আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগতম। শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনারা যারা অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ভাব সম্প্রসারণ খুঁজছেন আজকে আমরা তাদের জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে এসেছি। আজ আমরা এই ওয়েবসাইটে যে ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব সেই ভাব সম্প্রসারণ টি অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণির উপযোগী ভাব-সমপ্রসারণ। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক আমরা আজকে যে ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব সেটি হল:
স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা ভালো
মূলভাব: মানবজীবনে বন্ধুর সাহচর্য অত্যন্ত প্রয়োজন। তবে স্পষ্টভাষী শত্রুর ভূমিকা জীবনের জন্য ক্ষতিকারক না হয়ে কল্যাণকর হতে পারে। জীবনে চলার পথে যেমন অনেক বন্ধু জোটে তেমনি অনেক শত্রুও সৃষ্টি হয়। তবে বন্ধুর ভূমিকা যেমন সর্বক্ষেত্রে মানুষের চলার পথে সহায়ক হয় না তেমনি কোন কোন ক্ষেত্রে শত্রুর সমালোচক ভূমিকা থেকেও মানুষ আশাতীত উপকৃত হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব: মানবজীবন সুখকর করে তোলার জন্য শত্রুকে একদিকে যেমন পরিহার করতে হয় তেমনি বন্ধুর সাহচর্য পরম প্রত্যাশিত। দৈনন্দিন বাস্তব জীবনে মানুষের বন্ধু সংসর্গের প্রয়োজন হয়। সুখ-দুঃখের সহমর্মিতা প্রকাশ, বিপদে সহায়তা, দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থায় সুপরামর্শদান ভুল পদক্ষেপ নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে বন্ধু মানুষের জীবনে পরম সুহূদের ভূমিকা রাখে।
আবার অনেক সময় বন্ধুত্বের কারণে এবং বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে বন্ধুর ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্দেশ করে না নির্বাক ভূমিকা পালন করে ফলে মানুষ নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায় না। অনেকক্ষেত্রে নির্বাক বন্ধু জীবনের কোন কল্যাণকর কাজে আসে না।
মানুষের জীবনে স্পষ্টবাদিতা একটি মহৎ গুণ। স্পষ্টভাষী লোক শত্রু হলেও নির্বাক বন্ধু অপেক্ষা সহস্রগুণ শ্রেয়। নির্বাক বন্ধু বিপদে কোনরকম উপকারে না আসে অনেক সময় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে ব্যাক্তি স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে জানেনা প্রাণ খুলে নিজের অভিব্যক্তি বর্ণনা করতে জানে না সে দুর্বিপাকের সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এধরনের বন্ধুর কাছ থেকে সাহায্য ও সহানুভূতির না পেয়ে অনেকেই বেদনাহত হয়।
পক্ষান্তরে পরম শত্রুও যদি সুস্পষ্ট ভাষায় কারো ভুল ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে সে ভুল ত্রুটি শুধরে নেওয়া সহজেই সম্ভব হয়। এ ধরনের শত্রু মানুষের জীবনে নির্বাক মিত্রের চেয়ে বরং উপকারী সুহূদের ভূমিকা রাখে। এ জন্যে প্রজ্ঞাবান লোকেরা নির্বাক মিত্রের চেয়ে স্পষ্টভাষী শত্রুর ভূমিকা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাঁদের ধারণা,স্পষ্টভাষী শত্রু যেভাবে মানুষের দোষ-ত্রুটির দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাতে মানুষ সচেতন ও সতর্ক হবার সুযোগ পায়, নিজেদের ত্রুটি বিচ্যুতি সংশোধনের জন্য সচেষ্ট হতে পারে। পরিণামে মানুষ সঠিক পন্থা ও পদক্ষেপ নিতে পারে, চারিত্রিক ত্রুটি সংশোধন করতে সক্ষম হয়।
আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে, যারা বন্ধুর বিপদে বন্ধুর পাশে না থেকে কোনপ্রকার সাহায্য বা সহানুভূতি প্রকাশ না করে নির্বাক দর্শক রূপে তা উপভোগ করে। তাদের উদ্দেশ্যে– ” ধরি মাছ না ছুঁই পানি”। সে রূপ ব্যাক্তি বন্ধু হলেও তাতে পরিত্যাগ করা বাঞ্চনীয়।
মন্তব্য: একথা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণিত যে, স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা ভালো। হযরত ওমর (রা) যথার্থই বলেছেন, “যে তোমার দোষ ধরে, সেই তো প্রকৃত বন্ধু” । তাই আমরা বলতে পারি যে, প্রকৃত মিত্র যিনি তার ভূমিকা নির্বাক মিত্রের অনুরূপ হওয়া উচিত নয়। স্পষ্ট ভাষায় বন্ধুর ভুল-ত্রুটি দেখিয়ে দিয়ে তা সংশোধনের পরামর্শ দেয়া প্রকৃত বন্ধুর কাজ আর এটাই হচ্ছে প্রকৃত বন্ধুর সার্থকতা।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, যখন আমরা শিক্ষাকে শিক্ষণ হিসেবে নিতে পারব, দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যম হিসেবে নিতে পারব, জানার পরিধি বাড়ানোর মাধ্যম হিসেবে নিতে পারব, মানুষ গড়ার উন্নতম মাধ্যম হিসেবে নিতে পারব, তখনই কেবল প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারব। আর এই কাজটি সহায়ক হিসেবে আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য গুলো দিয়ে থাকে। যাতে করে একজন শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তক এর পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে এবং দেশ ও দশের কল্যাণে নিয়োজিত থাকতে পারে।
Leave a Reply