আজ কে আমাদের এই ওয়েবসাইটে আরো একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব । এই ভাব-সম্প্রসারণ টি বিশেষ করে JSC, SSC,HSC শিক্ষার্থীদের জন্য। তারা শুধুমাত্র আমাদের এই ওয়েবসাইট পেজে আজকের ভাব-সম্প্রসারণ টির শিরোনাম দিয়ে সার্চ করলেই তার কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে যাবে। তো বন্ধুরা চলেন আজকে আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব তা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ
মূলভাব: সভ্য কোনো জাতি চিন্তাভাবনা ছাড়া চলতে পারে না। আর সেই চিন্তাচেতনা প্রতিবিম্বিত হয় তার সাহিত্যে। সাহিত্যের সাথে মানবজাতির জীবন ও সমাজের যোগাযোগ খুবই ঘনিষ্ঠ। জীবন ও সমাজকে নিয়ে সাহিত্য। সব জাতির মধ্যেই চিন্তাবিদ, কবি-সাহিত্যিকের আবির্ভাব ঘটে। কবি সাহিত্যিকেরা সমাজের মানুষ। তাঁরা জাতির মুখমাত্র হয়ে জাতির সব বৈশিষ্ট্যকেই সাহিত্যে রূপ দিয়ে থাকেন।
সম্প্রসারিত ভাব: কবি ও সাহিত্যিক রা তাদের চারপাশে জীবন থেকে যে অভিজ্ঞতা লাভ করেন তা তাদের লেখায় প্রকাশ করেন। কোনো কবি-সাহিত্যিকই জাতির জীবনে ঘটে যাওয়া কর্মকাণ্ডকে এড়িয়ে চলেন না। জাতির চিন্তাধারাকে রূপ দেওয়াই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য সাহিত্যের বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করা হয়। জাতীয় জীবনের উত্থান-পতনের সব দোলাই সাহিত্যিকের হৃদয়কে আন্দোলিত করে। হৃদয়-মনে মথিত হয়ে সেসব ঘটনা সাহিত্যের সূক্ষ্ম শিল্পিত তুলিতে চিত্রিত হয়ে জাতীয় দর্পণের সৃষ্টি করে।
সাহিত্যকে যেকোনো সমাজের দর্পণ বা আয়নারূপে অভিহিত করা হয়। সাহিত্য হচ্ছে সুন্দরের প্রতীক, কল্যাণের অগ্রদূত, জনসাধারণের উপকারের উৎস। মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার স্মৃতি, অনুভূতিকে লেখনীর মাধ্যমে কাগজের পাতায় জীবন্ত করে তোলাই সাহিত্য। সাহিত্য হচ্ছে চিন্তা-দর্শন, আদর্শ, মেধা বিকাশের নাম। দর্পণে যেমন আমাদের পূর্ণাঙ্গ মুখচ্ছবি প্রতিফলিত হয়, তেমনি সাহিত্যের একটি জাতির পরিপূর্ণ চিত্র ফুটে ওঠে। কোনো জাতির নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-ভাবনা সব কিছুই সাহিত্যের মাধ্যমে মূর্ত হয়ে ওঠে। একটি জাতির পূর্ণ অবয়ব প্রতিবিম্বিত হয় তার সাহিত্যের ভেতর।
সাহিত্য জীবনের প্রতিচ্ছবি ও সমাজের দর্পণ স্বরূপ। একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা, চিন্তাভাবনা প্রতিফলিত হয় সাহিত্যে। সাহিত্য মানুষের চিন্তা-চেতনা ধ্যান-ধারণার সংমিশ্রণ। কোনো জাতিকে জানার জন্য তার সাহিত্য জানা প্রয়োজন হয়। জাতির অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সাহিত্যের বিষয়বস্তু হিসেবে গৃহীত হয়। জাতি হিসেবে কোন দেশের মানুষ বর্তমান বিশ্বে কতটা অগ্রসর তা সে দেশের সাহিত্যপাঠে সহজেই জানা যায়। তাই কোন জাতিকে জানতে হলে সে জাতির সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে হয়।
বাঙালির সাহিত্যের মধ্যেও বাঙালির জাতীয় জীবনের সমগ্র বৈশিষ্ট্য চিত্রিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের চিন্তাভাবনার প্রতিফলনই বাংলা সাহিত্যে দেখতে পাওয়া যায়। একটা জাতি কতটুকু অগ্রগামী, তাও প্রতিফলিত হয় সাহিত্যে। যে জাতির উন্নত সাহিত্য আছে, সে জাতি সত্যিই উন্নত।
মন্তব্য: উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, সাহিত্যকে যে অর্থে ‘আয়না’ বলা হয়, সে আয়নাকে সমাজের মনস্তত্ত্ব পড়তে ব্যবহার করা হয়। দেশ, সমাজ ও মানুষের চিন্তা-ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, আচার-আচরণ বুঝতে ব্যবহার করা হয়। এ জন্য যে কোনো সমাজ বা দেশকে জানতে হলে ওই সমাজ বা দেশের সাহিত্য পড়তে হয়। একটি দেশের মানুষের আচার-ব্যবহার, সভ্যতা, ভব্যতা, রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন, গণতন্ত্র চর্চা, মানবিকতা, সন্ত্রাস-সহিংসতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সবকিছুর গতি-প্রকৃতি অনুধাবনের জন্য তথ্য প্রদানে সাহিত্য আয়নার ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে চেষ্টা করি প্রতিটি ভাব-সম্প্রসারণ সহজ সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করার। আজ উপরে যে ভাব সম্প্রসারণ নীতি নিয়ে আলোচনা করা হলো, তা আপনাদের নিশ্চয়ই ভালো লাগবে। আমরা চেষ্টা করেছি এই ভাব-সম্প্রসারণ টি সহজ এবং সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করতে। আপনারা বেশি বেশি করে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং শিক্ষা বিষয়ক যে কোন তথ্য অল্প সময়ে খুব সহজেই খুজে পাবেন। আজ এই পর্যন্তই সবার সুন্দর ও আগামী পথচলা শুভ হোক এই কামনায়।
Leave a Reply