রমজান মাসের যে সকল গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে তার মধ্যে আমরা আপনাদের মাঝে বাইশটি আমল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা প্রদান করব। আপনি যদি রমজান মাসের আমল গুলো করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই বাইশটি আমল অবশ্যই করতে হবে এবং এক্ষেত্রে কিছু কিছু আমল রয়েছে যেগুলো বাধ্যতামূলক নয়। তবে একজন মুসলিম হিসেবে এবং মমিন বান্দা হিসেবে আপনারা যদি প্রত্যেকটি আমল সঠিকভাবে করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে মহান আল্লাহ পাক আপনাদের এই ইবাদতের ধারা দেখে অনেক খুশি হয়েছেন এবং আপনাদের দোয়া গুলো কবুল করে নিয়েছেন।
যেহেতু রমজান মাস একটি আত্ম পরিশুদ্ধির মাস এবং এই মাসে আমরা আমাদের অতীত জীবনের যাবতীয় ভুল ভ্রান্তি ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে সেহেতু এই মাসকে আমরা যদি কাজে লাগাতে পারি তাহলে মৃত্যুর পরে আখিরাতে হয়তো ভালো অবস্থানে থাকতে পারবো। রমজান মাসের ফজিলত আমাদেরকে অবশ্যই অর্জন করতে হবে এবং বছরে একটি মাস আমাদেরকে একটু কষ্ট করে হলেও মহান আল্লাহ পাকের জন্য খুশি মনে ইবাদত করার চেষ্টা করতে হবে।
যারা প্রকৃত মুমিন বান্দা তারা রমজান মাসের জন্য আকুল আগ্রহে বসে থাকে। কারন আমরা জীবনে চলার পথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পাপ করে থাকি এবং একজন মুমিন বান্দা সেই সকল পাপগুলো বুঝতে পারেন বলে মহান আল্লাহ পাকের কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাতে দোয়া করেন যাতে করে আল্লাহ পাক তাদেরকে জীবনের পাপ গুলো ক্ষমা করে দেন। তাই আপনি যখন আপনার অতি জীবনের ভুলগুলো বুঝতে পারবেন তখন রমজান মাসের এই বিষয়গুলো কাজে লাগানোর মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের কাছে দুই হাত তুলে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কাঁদতে পারবেন এবং আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করার মাধ্যমে পৃথিবীতে অথবা আখিরাতে যেগুলো চান সেগুলো পেয়ে যাবেন।
তবে যাই হোক আপনারা যখন রমজান মাসের বাইশটি আমল সম্পর্কে জানতে এসেছেন তখন আপনাদেরকে বলব যে রমজান মাসের প্রধান আমল গুলোর মধ্যে রয়েছে সিয়াম সাধনা করা। শাওয়াল মাসের চাঁদ না ওঠা পর্যন্ত আমাদেরকে অবশ্যই সিয়াম সাধনা করতে হবে এবং এক্ষেত্রে কোন মাসে 29 টি এবং কোন মাসে ৩০ টি করে রোজা রাখার মধ্য দিয়ে আমরা রমজান মাস পালন করে থাকি। আপনি যখন রোজা রাখবেন তখন অবশ্যই আপনাকে সুবহে সাদিকের আগে সেহরি খেয়ে রোজা রাখতে হবে এবং সকল ধরনের পান আহার এবং অন্যান্য কোন ধরনের আহার বন্ধ রেখে আপনাকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে যেমন নিজেকে বিরত রাখছেন তেমনিভাবে অসৎ কোন পয়সা নিজের জন্য রাখা যাবে না অথবা খারাপ পথে পরিচালিত হয়ে সেই টাকা দিয়ে আপনাকে হারাম বস্তু গ্রহণ করা যাবে না। তাই রমজান মাসে সর্বোচ্চ পবিত্রতা অর্জন করে চলতে হবে এবং এই পবিত্রতা এমনভাবে অর্জন করতে হবে যা আপনার পুরো লাইফে অনুসরণ করে চলা সম্ভব হয়। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে রয়েছে সালাতুল তারাবি এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা। তাহাজ্জুদের নামাজ নফল ইবাদত হয়ে থাকলেও আপনারা অবশ্যই তারাবির নামাজ আদায় করবেন এবং তারাবি নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে যেখানে যেভাবে আদায় করা হয় ঠিক সেভাবেই আপনাদেরকে আদায় করতে হবে।
রমজান মাসে আপনারা অবশ্যই কোরআন তেলাওয়াত করবেন এবং আপনি যদি শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেন তাহলে সেই শিক্ষা মনের মাঝে প্রদান করার অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে। অন্যান্য ইবাদতগুলো নির্দিষ্ট সময়ে হয়ে থাকলেও কোরআন তেলাওয়াত আপনি আপনার অবসর সময়ে করতে পারেন এবং এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এবং বেশি বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করবেন। সৎপথে অল্প রুজি হলেও আপনারা সেটা দিয়ে জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করবেন এবং কোন ধরনের বদ অভ্যাস অথবা নেশা জাতীয় পণ্য গ্রহণ করার অভ্যাস থাকলে সেটা অবশ্যই বর্জন করে চলতে হবে।
আপনাদেরকে অবশ্যই তাকওয়া অর্জন করে চলতে হবে এবং তাকওয়ার বাইরে যাওয়া যাবে না। তাছাড়া রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে রয়েছে শবে কদর অনুসন্ধান করা এবং এতেকাফ করা। তাছাড়া ফিতরা প্রদান করার মাধ্যমে এবং অন্যান্য ছোটখাট ইবাদত করার মাধ্যমে রমজান মাসের পরিপূর্ণ বিধি-বিধান আপনারা মেনে চলতে পারেন।
Leave a Reply