
আবেগ হচ্ছে মনের ভিতরের এক ধরণের অনুভূতি। মানুষের সাথে আবেগের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। প্রত্যেকটা মানুষই কম -বেশি আবেগী হয়। মানুষের জীবনে আবেগ থাকাটা দরকার। কিন্তু অতিরিক্ত আবেগ আবার বিপদের কারণ হতে পারে। মূলত আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে আচরণের মাধ্যমে। আবার সব মানুষের আবেগ এক রকম নয়। একেক জন নমানুষের আবেগ একেক রকম। আবার সব মানুষের আবেগ প্রকাশের ধরণও এক রকম নয়।
বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে আবেগ প্রকাশ করে বা আচরণ করে বলেই সব মানুষের আচরণ আলাদা আলাদা হয়। আজকে আমাদের পোস্টটি সাজানো হয়েছে আবেগ নিয়ে কিছু বাস্তবধর্মী কথার মাধ্যমে। অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই আবেগ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথা খুঁজে থাকেন। মূলত যারা আবেগ নিয়ে এ ধরণের বাস্তবধর্মী কথা খুঁজে থাকেন, আজকের পোস্টটি মূলত তাদের জন্যই।
মানুষের সাথে আবেগের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। প্রত্যেকটা মানুষেরই কম বেশি আবেগ থাকে৷ কিন্তু আবেগ থাকাটা যেমন দরকার, ঠিক তেমনি অতিরিক্ত আবেগও কিন্তু অনেক সময় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন : একটি মানুষের জীবনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো এসএসসির পরে কলেজ লাইফ৷ সাধারণত বলা হয় এসময় মানুষ বেশি আবেগী হয়। আবেগের বশবর্তী হয়ে মানুষ বেশিরভাগ এই সময়টাতে ভূল করে।
তখন অতিরিক্ত আবেগের ফলে পড়াশুনা তেমন করা হয় না। বিভিন্নভাবে আড্ডা দিয়ে বন্ধুদের সাথে সময় অতিবাহিত করে৷ কিন্তু তারপর বিভিন্ন রকম হতাশায় ভুগে। আর এসময়টা ঠিক মতো কাজে লাগাতে না পারায় পরবর্তীতে সারাজীবন ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভালো কোথাও এডমিশন হয় না। পড়াশুনা থেকে অনেকেই বিছিন্ন হয়ে পড়ে।এজন্য দেখা যায় এই সময়গুলোতে আবেগ ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীও ঝরে পড়ে।
আবেগের কারণে মানুষ বিভিন্ন রকম আচরণ করে। আবেগের কারনেই মানুষের ভালোবাসা, রাগ, অভিমান, ঘৃণা, হিংসা, ভয় এগুলো প্রকাশ পায়। আবেগেই কারণেই মানুষ এসব আচরণ করে। আমাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কের সাথে আবেগ জড়িত। আবেগ ছাড়া মানুষ ঠিকমতো বাঁচতে পারে না। তবে আবেগকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে জানতে হবে। আবেগ যেন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ না করে৷ কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না৷ কখনো কখনো দেখা যায় অতিরক্তি রাগের কারণে অনেক ভালো সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়। অনেক ছোট-খাট বিষয় নিয়েও অনেক বড় ঝামেলা হতে পারে নিয়ন্ত্রণহীন আবেগের কারণে।
আবার আবেগ দিয়ে কখনো জীবন চলে না৷ জীবনকে চালাতে হবে আবেগ এবং বিবেকের সংমিশ্রমে। আর আবেগের চেয়ে বিবেককে প্রাধান্য দিতে হবে। তা না হলে সফলতা লাভ করা যাবে না। তাই সফল হতে গেলে অবশ্যই অতিরিক্ত আবেগকে ঝেড়ে ফেলতে হবে৷ অনেক সময় দেখা যায় যে একটু বেশি আবেগী হওয়ার কারণে অনেক বড় বড় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। মানুষ সিদ্ধান্তহীণতায় ভোগে। আর সঠিক সময়ে সঠিক সিন্ধান্ত নিতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় জীবনের বিভিন্নরকম বড় বড় ভুল হয়ে যায়৷ যেগুলো আর চাইলেও ঠিক করা যায় না।
আবার আবেগহীন মানুষ পাথরের মতো। পাথরের যেমন জীবন থাকে না। কোন আবেগ অনুভূতি থাকে না। তেমনি আবেগহীন মানুষেরও এরকম কোন অনুভূতি থাকে না। তারা মানুষকে ঠিকমতো ভালোবাসতে জানে না। আগলে রাখতে জানে না। তারা জীবনকে উপভোগ করতেও জানে না। আবেগহীন মানুষ বেঁচে থেকেও মৃতের মতো জীবন ধারণ করে। তাই আবেগহীন হওয়াও যাবে না।
মানুষের জীবনকে ভালোভাবে জানতে হলে, জীবনের সুখ- শান্তি ঠিকমতো উপভোগ করতে হলে অবশ্যই আবেগ থাকাটা জরুরি। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে আবেগটা যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়৷ আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে। আবেগ যেন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ না করে এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আর আবেগ দিকে নয়, সিন্ধান্ত নিতে হবে বিবেক দিয়ে, আবেগ ও বিবেকের সংমিশ্রণে।
Leave a Reply