বাংলাদেশের রাজধানী হল ঢাকা। ঢাকা শহর এবং তার আশেপাশে দেখার মত পঞ্চাশোর্ধ স্থান রয়েছে। আপনার ভ্রমণের সুবিধার্থে ঢাকা’র ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানসমূহ এই লেখাতে তুলে ধরা হলো।
লালবাগ কেল্লা
লালবাগ কেল্লা হল সতেরো শতকে তৈরি একটি মুঘল দুর্গ। এটি ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে অবস্থিত। ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে সুবেদার আজম শাহ এই কাঠামো নির্মাণ শুরু করেন, পরবর্তীতে তার পুত্র শায়েস্তা খান কাজ চালিয়ে যান। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা’র ফলে এই দূর্গটি কখনো সম্পন্ন হয়নি। খান আমল এর সমাপ্তি হবার পর দূর্গটি লম্বা সময়ের জন্য পরিত্ত্যাক্ত ছিল। লালবাগ কেল্লার তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো পরীবিবির মাজার, বাকি ২ টি হল মসজিদ এবং দিওয়ান-ই-আম ভবন।
পরী বিবির মাজার
এই বৃহৎ কমপ্লেক্সের মাঝামাঝি এবং প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে শায়েস্তা খানের কন্যা পরী বিবির সমাধি। এটি একটি বর্গাকার ঘর এবং এর উপরে রয়েছে কৃত্তিম অষ্টভূজাকার গম্বুজ। পরী বিবির দেহাবশেষ এখানে আছে বলে ধরা হয়, যা পিতলের দ্বারা আবৃত। এই সমাধির চতুর্দিকে আটটি কক্ষ রয়েছে। এর দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আরেকটি ছোট কবর রয়েছে। মসজিদে মোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে ও মসজিদের সামনে ওযু করার জন্য বড় জল এর চৌবাচ্চা রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই কম্প্লেক্স নিয়ে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র মোহাম্মদ আজম শাহের স্বপ্ন ছিল এই দুর্গটি সম্পন্ন করার। এজন্য তিনি ১৭ শতকের মাঝামাঝি এই দুর্গ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তীতে মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তাকে পিতার কাছে যেতে হয়। পরবর্তীতে তার পুত্র শায়েস্তা খান দুর্গ নির্মাণের প্রকল্প চালিয়ে যান; কিন্তু হঠাৎ করে তাহার অত্যধিক প্রিয় কন্যা ইরান দুখত মারা যাবার পর, তিনি এটি তৈরির আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ফলে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। অসম্পূর্ণ নির্মাণটির নাম রাখা হয় পরীবিবির মাজার।
ইরান দুখত কে পরী বিবি ডাক নামে ডাকা হতো বলে, মাজারটির নামকারণ হয় পরী বিবির মাজার। আধুনিক যুগের প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এই কেল্লার স্থাপিত দেয়ালগুলোর মধ্যে একটি ধারাবাহিকতা দেখতে পান এবং তাদের মতে এই দুর্গের মধ্যে কয়েকটি গোপন সুরঙ্গ রয়েছে। বর্তমান সময়ে সুরঙ্গগুলো বন্ধ করা আছে। পৌরাণিক গল্প থেকে শোনা যায় যে এই মহলের দুটি সুরঙ্গ দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পাশে পার হওয়া যায় এবং সেখান থেকে ভারতে যাওয়া যায়। আবার অনেকে বলেন, সুরঙ্গগুলো হল ধাধা’র মত। এখানে যে যাবে, সেই মারা যাবে। আঠারোশো সাতান্ন সালে সিপাহী বিপ্লবের সময় অনেকে এসব ব্যাবহার করেছেন বলে জানা গেছে কিন্তু তাদের কাউকে ফিরে আসতে দেখা যায়নি। এজন্য এই গোপন সুরঙ্গ গুলি রহস্যই রয়ে গেছে।
দেওয়ান- ই- আম
দেওয়ান- ই- আম ছিল মোগল সম্রাটের উজিরের বাসভবন। এর পশ্চিমে একটি হাম্মাম সংযুক্ত আছে। এই ভবনটি হল দোতলা বাস ভবন এবং হাম্মাম টি হল একতলা। হাম্মামের এর নিচের ভাগে ভূগর্ভস্থ একটি কক্ষ রয়েছে। যা পরিদর্শন করলে বুঝা যায় যে এখানে আগুন জ্বালানো হত। হাম্মাম এর পানি গরম করার কাজে ব্যবহৃত হতো এই ঘর। সেই সময় ইউরোপীয় পর্যটক আসলে এখানে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হতো। বাংলাদেশে বিদ্যমান ধ্বংসাবশেষ এর সাতটি হাম্মাম এর অন্যতম হল এটি।
আহসান মঞ্জিল
