এর ফলে সব দেশেই নিজস্ব ভাষার চর্চা শুরু হবে।

উপসংহার: একুশ আমাদের গর্ব অহংকার ও বেদনাদায়ক অধ্যায়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বাঙালির জাতীয় জীবনের এক শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ দিবস বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছে ভাষার জন্য জীবন দিয়ে বাঙালি জাতি এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। আজ তাই বাঙালি জাতির মাতার মাতৃভাষা এবং বিশ্বের অন্য ভাষার প্রতি জাতির দায়িত্বে শতগুণ বেড়ে গেল।

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ উপরে যে রচনা অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে আলোচনা করা হলো সেটি মূলত আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেছি আরো জানতে চাইলে আমাদের এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রচনাটি লেখা হলো তার পাশাপাশি বিভিন্ন বইয়ের সহযোগিতা নিতে পারেন তাহলে আপনারা আরও বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*