তারাবির নামাজ সুন্নত ও ২০ রাকাত এশা’র চার রাকাত ফরজ নামাজ ও ২ রাকাত সুন্নত আদায় করার পর এবং বিতর নামাজের আগে তারাবীহ্ নামাজ আদায় করতে হয়। ইসলাম প্রিয় ভাই ও বোনেরা তারাবির নামাজ সুন্নত না নফল বিষয়টি আমরা খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের সাইটে প্রকাশ করছি। আপনারা অবশ্যই ধৈর্য সহকারে আমাদের পুরো পোস্টটিি পড়বেন।
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
তারাবির নামাজের বিধান সম্পর্কে অর্থাৎ তারাবির নামাজ ফরজ না নফল সে সম্পর্কে, ইসলামের বিধান মূলত দুই প্রকার; একটি হলো ফরজ আর অপরটি হলো নফল।
১. ফরজঃ কুরআনে ও হাদিসে যে বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং পালন না করলে শাস্তির কথা উল্লেখ আছে তাই ফরজ।
২. নফলঃ ফরজ ছাড়া যা কিছু রাসুল সঃ করেছেন, করতে বলেছেন, উৎসাহিত করেছেন তাই নফল; নফল ইবাদাত পালন না করলে কেউ গুনাহগার হয় না কিন্তু পালন করলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়।
প্রত্যেক ফরজ ইবাদাতের গুরুত্ব যেমন এক নয় তেমন প্রত্যেক নফল ইবাদাতের গুরুত্বও এক নয়; এক এক নফল ইবাদতের গুরুত্ব এক এক রকম; কোন ইবাদাতের গুরুত্ব কতটুকু সেটা জানতে প্রথমে দেখতে হবে কুরআনে সে বিষয়ে কি বর্ণিত হয়েছে; তারপর দেখতে হবে সে বিষয়ে হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে; অর্থাৎ রাসুল সঃ সেটাতে কেমন গুরুত্ব দিয়েছেন; গুরুত্বের দিক বিবেচনা করে একটি নফল ইবাদাতের বৈশিষ্ট্যগত একটি নাম আলেমগণ ব্যবহার করে থাকেন; যেমন সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, সুন্নাতে যায়িদা, মুস্তাহাব ইত্যাদি; সাধারণ মুসলিমরা শুধু এতটুকু জেনেই ক্ষ্যান্ত হয়ে যায়; তারা বুঝতে চায় না যে কেন এই নামকরণ করা হলো।
রাসুল সঃ এই মর্মে কি করেছেন বা কি বলেছেন, তারা কুরআন ও হাদিস জানতে আগ্রহী নয়, তারা ফতুয়া পেলেই খুশি, কিন্তু বিষয়টা এতো সহজ নয়। এভাবে অবহেলা করাটা কাম্য নয়; আলেমদের নির্ধারিত ফতোয় না দেখে কুরআন ও হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে সেটা দেখে নিজে বুঝতে হবে যেকোন ইবাদাতের গুরুত্ব কতটুকু; তাহলে ইবাদাতের প্রতি আগ্রহ বেশি হবে; যেমনটা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসুল সঃ থেকে হাদিস শুনতেন এবং আমল করতেন; তাই আজকে আমরা তারাবির নামাজের ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে সেটা দেখবো ইনশাআল্লাহ।
যে ব্যক্তি ইমামের সাথে তারাবীহ শুরু করে শেষ পর্যন্ত থাকে তাকে পুরো রাত ইবাদতের সওয়াব দেয়া হয়।তারাবীহের নামাজ এবং তার হুকুম এই পবিত্র মাসে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য শরীয়ত হিসেবে যা পেশ করেছেন তম্মধ্যে তারাবীর নামাজ একটি। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। মানুষ প্রতি চার রাকাত পর আরাম করে তাই এ নামাজকে তারাবীহ বলা হয়।
তারাবীহ দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। তাহাজ্জুদও অনুরূপ। কোন কোন মসজিদের ইমাম না বুঝে ভুল করেন। তারা দুই রাকাতের পর তারাবীহ অথবা তাহাজ্জুদ কোনটিতেই সালাম ফিরান না। এটা সুন্নাতের খেলাফ। ওলামাগণ বলেছেন যে, যে ব্যক্তি তারাবীহ অথবা তাহাজ্জুদের তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যায় সে যেন ফজর নামাজের তৃতীয় রাকাতে দাড়ালো। অর্থাৎ তার নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে। তারাবীহ জামাআতে মসজিদে আদায় করা উত্তম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ নামাজ মসজিদে পড়েছেন। তার সাথে লোকজনও নামাজ আদায় করেছে। আগমনকারী পরবর্তী রাতেও তিনি নামাজ পড়লেন। লোকজনও হয়েছিল বেশি। তার পর লোকজন তৃতীয় কিংবা চুতুর্থ রাত্রিতে একত্রিত হলো অথচ আল্লাহর রাসূল তাদের নিকট আসেননি।সকাল বেলা তিনি লোকদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা যা করেছ আমি তা দেখেছি, আমার বের না হওয়ার কারণ হলো, আমার ভয় হচ্ছিল যে, এ নামাজ তথা তারাবীহ তোমাদের জন্য ফরয হয়ে যাবে।
আশা করি আপনা জানতে পেরেছেন যে, তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল।
Leave a Reply