আহসান মঞ্জিল ঢাকা’র কুর্মিটোলায় অবস্থিত। মোগল আমলে জামালপুর এলাকার জমিদার শেখ এনায়েত উল্লাহ’র বাগানবাড়ি ছিল আহসান মঞ্জিল। সবাই শেখ এনায়েত উল্লাহ কে একজন অমায়িক ব্যক্তি হিসেবে জানতেন। জমিদার এনায়েতুল্লাহ কুমড়াতলিতে অনেক বড় জমি অধিকার করেন এবং একটি বিলাসবহুল প্রাসাদ নির্মাণ করেন। এই প্রাসাদের নাম দেন তিনি রংমহল। দেশ-বিদেশ থেকে অনেক সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে এসে তাদের পোশাক ও অলংকারে সুসজ্জিত করে, জমিদার তাদের নাচ উপভোগ করতেন এখানে।
হঠাৎ এক রাতে জমিদার এনায়েতুল্লাহ একটি অনুষ্ঠানে অনেককে আমন্ত্রণ জানান এবং অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ষড়যন্ত্রের দ্বারা তাকে হত্যা করা হয়। ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণে শেখ এনায়েত উল্লাহ’র কবর ছিল। ১৭ শতাব্দীর মাঝামাঝি সম্রাট আলীবর্দী খানের আমলে সেখানে ফরাসি ব্যবসায়ীদের কাছে বিভিন্ন সম্পত্তি বিক্রি করা হয়। ক্রমে তার সম্পত্তিতে গড়ে ওঠে ফরাসি ট্রেডিং হাউজ। আস্তে আস্তে তাদের ব্যবসা সাফল্য লাভ করে এবং তারা ধনী হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে ১৭৫৭ সালে ইংরেজরা এখানকার দখল নেয়ার পর ফরাসিরা বাংলাদেশ ছেড়ে পালায়।
জাতীয় সংসদ ভবন
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন ঢাকা’র শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত। এই গুরুত্বপূর্ণ ভবনের স্থপতি হলেন লুই আই কান। যখন বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল তখনও এ কমপ্লেক্সটি ২০০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং বিশ্বের বৃহত্তম আইনসভা ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০৩ সালের আর্কিটেক্ট প্রদর্শনীতে, এ ভবনটি প্রদর্শিত হয় এবং প্রসংসিত হয়। এই ভবনের গঠনশৈলী বৈচিত্র্যময় এবং স্থাপত্য শিল্পের একটি অপূর্ব নিদর্শন।
বর্তমান জাতীয় সংসদ ভবন সম্পূর্ণরূপে সম্পাদন শেষ হওয়ার পূর্বে দ্বিতীয় সংসদ ভবন কে আইনসভা হিসেবে ব্যবহার করা হতো যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে বিবেচিত। সংসদের নকশা তৈরির সময় লুই আই কান বাংলাদেশের স্থপতি মাজহারুল ইসলামের কাছে সাহায্য নিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৮২ সালে এই ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। সংসদ ভবনকে ঘিরে তিনটি জলাশয় রয়েছে এবং এবং চারপাশে রয়েছে বিস্তৃত ফাঁকা জায়গা।
জাতীয় সংসদ ভবন সর্বমোট নয়টি আলাদা আলাদা ব্লক নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে আটটি বৃত্তাকার ব্লকের উচ্চতা ১১০ ইঞ্চি এবং এর কেন্দ্রীয় নবম ব্লকটি উচ্চতায় ১৫৫ ইঞ্চি। বিভিন্ন আলাদা আলাদা স্তরে রয়েছে লিফট, সিঁড়ি, করিডোর, কোর্ট। ভবনগুলো অন্তর্নিহিতভাবে সংযুক্ত এবং আনুভূমিক ও উলম্বভাবে এক ভবন থেকে অন্য ভবনে গমনাগমনের জন্য উপযুক্ত। এর মূল প্লাজায় অবস্থিত সংসদ ভবন।
সংসদ চেম্বারে এখন গণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশন চলাকালে এই ব্লকটি ৩৫০ জন সংসদ সদস্য এর বসার ব্যবস্থা করতে পারে। তাছাড়াও মিডিয়ার জন্য এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিদর্শকদের জন্য দুটি আলাদা গ্যালারি রয়েছে। দিনের আলো এই ভবনের দেয়ালগুলোতে প্রতিফলিত হয় অনেকটা ফিল্টার হয়ে সংসদ চেম্বারে প্রবেশ করে। এই নান্দনিক নকশার জন্য লুই আই কান কে যথাযোগ্য সম্মান প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী শাহবাগ এলাকায় অবস্থিত হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই জাদুঘর দেখতে আসেন। জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৩ সালের ২০ মার্চ। জাদুঘরে ক্রমান্বয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে নৃতাত্ত্বিক বিভাগ, অলংকারিক শিল্প বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, ধ্রুপদী শিল্প বিভাগ, প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগ, সমসাময়িক সভ্যতা বিভাগ এবং সংরক্ষণ পরীক্ষাগার। জাদুঘর এর নিচতলায় প্রথম কক্ষে রয়েছে বাংলাদেশের বড় একটি মানচিত্র। দ্বিতীয় কক্ষে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর একটি বড় মূর্তি।
