আপনারা যারা বিদ্যুৎ নিয়ে প্রবন্ধ রচনা খুজতেছেন তারা এখনই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আধুনিক সভ্য জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎহীন জনজীবন অতিষ্ঠ। বিদ্যুৎ আবিষ্কারের পূর্বে পৃথিবীর অবস্থা ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। বিদ্যুৎ আমাদের করেছে আলোকিত। হ্যাঁ শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে আমরা এর ওপরে প্রবন্ধ রচনা লিখব:
বর্তমান সভ্যতার বিদ্যুতের ভূমিকা
বা বিদ্যুৎ ও আধুনিক জীবন
ভূমিকা: সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের চরম উৎকর্ষের বিদ্যুতের ভূমিকা অপরিসীম। বিদ্যুতের অপরিমেয় শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানব জাতি সভ্যতার আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। মানুষের বর্তমান জীবন ব্যবস্থার এমন কোনো দিক নেই যেখানে বিদ্যুতের ছোঁয়া লাগেনি। ব্যবসা়-বাণিজ্যে, শিল্প-কলকারখানা, চিকিৎসা, কৃষি-সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্য এবং বিজ্ঞানের অবদান এর চালিকাশক্তি হিসেবে বিদ্যুৎ আজ মূল ভূমিকায় চলে এসেছে। এক কথায় বিদ্যুতের অফুরন্ত শক্তি আর সম্ভাবনা বর্তমান সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের উৎকর্ষে এমনভাবে জড়িয়ে পড়েছে যা অবিচ্ছেদ্য।
বিদ্যুৎ ও আধুনিক জীবন: আধুনিক সভ্য জীবনের সাথে বিদ্যুতের একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া আধুনিক জীবন চলতে পারে না। কাজেই আধুনিক প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি এখন মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। আর বিদ্যুতের সাহায্য ছাড়া এসব যন্ত্রপাতি পুরোপুরি অচল। বিদ্যুতের আগমনের ফলে জীবনের সবক্ষেত্রে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন নেই। সকল ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের প্রয়োজন। বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ছাড়া একেবারে অসম্ভব সেগুলো ক্ষেত্র কয়েকটি আমরা নিম্নে তুলে ধরলাম:
দৈনন্দিন গৃহস্থালির প্রয়োজনে বিদ্যুৎ: দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিদ্যুতের ব্যবহার ছাড়া মানুষের একটি দিনও চলে না। বৈদ্যুতিক বাতি, পাখা, টেলিফোন, মোবাইল, রেডিও, টেলিভিশন সবকিছুই বিদ্যুৎ শক্তির করুণায় মানুষকে সেবা দিতে পারে। বিদ্যুৎ আছে বলেই মানুষ এখন রাতের অন্ধকারকে আলোকিত করতে পারে।
রান্নার কাজেও এখন ব্যবহৃত হয় বিদ্যুৎ। বৈদ্যুতিক হিটার, রাইস কুকার, প্রেসার কুকার সব কিছুই এখন মানুষের প্রাত্যহিক জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। গরমের চরম অস্বস্তির অবসান ঘটিয়ে মানুষকে প্রশান্তির পরশ এনে দিচ্ছে বৈদ্যুতিক পাখা ও এয়ারকুলার। এছাড়াও উঁচু দালান ও অট্টালিকায় ব্যবহৃত হয়-বৈদ্যুতিক লিফট, যাতে করে অল্প সময়ে এবং বিনা পরিশ্রমে উঠা-নামা করা যায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ: বিদ্যুৎ পরিবহন ও যোগাযোগ সভ্যতার অন্যতম স্তম্ভ। যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ নতুন গতি যোগ করেছে। বিদ্যুতের কল্যাণে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের সমস্ত দূরত্ব দূর করে দেওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। টেলিফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহূর্তেই যোগাযোগ করা যায় বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সাথে। দ্রুতগামী বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিবহন ব্যবস্থায় নিয়েএসেছে চরম উৎকর্ষতা। বিদ্যুতের সাহায্যেই গড়ে উঠেছে আধুনিক বিমান ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প।
উৎপাদন ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ: বিদ্যুতের কল্যাণে বর্তমান উৎপাদন ব্যবস্থা সাফল্যের চরম শিখরে উঠতে শিখেছে। বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলকারখানাগুলো এখন দ্রুত উৎপাদনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। পানির জন্য এখন কৃষকদের প্রকৃতির দয়ার আশায় বসে থাকতে হয় না। বৃষ্টি না হলেও তারা তাদের কৃষিক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক মেশিন ব্যবহার করে পানি সেচ দিতে পারে। এর ফলে তাদের উৎপাদনের পরিমাণও আগের চেয়ে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি ব্যবস্থায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ: সভ্যতার অগ্রযাত্রায় বিদ্যুতের অবদান অপরিসীম। বিদ্যুতের দ্বারা আজ চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিস্ময়কর উন্নতি সম্ভব হয়েছে। x-ray বা রঞ্জনরশ্মির সাহায্যে দেহাভ্যন্তরের অবস্থা নিরূপণ করা সম্ভব। তাছাড়া বিদ্যুৎ রশ্মির সাহায্যে ক্যান্সার প্রভৃতি দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসাও করা হচ্ছে। বর্তমানে লেসার- রে নিয়েছে আধুনিকতম শল্য-চিকিৎসার ভার।
জ্বালানি হিসেবে বিদ্যুৎ: বিদ্যুতের নানাবিধ ব্যবহারের কারণে আধুনিক জীবন পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি সহজ ও সহনশীল। বর্তমানে জ্বালানি হিসেবেও বিদ্যুতের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। আধুনিক সমাজে এখন কাঠ, তেল ও গ্যাসের পাশাপাশি বিদ্যুতও ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কাজের জ্বালানি হিসেবে। মানুষ এখন বিদ্যুতের সাহায্যে হিটার ও কুকারে রান্না করে। বিভিন্ন যানবাহনে এখন তেল ও গ্যাসের পরিবর্তে বিদ্যুতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি চালানো হচ্ছে বিদ্যুতের সাহায্যে। এভাবে বিদ্যুৎ পৃথিবীর জ্বালানি সম্ভাবনা সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও বিদ্যুৎ: আধুনিক যুগের বৈজ্ঞানিক কোন বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য পৃথিবীর খরস্রোতা নদী গুলোকে বন্দী করতে গিয়ে পেলেন অফুরন্ত জলবিদ্যুৎ এর সন্ধান তা বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইতিহাসের সূচনা করেছে এক নতুন অধ্যায়। বর্তমানে পরমাণু বিদ্যুৎ উন্নত দেশগুলোতে ও বিদ্যুৎ সরবরাহ কে করেছে আর ও সুবিধাজনক। বিদ্যুতকে বাদ দিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব না। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা’ সম্পূর্ণভাবে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি নির্ভর।
উপসংহার: সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনে এমনকি অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে বিদ্যুৎ এর কোন বিকল্প নেই। বিদ্যুতের সঠিক ও সর্বজনীন ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে সভ্যতা কে আরো কয়েকধাপ এগিয়ে নেওয়া যাবে তেমনি সকল মানুষ বিদ্যুতের দ্বারা উপকৃত হতে পারবে।
Leave a Reply