সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর যখন আমরা একটু ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে তখন অবশ্যই এই প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন আমল থাকতে পারে। সাধারণত আমরা রাতের খাওয়া দাওয়ার পরে যারা সাথে সাথে শুয়ে পড়ি অথবা যারা একটু হাঁটাহাঁটির পর শুয়ে পড়ি তাদের উদ্দেশ্যে বলবো যে আপনারা যখনই ঘুমাতে যান না কেন নির্দিষ্ট কিছু আমল করে তারপরেই ঘুমাতে যাওয়াটা শ্রেয়। যেহেতু ঘুম আমাদের জীবনের প্রত্যেক দিনের ক্লান্তিকে দূর করে দেয় সেহেতু এই ঘুম অবশ্যই আমাদের প্রয়োজন এবং ঘুম সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাকের কাছে আমরা যদি আমল করি তাহলে তিনি অবশ্যই আমাদেরকে সঠিকভাবে ঘুম পাড়িয়ে ক্লান্তি দূর করে দিতে সাহায্য করবেন।
বিভিন্ন রোগের সমস্যা তৈরি হয় না ঘুমানোর কারণে। তাই আপনার যদি ঘুমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে দেখা যাবে যে সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখের সৃষ্টি হচ্ছে এবং আপনিও মানসিকু শারীরিক দিক থেকে শান্তি পাচ্ছেন না। মস্তিষ্কের বিভিন্ন চিন্তা ভাবনাকে দূর করার জন্য একটি ফ্রেশ ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। আপনি যখনই ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারবেন তখন আপনার ভেতরে যাবতীয় রোগবালায় গুলো দূর হয়ে যাবে এবং ঘুমানোর মাধ্যমেও আমরা শারীরিক বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাবো। তাই ঘুমানোর ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং আমরা যদি মুসলিম হয়ে থাকি তাহলে অবশ্যই ঘুমানোর আগে বেশ কিছু আমল করে তারপরে ঘুমাবো।
যদি আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত পালন করতে চাই তাহলে অবশ্যই ঘুমানোর আগে আমাদেরকে বেশ কয়েকটি কাজ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে আমরা যে জায়গাটাই ঘুমাবো সেই জায়গাটা ঝেড়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং এক্ষেত্রে বিছানায় হয়ে থাকলে অবশ্যই বিছানা ছেড়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
যারা ঘুমানোর সময় এলোমেলো ভাবে ঘুমান তাদেরকে বলব সে অবশ্যই আপনারা সুশৃঙ্খল ভাবে ঘুমাবেন এবং ডান কাঁধে শোয়ার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ ডান পাশের ওপর নির্ভর করে শুবেন এবং তারপরে একটি দোয়া পড়বেন। আমার আগে এই দোয়াটি পড়লে আপনারা অনেক ফজিলত পাবেন এবং এই ফজিলত এর মাধ্যমে আপনাদের ঘুম যেমন ফ্রেশ হবে তেমনিভাবে আপনারা অনেক উপকারিতা পাবেন। তাই দোয়াটি হল-
আল্লাহুম্মা আস্লামতু নাফ্সী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহী ইলাইকা ওয়া ফাউওয়ায্তু আমরী ইলাইকা ওয়ালজা’তু যাহরী ইলাইকা রাগ্বাতা ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজা’আ মিনকা ওয়া লা মানজা’আ মিনকা ইল্লা ইলাইকা আ-মানতু বিকাতা-বিকা। আল্লাজি আনঝালতা ওয়া বি নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালাত।’
আমরা যদি রাসূল সাঃ এর সুন্নত পালন করতে যাই তাহলে তিনি ঘুমানোর আগে যে দোয়াটি বলতেন সেটি হলো আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমতু আহইয়া। তাই আপনারা এটা বলতে পারেন এবং ঘুমানোর মাধ্যমে নিজেদের শরীরের ক্লান্তি গুলোকে দূর করতে পারেন। অনেকে আছেন যারা ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমিয়ে থাকেন। যদি আপনি আয়াতুল কুরসি পড়ে বুকে তিনবার ফু দিয়ে ঘুমাতে পারেন তাহলে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত আপনার জন্য করা হবে।
তাহলে আল্লাহপাক যে পাহাদারকে নিযুক্ত করছেন তিনি সারারাত আপনাকে পাহারা দিবেন এবং এর ফলে আপনার কাছে কোনো সহযোগিতা আসতে পারবেনা অথবা আপনার কোন জানমালের ক্ষতি করতে পারবে না।তাছাড়া আপনারা ঘুমানোর সময় যদি আরো কোন আমল করতে চান তাহলে জামিয়ার তিরমিজি শরীফ থেকে এসেছে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে একটি বিষয় জানিয়ে দিয়েছিলেন।
এই বিষয়টি হলো যে শোয়ার আগে 33 বার সুবহানাল্লাহ এবং 33 বার আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করতে হবে। সেই সাথে আপনাদেরকে ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়তে হবে। অর্থাৎ তসবি তিলাওয়াত ঠিক যেভাবে করেন ঠিক একইভাবে আপনারা এভাবে যদি এই আমল গুলো করেন এবং ঘুমাতে যান তাহলে আলো অবশ্যই আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভ করতে পারবেন।এতে করে আমাদের ঘুম চমৎকার হবে এবং বাজে বাজে দুঃস্বপ্ন দেখা থেকে আমরা নিজেদেরকে বিরত রাখতে পারব। তাই একজন মুমিন ব্যক্তি হিসেবে এবং মুসলিম হিসেবে আপনারা অবশ্যই এই আমল গুলো করবেন।
Leave a Reply