রচনা: চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

রচনা: চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

আপনারা যারা শিক্ষা বিষয়ের উপর তথ্য পেতে চান তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এখানে শিক্ষা বিষয়ক সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে। আমরা প্রতিদিনই বাংলা ব্যাকরণ এর প্রবন্ধ রচনা নিয়ে বর্তমানে আলোচনা করছি। কারণ বাংলা ব্যাকরণ এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো রচনা। আজকে আমরা যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি নিম্নে তুলে ধরা হলো:

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা-চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সাফল্য-রোগ নির্ণয়ে বিজ্ঞান- রোগ প্রতিরোধে বিজ্ঞান -রোগ নিরাময়ে বিজ্ঞান- জটিল রোগের চিকিৎসায় বিজ্ঞান- চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গুরুত্ব উপসংহার।

ভূমিকা: বিজ্ঞানের আশীর্বাদ আজ সর্বব্যাপী। বিজ্ঞান বিশ্বসভ্যতাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। মানব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিজ্ঞান চিকিৎসা ক্ষেত্রে নব আশীর্বাদ রূপে আবির্ভূত হয়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের আবিষ্কার চিকিৎসা ব্যবস্থাকে এনে দিয়েছে যুগান্তকারী বিপ্লব।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান এর সাফল্য: আধুনিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষের ধ্যান-ধারণায় পরিবর্তন এসেছে। বিজ্ঞানের বদৌলতে প্রাচীন পদ্ধতির কবিরাজী চিকিৎসার স্থলে হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথিক চিকিৎসার উদ্ভাবন করা হয়। বিজ্ঞানের অবদানে আবিষ্কৃত হয়েছে রোগ নির্ণয়ের নতুন নতুন যন্ত্রপাতি।

এসব যন্ত্রের সাহায্যে জটিল সব রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে। আধুনিক যুগে প্রাচীনকালের মত মানুষ কবিরাজি ওষুধের ওপর নির্ভর না করে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিজ্ঞানের অবদানেই কঠিন ব্যধি নিরাময়ে পেনিসিলিন, ক্লোরোমাইসিন, স্ট্রেপটোমাইসিন ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান এর সাফল্য অনস্বীকার্য।

রোগ নির্ণয়ে বিজ্ঞান: রোগ নিরাময়ের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হয় রোগ নির্ণয়ের। আগেকার দিনে রোগের চিকিৎসা করতে হতো অনুমানের ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে রোগ নির্ণয় বা ডায়াগনস্টিক ব্যবস্থায় কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। রঞ্জন রশ্মি বা এক্সরে, ইসিজি, সিটিস্ক্যান, মাইক্রোস্কোপ, আলট্রাসনোগ্রাফি, MRI ইত্যাদি যন্ত্রপাতির মাধ্যমে শরীরে পরীক্ষা চালিয়ে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয় ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবস্থান করেও যে কোনো রোগী বাইরের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারছে। আর এ সব সকল কিছুই সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের অবদানের কারণে।

রোগ প্রতিরোধে বিজ্ঞান: রোগ নির্ণয়ের পর তা প্রতিরোধের প্রয়োজন হয়, প্রয়োজন হয় রোগ নিরাময়ের। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের দুরারোগ্য রোগ আজ নিরাময় যোগ্য হয়ে উঠেছে। তবে রোগ নিরাময়ের চেয়ে রোগ প্রতিরোধই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রোগে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই তা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হলে রোগের অতিরিক্ত ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

বিজ্ঞানী অসাধ্যকে সাধন করেছে। বিজ্ঞানের আবির্ভাবে রোগ প্রতিরোধের জন্য নানা ধরনের পন্থা আবিষ্কৃত হয়েছে। হাম, যক্ষা, হুপিংকাশি, ধনুষ্টংকার, বসন্ত ইত্যাদি জটিল রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতিষেধক টিকার ব্যবস্থা হয়েছে। বিজ্ঞানের বদৌলতে এসব সম্ভব হয়েছে।

রোগ নিরাময়ে বিজ্ঞান: আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বিজ্ঞানের আশীর্বাদই সম্ভব হয়েছে। রোগ নিরাময়ের আধুনিক সব ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতির ফলে পেনিসিলিন, স্টেপটোমাইসিন, ক্লোরো মাইসিন ইত্যাদি মহৌষধ আবিষ্কার হয়েছে। এছাড়া সর্দি, জ্বর, কাশি, মাথা ব্যথা, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি ছোটখাটো যেসব রোগ যা প্রতিনিয়ত মানুষের জীবনে লেগে আছে তারও অনেক প্রকার ওষুধ বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে।

জটিল রোগের চিকিৎসা বিজ্ঞান: চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সংযোজনের ফলে অনেক দুরারোগ্য রোগের ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। ফলে মানুষ জটিল রোগ থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পেয়েছে। কঠিন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিও আজ মুক্তি লাভের আশায় আলো দেখছে। অধ্যাপক ও মাদাম কুরির আবিষ্কৃত রেডিয়াম ব্যবহার করে দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করেছেন চিকিৎসকরা। অনেক ক্ষেত্রেই ভয়ঙ্কর ক্যান্সার রোগ থেকে মানুষ মুক্তি পাচ্ছে। মানবদেহের হৃদপিন্ড ও কিডনি প্রভৃতি সংযোজন করা সম্ভব হচ্ছে বিজ্ঞানের কল্যাণে। আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে অপারেশন করা হচ্ছে জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীকে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গুরুত্ব: চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। অনেক অসাধ্য ও দুঃসাধ্য রোগ নির্ণয় ও তার চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান। সুস্থ সবল মানুষ এই জাতিকে উন্নতির দিকে ধাবিত করে। মানুষের জীবনের সুখ শান্তি বয়ে আনছে বিজ্ঞান।

উপসংহার: উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অসহনীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে বর্তমান যুগে। বিজ্ঞান এর প্রভাবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা খুব সহজেই দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা নির্ণয় করতে পারছে এবং সে অনুযায়ী সমস্যার সমাধান করতে পারছে। আগে যেখানে এবং নিম্ন করায় সমস্যা হতো কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে সেটা নিমিষেই সম্ভব হচ্ছে। তাই আমরা সহজেই বলতে পারি যে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*