ইতিহাস বলে, ১৫৮৫ সালে মোগল সম্রাট আকবর ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘বসন্ত উৎসব’। ১৪০১ বঙ্গাব্দ থেকে সে উৎসব এ উৎসব মহানগর ঢাকা থেকে সারাদেশে নতুন করে তরঙ্গিত হতে শুরু করেছে। পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসবের রঙে মেতে ওঠে তরুণ হৃদয়, নতুন করে প্রাণ পায় প্রবীণেরা। বসন্তে শুধু প্রকৃতিই নয়, হৃদয়ও রঙিন হয়ে ওঠে। তাই তো বসন্ত আমাদের কাছে ‘প্রেমের ঋতু’।
বাতাসে বসন্তের আগমনী বার্তা। গাছ থেকে ঝরে পড়ছে পুরাতন যতো ধূসর পাতা। আর তার জায়গা বদল করছে সবুজ কিশলয়। আচানক কোথাও ডেকে উঠছে কোকিল। রঙে-বেরঙের ফুলে ভরে উঠছে বাগানগুলো। দীর্ঘ শীতের কুয়াশা মোড়ানো প্রান্তর পাড়ি দিয়ে অবশেষে আমাদের দোরগোড়ায় এসেছে ফাল্গুন। এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত! আর এই ফাল্গুন নিয়ে আনন্দ – উল্লাসের শেষ নেই।
তাই দেখা যায় অনেকেই অনেক সময় বসন্ত নিয়ে বিভিন্ন কথা সার্চ করে থাকে। আপনি যদি বসন্ত নিয়ে বিভিন্ন মজার মজার কথা সার্চ করে থাকেন। তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই! কেননা আমাকের আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে বসন্ত নিয়ে, ঋতুরাজ বসন্তকে নিয়ে। আপনারা যারা ঋতুরাজ বসন্তকে নিয়ে বিভিন্ন বিষয় সার্চ করেন, আজকের পোস্টটি তাদের জন্য উপকারি হবে বলে আশা করছি।
ঋতুরাজের আগমনে খুলে গেছে দখিনা দুয়ার। মানব-মানবীর চিরন্তন ভালোবাসা উড়ছে রঙিন প্রজাপতি হয়ে। ফুলে ফুলে আছে মৌমাছির গুঞ্জন। নতুন প্রাণের পত্রপল্লবে জেগে উঠেছে বৃক্ষ-লতা-গুল্ম। নদীর কিনার থেকে আদিগিন্ত প্রান্তর, কুঞ্জবন, অরণ্য-পর্বতে ডেকেছে নবযৌবনের বান। প্রকৃতির এই রূপতরঙ্গ দেখেই কবিগুরু লিখেছিলেন- ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে। ‘
শুধু প্রাণের দুরন্ত আবেগ আর প্রেমেই নয়, দ্রোহে-প্রতিবাদেও উত্তাল বসন্তের হৃদস্পন্দন। এ বসন্ত নিয়েই কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন- ‘এলো খুনমাখা তূণ নিয়ে/ খুনেরা ফাগুন। ’ মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার চেয়ে এই ঋতুতেই তো বাংলার দামাল ছেলেরা শহীদ হয়েছে। তারই খুন মেখে আছে পলাশ-শিমুল। শুধু তাই নয়, স্বৈরাচারবিরোধী গণতন্ত্র দিবস হিসেবেও জ্বলছে পহেলা ফাল্গুন।
এই বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার জন্য সকলে নানারকম উৎসবের আমেজ তৈরি করে। প্রকৃতি শীতের শেষে রুক্ষ- শুক্ষতাকে বিদায় দিয়ে নতুন নতুন পাতায় সবুজে সবুজময় করে তুলে চারেদিক আর রঙ- বেরঙের বাহারি ফুলে ভরিয়ে তুলে আশপাশ।আর মানুষও তেমনিভাবে শীতের শেষে ফাল্গুনের শুরুতে আরো সজীব হয়ে ওঠে। প্রকৃতির মতো করেই নিজেদেরকে সাজিয়ে তোলে মানব মন। আর তাই নিজেদের বাহারি রুপে রঙিনভাবে সাজিয়ে তুলতে মানুষের বিভিন্ন কল্পনা -জল্পনার শেষ নেই।
মেয়েরা বিভিন্ন রঙের শাড়ি এবং নানারকম ফুলের দ্বারা নিজেদেরকে সাজিয়ে তুলে বসন্তের সাজে। অপরদিকে ছেলেরাও রঙ-বেরঙের পাঞ্জাবি পরিধান করে এই সময়। বসন্তকালে প্রকৃতি যেমন ভালোবেসে সবকিছু রঙিন করে তোলে। মানব মনও এসব প্রকৃতির সাজে সেজে ওঠে। ছোট-বড়, ছেলে- মেয়ে নির্বিশেষে বসন্তের সাজে নিজেদেরকে রাঙিয়ে তোলে সবাই। এজন্য বসন্ত ঋতু সবারই প্রিয় একটি ঋতু। বসন্তের রঙের মতো রঙিন হয়ে উঠুক সবার জীবন আর ফাল্গুনের রঙ ছড়িয়ে পড়ুক সারা পৃথিবীতে এই প্রত্যাশা রেখে শেষ করছি আজকের পোস্টটি।
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। এই ঋতুগুলোর মধ্যে বসন্ত ঋতু অন্যতম। বেশিরভাগ মানুষের প্রিয় ঋতুর তালিকায়৷ রয়েছে এই বসন্ত ঋতু। শীতের শেষে বসন্ত ঋতু প্রকৃতিতে আসে শোভা নিয়ে। চারদিকে গাছে গাছে নতুন পাতার সমাহারে ভরে যায়। আর বিভিন্ন রঙ-বেরঙের বাহারি ফুলের গন্ধে চারেদিক ভরে ওঠে এই ঋতুতে। কবি মনে বিভিন্ন রকম কবিতা জেগে ওঠে এই বসন্ত ঋতুতে। প্রেমিক মনে নতুনভাবে প্রেমের সন্ঞ্চার হয় এই বসন্ত ঋতুতে। তাই অন্যান্য ঋতুর চেয়ে বসন্ত ঋতু একটু আলাদা। আর এই ঋতুর বিবিন্ন ধরণের বিশেষত্বের কারণে সকালের প্রিয় ঋতুর তালিকায় বসন্ত ঋতু থাকে শীর্ষে।
Leave a Reply