সাধারণত আমরা সকলে জানি যে একটি শিশু যখন জন্ম নেয়ার সে জন্মের দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী ছয় মাস তার মায়ের পেটের দুধ তার জন্য যথেষ্ট। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কিছু কিছু মায়ের বুকের দুধ পাওয়াটা শিশুর পক্ষে অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অনেক শিশু রয়েছে দুর্বলতার কারণে মায়ের বুকের দুধ টেনে খেতে পারে না। তাদের ক্ষেত্রে বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে বাইরের প্যাকেটজাত দুধ এবং প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ানো হয়।
এছাড়াও ছয় মাস পর থেকে শিশু যখন খাবার খেতে শুরু করে তখন আমরা বিভিন্ন প্যাকেট খাবার শিশুদের খাবার। এই সকল কারণে শিশুদের পেটে গ্যাস জন্ম নেওয়া একেবারে স্বাভাবিক ব্যাপার। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বে মানুষের শরীরে গ্যাসের জ্বালাপোড়া প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে যার কারণে মানুষের মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। শিশুদের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয় তবে সবথেকে খারাপ বিষয় হলো আমরা যেমন মুখে আমাদের সমস্যা গুলো বলতে পারি সেই শিশুরা ঠিকভাবে তাদের সমস্যাগুলো মুখে বলতেও পারে না। এতে করে তারা অনেক বেশি কষ্ট পায়। আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানার চেষ্টা করব শিশুদের পেটে গ্যাস হলে কি করা উচিত।
শিশুদের পেটের গ্যাস হলে করণীয়
স্বাভাবিকভাবে যারা এখন পর্যন্ত কথা বলতে শিখেনি সেই শিশুদের পেটে যদি গ্যাস হয় তাহলে আপনাকে সবার প্রথমে বুঝতে হবে তার পেটে গ্যাস হয়েছে কিনা। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু লক্ষণ ফলো করতে হবে যে লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারবেন সেই শিশুর পেটে গ্যাস আছে কিনা। আপনি যদি এই লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন যে শিশুর পেটে গ্যাস রয়েছে তাহলে আপনি নিম্নে উল্লেখিত কাজগুলো করতে পারেন।
শিশুকে যখন খাবার খাওয়াবেন চেষ্টা করবেন শিশুকে যেন একেবারে শুঁইয়ে খাবার না খাওয়ানো হয়।মায়ের বুকের দুধও যখন খাওয়াবেন তখন খেয়াল রাখবেন যেন শিশুর মাথা যেন একটু উঁচুতে থাকে। এতে করে সে যখন বুকের দুধ খাবে অথবা খাবার খাবে তখন খাবারগুলো সঠিকভাবে পাকস্থলীতে প্রবেশ করবে এতে করে গ্যাস অনেকটাই কম হবে। শিশুকে যখন খাবার খাওয়ানো হয় তখন খাওয়ার খাওয়ানোর পরে তাকে সরাসরি শুইয়ে দেবেন না। কিছু সময় জন্য তুলে রাখুন এবং সোজা করে রাখুন। এবং আপনি চাইলে কিছু সময়ের জন্য আপনার নিজের হাত শিশুর পিঠের ওপর বুলিয়ে দিতে পারেন এতে করে পেটে গ্যাস অনেকটাই কম জমবে।
আপনি যদি লক্ষণ দেখে বুঝতে পারেন যে শিশুর পেটে গ্যাস হয়েছে তাহলে আলতোভাবে পেটে মাসাজ করে দিন। এতে করে শিশুর যে ছোট্ট পরিপাকতন্ত্র রয়েছে সেই পরিপাকতন্ত্রের দিকে গ্যাস প্রবাহিত হবে এবং শরীর থেকে সেটা আস্তে আস্তে বেরিয়ে যাবে। হালকা গরম পানি আমাদের সকলেরই গ্যাস কমানোর একটি অন্যতম ঘরোয়া পদ্ধতি। তবে শিশুকে আপনি এই গরম পানি সরাসরি না খাইয়ে অন্য কিছুর সঙ্গেও খাওয়াতে পারেন। এছাড়াও আপনি হালকা গরম পানিতে শিশুকে যখন গোসল করাবেন তখন তার শরীর আগে থেকে ফুরফুরে হবে এতে করে সে সুস্থতা অনুভব করবে।
অনেকে মনে করেন যে বাইরের দুধগুলো খাওয়ালে শিশু খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে তবে বাইরের প্যাকেটিং দুধগুলোতে এমন কিছু ফর্মুলার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে যেখানে নিয়মিত খাওয়ার ফলে শিশুর পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব বাইরের খাবার থেকে নিজের শিশুকে বিরত রাখুন। প্রতিদিন কয়েক দিনের চেষ্টা করুন শিশুকে ব্যায়াম করাতে। শিশুর হাত-পা নেড়ে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া-কলাপের মাধ্যমে তার পাকস্থলীকে নড়ানোর চেষ্টা করুন এতে করে তার পেটে থাকা খাবার গুলো খুব সহজে হজম হবে এবং পেটে গ্যাস কম জন্ম নিবে। দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ভাজাপোড়া খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে তার কারণ হলো এটাই গ্যাস জন্ম নেওয়ার শুরুর সময়। এবং এটাই হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস তৈরি হওয়ার একটি সময় তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস তৈরি করতে বাবা-মা প্রথম পদক্ষেপ নিবেন।
Leave a Reply