ত্রি অর্থ তিন আর মিতি অর্থ পরিমাপ। সুতরাং ত্রিকোণমিতি শব্দের অর্থ তিন কোণের পরিমাপ। তবে ত্রিকোণমিতি শুধু কোণের পরিমাপ নিয়েই আলোচনা করে না বরং তিন বাহুল নিয়ে আলোচনা করে। সর্বোপরি বলা যায় যে স্বাস্থ্য ত্রিভুজের তিন কোণ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তাই ত্রিকোণমিতি। আমরা যেহেতু প্রতিনিয়ত ত্রিভুজ বিশেষ করে সমকোণী ত্রিভুজের ব্যবহার করে থাকি। তাই আমাদের চারিদিকের পরিবেশে নানা উদাহরণ দেখা যায় যেখানে কল্পনায় সমকোণী ত্রিভুজ গঠন করা যায়।
সেই প্রাচীন যুগে মানুষ জ্যামিতির সাহায্যে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নদীর পথ নির্ণয় করার কৌশল শিখেছিল। সেই প্রাচীন যুগে মানুষ যখন জ্যামিতির সাহায্যে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নদীর প্রস্থ নির্ণয় করার কৌশল কাজে লাগিয়েছিল নিজেদের জীবনে। গাছে না উঠেও গাছের ছায়ার সঙ্গে লাঠির তুলনা করে নিখুঁতভাবে গাছের উচ্চতা মাপতে শিখেছিল সেই সময়।
এই গাণিতিক কৌশল শেখানোর জন্য সৃষ্টি হয়েছে ত্রিকোণমিতি নামে গণিতের এক বিশেষ শাখা। ইংরেজি Trigonometry শব্দটি গ্রিক শব্দ TRI অর্থ তিন , Gon অর্থ ধার ও metron অর্থ পরিমাপ দ্বারা গঠিত। তাই বলা যায় ত্রিকোণমিতিতে ত্রিভুজের বাহু ও কোণের মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। প্রাচীন মিশর ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় ত্রিকোণমিতি ব্যবহারের নিদর্শন রয়েছে বহুভাবে। মিশরীয় রাও ভূমির জরিপ এবং প্রকৌশল কাজে এই বহুল ব্যবহৃত ত্রিকোণমিতিকে ব্যবহার করতেন বলে সকলে ধারনা করে থাকে।
এর সাহায্যে জ্যোতির্বিদগণ পৃথিবী থেকে দূরবর্তী গ্রহ নক্ষত্র দূরত্ব নির্ণয় করতেন বা করতে পারতেন বলে সকলের ধারণা। আধুনিক বিশ্বে ত্রিকোণমিতির ব্যবহার গণিতের সকল শাখায় রয়েছে বলে দেখা যায়। সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান নির্ণয় করতে গিয়ে নেভিগেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ত্রিকোণমিতির ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান ক্যালকুলাস সহ গণিতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শাখায় ত্রিকোণমিতির বহুল ব্যবহার রয়েছে। ত্রিকোণমিতি ভালো করে জানলে আমরা সকলে সূক্ষ্ম কোণের ত্রিকনোমিতিক অনুপাত নির্ণয় করতে পারব এবং অনুপাত বর্ণনাও করতে পারব তাই ত্রিকোণমিতি গণিত শাস্ত্রের শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে অধ্যায়ন করা উচিত। সূক্ষ্মকোণে ত্রিকোণমিতিক অনুপাত গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় করা যায় এই ত্রিকোণমিতির সূত্র ব্যবহার করে।
সূক্ষ্মকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত গুলোর ধ্রুবতাও যাচাই করতে পারব প্রমাণ করতে পারব ও গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারব যদি আমরা ত্রিকোণমিতিকে ভালোভাবে অধ্যায়ন করতে পারি। জ্যামিতিক উপায়ে বা জ্যামিতিক পদ্ধতিতে ৩০ ডিগ্রি ৪৫ ডিগ্রি ৬০ ডিগ্রি ইত্যাদি কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত এর মান নির্ণয় করা যায় এই সূত্র গুলি প্রয়োগ করে। আমরা জিরো ডিগ্রী অন্য ৯০ ডিগ্রি কোণের অর্থপূর্ণ ত্রিকোণমিতিক অনুপাত গুলোর মান নির্ণয় করতে পারব এই ত্রিকোণমিতির সূত্র প্রয়োগ করলে।
আবার ত্রিকোণমিতিক অভেদাবলী প্রমাণ করা যায় এই সূত্র গুলির সাহায্যে। আমরা জানি সমকোণী ত্রিভুজের বাহুগুলো অতিভুজ ভূমি ও উন্নতি কোণ নামে পরিচিত হয়। ত্রিভুজের আনুভূমিক অবস্থানের জন্য এই নামসমূহ সার্থক আবার সমকোণী ত্রিভুজের সূক্ষ্ম কোণ দ্বয়ের একটির সাপেক্ষে অবস্থানের প্রেক্ষিতেও বাহুগুলোর নামকরণ করা হয়ে থাকে। জ্যামিতিক চিত্রের শীর্ষবিন্দু চিহ্নিত করার জন্য বড় হাতের বর্ণ গুলি ব্যবহার করা হয় ও বাহুবলি নির্দেশ করতে ছোট হাতের বর্ণগুলি ব্যবহার করা হয়। কোণ নির্দেশের জন্য প্রায়সিক গ্রিক বর্ণই ব্যবহৃত হয় বহুল ভাবে তবে গ্রিক বর্ণমালার ছয়টি বহুল ব্যবহৃত বর্ণগুলি এখানে আমরা বেশি ব্যবহার করে থাকি। বর্ণগুলি হল আলফা বিটা গামা থিটা ফাই ওমেগা এগুলি।
প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত গণিতবিদের হাত ধরেই জ্যামিতি ও ত্রিকোণমিতিতে গ্রিক বর্ণ গুলোর ব্যবহার হয়ে আসছিল অনেকদিন আগে থেকেই বা প্রাচীনকাল থেকেই। ত্রিকোণমিতি সম্পর্কে অনেক কথাই জানলাম এখন দেখতে হবে এই ত্রিকোণমিতির আবিষ্কারক কে বা ত্রিকোণমিতির জনক হিসেবে কাকে অভিহিত করা হয়।
ত্রিকোণমিতির জনক নিকাইয়ার হিপ্পারকাস
নিকাইয়ার হিপ্পারকাসকে ত্রিকোণমিতির জনক বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
Leave a Reply