তৃতীয় কক্ষে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। ১০ থেকে ২২ তম কক্ষে বাংলার ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ এবং পূর্ববর্তী গ্রামীণ সভ্যতা’র ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ উপস্থিত আছে। দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশের বিখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের ছবি রয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য ছবির মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় তোলা বিভিন্ন ছবি। দ্বিতীয় তলায় দুটি গ্রন্থাগার রয়েছে। তৃতীয় তলায় আন্তর্জাতিক শিল্পী, রাজনীতিবিদ এবং বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের ছবি রয়েছে। সর্বোপরি চারটি আন্তর্জাতিক গ্যালারি রয়েছে এই জাদুঘরে।
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা
ঢাকার মিরপুর অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় স্থানীয় এবং বিদেশী বহু বন্যপ্রাণী রয়েছে। প্রতিবছর প্রায় ত্রিশ লক্ষ লোক এই চিড়িয়াখানায় ভ্রমণ করতে আসেন। এই চিড়িয়াখানা ৭৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, বাংলাদেশের বৃহত্তম চিড়িয়াখানা। এটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। যদিও যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রাণীদের এবং চিড়িয়াখানার অবস্থা’র অবক্ষয় হতে শুরু হয়েছে। চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ১৩৪ প্রজাতির ২১৫০ টি প্রাণী রয়েছে। এখানে অন্যতম প্রাণী গুলো হল বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, গন্ডার, জেব্রা, হায়েনা, ওটার, জিরাফ, জলহস্তী, সিংহ, বানর, তোতা পাখি, পেঁচা, উটপাখি, ফিঞ্চ, ইমো, ঈগল, সাপ, কুমির, এবং ২৮ প্রজাতির মাছ।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাঝামাঝি অবস্থিত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। এটি বাংলাদেশের একটি জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ। ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলন নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে এই নির্মাণ। ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সরকারের সারা দেশব্যাপী উর্দু ভাষা কে রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করায়, বাংলা’র সন্তানেরা সংগ্রাম শুরু করে এবং পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা বহাল রাখার নিমিত্তে দাবি তোলে।
এই বছর ২১ এবং ২২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা বাংলা ভাষা বহাল রাখার দাবিতে মিছিল বের করে এবং তৎকালীন কর্মরত পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি করা শুরু করে। সাথে সাথে রক্তবন্যা বয়ে যায়; শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জাব্বার, শফিউর এবং আরো অনেকে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে বাংলা ভাষার মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হয়। ভাষা শহীদদের প্রতিদানের বিনিময়ে একুশে ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস হিসেবে গণ্য করা হয় তাদের স্মৃতি কে সম্মান জানিয়ে এই শহীদ মিনার এখনো মাথা উঁচু করে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
ঢাকার নিকটবর্তী সাভারে অবস্থিত জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং নিহতদের সম্মানার্থে নির্মিত। এই যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ লোক প্রাণ হারায়। ৯ মাস যুদ্ধের পর শেষ পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি জানাতে বাধ্য হয়।
তারপর থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ বলে আখ্যায়িত করা হয়। সৈয়দ মইনুল হোসেন স্মৃতিসৌধের নির্মাতা। যুদ্ধের ৭ বীরশ্রেষ্ঠ’র কথা স্মরণ করে সাতটি প্রিজম আকৃতির দেয়াল দিয়ে গঠিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধের নিকটবর্তী এলাকায় বাগান, ফুলের গাছ, কৃত্রিম হ্রদ এবং চলাচলের জন্য উন্মুক্ত মাঠ রয়েছে।
Leave a Reply